ক্রীড়া ডেস্ক: শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর পরিবর্তনের হাওয়া বইছে সবখানে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডেও পরিবর্তনের দাবি উঠেছে। অনেকে বিসিবির সভাপতি পদ থেকে নাজমুল হাসান পাপনকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
এ দাবির মুখে সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়াতে সম্মত হয়েছেন পাপন। বিসিবির এক শীর্ষ পরিচালককে তিনি দেশের বাইরে থেকে ফোনে এই ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সরকার পরিবর্তনের পর নাজমুল হাসান লন্ডনে চলে গেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিসিবির একটি সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে বোর্ডের যে কয়জন পরিচালক সক্রিয় আছেন, গতকাল তাদের ৭-৮ জন বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের করণীয় ঠিক করতে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানেই একজন পরিচালক সভার সবাইকে নাজমুল হাসানের এই ইচ্ছার কথা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির এক পরিচালক এই প্রতিবেদককে আজ বলেছেন, বিসিবিতে সংস্কারের সুযোগ করে দিতে সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করতে রাজি আছেন নাজমুল। তবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাকে লিখিতভাবে বোর্ডকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত জানাতে হবে, যেটি পরে পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন করতে হবে।
কিন্তু বোর্ড সভা ডাকতে হবে বর্তমান সভাপতি নাজমুল হাসানকেই, যেটি তিনি বিদেশে বসেও পারবেন এবং এ ব্যাপারে আশ্বস্তও করেছেন। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে সভা ডেকে সেখানে সভাপতিত্ব করার দায়িত্ব সভাপতি তার অনুপস্থিতিতে অন্য কোনো পরিচালকের ওপর ন্যস্ত করতে পারেন।
অথবা সভাপতির অনুপস্থিতিতে সভায় উপস্থিতদের কারও প্রস্তাবে যেকোনো একজন পরিচালক সভাপতিত্ব করতে পারেন। বিসিবি সভাপতি আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্র পাঠালে এই সভা ডাকা হবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
গতকালের সভায় পরিচালকদের কেউ কেউ বলেছেন, বিসিবিতে নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ থাকলেও বর্তমান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্য রেখে তারা কাজ করতে পারবেন না। কাজেই এ ব্যাপারে যেন সরকারের সুস্পষ্ট নির্দেশনা নেওয়া হয়। সরকার চাইলে তারা একযোগে পদত্যাগ করবেন বলেও একমত হয়েছেন সবাই।
তবে সভায় এই আলোচনাও হয়েছে যে, বোর্ডে রদবদল নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বাংলাদেশে নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজনে। সব পরিচালকের একযোগে পদত্যাগ আইসিসি ও ক্রিকেটবিশ্বকে ভুল বার্তাও দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে অক্টোবরে বাংলাদেশে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আয়োজন। এ ক্ষেত্রে সরকারের পরামর্শ প্রয়োজন বলে মনে করেন পরিচালকেরা।
বাংলাদেশে মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ পর্যন্ত হবে কি না, না হলে কোথায় হবে-এসব ব্যাপারে আইসিসি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ২০ আগস্ট।
গত ১১ আগস্ট অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী ও সাত পরিচালক। ক্রীড়া উপদেষ্টা বিসিবি কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, বোর্ড পুনর্গঠনে আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কী করা যায়, সেটি দেখতে। সভার পর সংবাদমাধ্যমকেও তিনি বলেন, ‘বিসিবি আইসিসির অধীনে একটি ফেডারেশন। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। যারা বিসিবির পরিচালক আছেন, তারা আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়, সেটি দেখবেন।
Leave a Reply