ক্রীড়া ডেস্ক: ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত হওয়ার পর সফল অস্ত্রোপচারে অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠছেন জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। যদিও সম্প্রতি রুবেলের দুটি ছবি ফেইসবুকে ভাইরাল হয়েছে। যেখানে রুবেলকে একদম রুগ্ন ও জরাজীর্ণ অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। রুবেলের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, অস্ত্রোপচার করে তার মস্তিষ্কের টিউমারের বেশিরভাগ অংশই অপসারণ করা সম্ভব হয়। এক সপ্তাহ পর পর প্রোটন থেরাপি শুরু হয় রুবেলের। থেরাপির ৬টি চক্র সফলভাবে সম্পন্ন করা গেলে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন এই অলরাউন্ডার।
মস্তিস্কে টিউমার ধরা পড়ায় ২০১৯ সালে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা গ্রহণ করেন মোশাররফ রুবেল। এরপর পর্যায়ক্রমে চিকিৎসা গ্রহণ করে বেশ খানিকটা সেরে উঠেছিলেন। এমনকি ফিরেছিলেন ক্রিকেট মাঠেও। কিন্তু আবারো ব্রেন টিউমার ধরা পড়ায় এবার ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন রুবেল। মানুষ হিসেবে মোশাররফ হোসেন রুবেলের বেশ খ্যাতি আছে। নির্ঝঞ্ঝাট, হাসিখুশি ও দারুণ পরিশ্রমী এই ক্রিকেটার কখনোই কোনো বিতর্কের মুখে পড়েননি।আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার দেখে রুবেলের ক্রিকেটীয় পরিসংখ্যান বিচার করতে গেলে ভুল হতে পারে। কারণ, এখন পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেটে বাংলাদেশের যে ক’জন ক্রিকেটার নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলে যাচ্ছেন, তাদের মধ্যে রুবেল একজন। বাঁহাতি এই বোলিং অলরাউন্ডার ১১২টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলে নিয়েছেন ৩৯২ উইকেট। ব্যাটিংয়ে ৩,৩০৫ রান, রয়েছে ২টি সেঞ্চুরি আর ১৬টি হাফ সেঞ্চুরি। ‘লিস্ট এ’ ম্যাচ খেলেছেন ১০৪টি। উইকেট ১২০টি। ব্যাটে ১,৭৯২ রান, ৮টি হাফ সেঞ্চুরি। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টিতে ৫৬ ম্যাচ খেলে ৬০ উইকেট আর ৬২ রান।
২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয়েছিল মোশাররফ রুবেলের। একই বছরে মোট চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন। ব্যাট হাতে ২৬ রানের পাশাপাশি বল হাতে একটি মাত্র উইকেট পাওয়া রুবেলের শুরুটা ভালো হয়নি। কিন্তু সেই শুরুর পর আর শুরু হয়নি তার। বারবার আলোচনায় থেকেছেন, জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছেন; প্রাথমিক দলে, এমনকি ১৫ সদস্যের মূল দলেও ছিলেন অনেকবার। কিন্তু মূল একাদশে থেকে আর মাঠে নামা হয়নি তার। শেষ পর্যন্ত ২০১৬ সালে সেই যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমে ৩ উইকেট পাওয়া, আর জাতীয় দলে ফেরা হয়নি। এখনও ঘরোয়া ক্রিকেটকেই পুঁজি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ৩৭ বছর বয়সেও তার পারফরম্যান্সে ক্ষুরধার।
রুবেলরা এভাবেই ক্যারিয়ারের সাথে লড়াই করতে করতে জীবনের সাথে লড়াইটা চালিয়ে যান। ফিরে আসেন বারবার, দুঃখ ভুলে হাসিমুখে।
Leave a Reply