নিজস্ব প্রতিনিধি: চাপ কমে যাওয়ায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছয় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক কুদরত–ই–খোদা। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে দেওয়া একটি চিঠির অনুলিপিতে তিনি এই তথ্য উল্লেখ করেছেন। এদিকে অক্সিজেন–সংকটে রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য বিভাগের খুলনা বিভাগীয় পরিচালকের (স্বাস্থ্য) গঠিত কমিটি তদন্ত শুরু করেছে। কমিটির সদস্যরা আজ রোববার সকাল থেকে হাসপাতালের অক্সিজেনের সংকট বিষয়ে খোঁজখবর নেন ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি লিখিত জবানবন্দি নিয়েছেন।
করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা জানান, স্থানীয় একটি পত্রিকায় ‘অক্সিজেন বিপর্যয়ে সাতজন রোগীর মৃত্যু’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরে স্থানীয় ওই পত্রিকার সম্পাদককে একটি চিঠি দেন। তার একটি অনুলিপি দিয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবিরকে অবহিত করা হয়।
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অক্সিজেন বিপর্যয়ে কোনো রোগী মারা যাননি। ৩০ জুন হঠাৎ করে অক্সিজেনের প্রেশার কমে যাওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনকে জানানো হয়। অবহিত করা হয় সাতক্ষীরা-২ আসনের সাংসদকেও। অক্সিজেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেডকে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য অনুরোধ করা হয়। লিকুইড অক্সিজেনের প্রেশার কমে যাওয়ার কারণে হাসপাতালের আইসিইউতে চারজন ও পোস্ট সিসিইউতে দুই রোগী মারা যান। তাঁদের শারীরিক অবস্থাও ছিল খুব আশঙ্কাজনক। এ বিষয় তদন্ত করার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান কাজী আরিফকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কুদরত-ই-খোদা বলেন, সঠিকভাবে তদন্ত শেষ করার জন্য সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি সাত দিনের সময় চেয়েছে। তাদের সময় বর্ধিত করা হবে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের গঠিত দুই সদস্য তদন্ত কমিটির প্রধান মোংলা পোর্ট স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শেখ মোশারফ হোসেন জানান, আজ রোববার প্রথম দিনে তাঁরা হাসপাতালের আইসিইউ ও পোস্ট সিসিইউ ঘুরে দেখেছেন। এ ছাড়া সাতক্ষীরা মেডিকেলের অধ্যক্ষ রুহুল কুদ্দুস, হাসপাতালের তত্ত্বাধায়ক কুদরত-ই-খোদা, মেডিসিন বিভাগের প্রধান কাজী আরিফ আহমেদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ মানস মণ্ডল, আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা আহমেদ আল মারুফ, আইসিইউর প্রধান সাইফুল্লাহ, ঘটনার সময় (বুধবার সন্ধ্যা) কর্তব্যরত চিকিৎসক রনজিৎ, গুদামরক্ষক হবিবুর রহমান, জুনিয়র টেকনিশিয়ান মিজানুর রহমান, ৯ জন নার্সসহ ২২ জনের লিখিত জবানবন্দি গ্রহণ করেছেন। সার্বিক ঘটনা তদন্তের পর লিখিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করবেন।
Leave a Reply