নক্ষত্র ডেস্ক: কুরআনে সুরা হুদে এমন একটি আয়াত আছে: وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ
অর্থ: ওইসব লোকদের দিকে হেলে পড়ো না যারা অন্যায়কারী, অন্যথায় জাহান্নামের আগুন তোমাদের পাকড়াও করবে। (সুরা হুদ, আয়াত ১১৩)
এখানে ‘রুকুন’ শব্দ ব্যবহার হয়েছে, রুকুন মানে ঝুঁকে পড়া বা হেলে পড়া। অর্থাৎ যে সরল-সঠিক পথ আছে তার থেকে হেলে পড়া। হয় এদিকে না হয় ওদিকে হেলে পড়া। তো পয়গম্বরও (সা.) সাহাবাদেরকে বলা হয়েছে তোমরা হেলে পড়ো না। এক জায়গায় স্থির হয়ে থাকো, একই পয়েন্টে। অন্যথায় এখানকার আগুন তোমাকে পাকড়াও করবে।
একথা আখেরাতের প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে। কিন্তু দুনিয়ার প্রেক্ষিতেও একথা খাটে। সরল-সঠিক পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে যাওয়া, সত্যপথ থেকে বেপথ হয়ে যাওয়া এক প্রকার আগুন। শব্দের উদ্দেশ্য এ-ও হয়।
তো যেসব মানুষ বিপথে হেলে পড়েছে, মানে নির্দিষ্ট অবস্থানে নেই, এদিকে ওদিকে হেলে পড়ছে, এই জন্যই তারা বড় কোনো কাজ করতে পারে না। যখন মোবাইল-ফোন ছিল না তখনও বড় বড় বিজ্ঞানী, বড় বড় গবেষক জন্ম নিয়েছেন।
আজকের দিনে কয়জন জন্ম নিচ্ছে? অথচ যখন মোবাইল-ফোন ছিল না তখন জন্ম নিয়েছিল। দেখুন, সব বিজ্ঞানীর একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে পূর্ণ মনোযোগ ছিল, একটা কেন্দ্রে তাদের ধ্যান-জ্ঞান ছিল।
উদাহরণ হিসেবে বলা যায় স্যার আইজাক নিউটন, তো এই নিউটনকে বলা হয় আধুনিক বিজ্ঞানের জনক। ছোটবেলায় তাকে ড়িড়ষমধঃযবৎবৎ বলা হতো। ড়িড়ষমধঃযবৎবৎ মানে আনমনা বা অন্যমনস্ক, বেশি কথা বলে না, এদিক-সেদিক যায় না, এক কথায় যাকে ‘দুনিয়া-ছাড়া’।
তো নিউটন যখন স্কুলে যায়, তখন ব্যাপারটা সবার সামনে স্পষ্ট হয় যে, এই ছেলে ড়িড়ষমধঃযবৎবৎ হলেও তার ভেতরে বড়মাপের যোগ্যতা আছে। মানে তিনি একটা বিষয়ে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারেন।
পরবর্তীতে তার বড় বড় আবিষ্কার সম্পর্কে যখন প্রশ্ন করা হয়, তিনি বলেন : ও যধাব হড় ংঢ়বপরধষ ংধমধপরঃু, বীপবঢ়ঃ ঃযব ঢ়ড়বিৎ ড়ভ ঢ়ধঃরবহঃ ঃযড়ঁমযঃ. আমার ভেতরে বিশেষ কোনো গুণ নেই, একটা জিনিসই শুধু আছে যে, আমি ধৈর্যশীলতার সাথে, একনিষ্ঠতার সাথে, নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারি।
পৃথিবীতে যতজন সফল মহাপুরুষ ছিলেন, যেকোনো ধারার, তাদের সবার এই একটি গুণ বর্তমান ছিল যে, তারা তাদের ধ্যান এদিক-সেদিক সরাতেন না, পূর্ণ মনোযোগী ছিলেন।
Leave a Reply