শ্যামনগর প্রতিনিধি: বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুন্দরবনের কোলঘেঁষে গড়ে উঠেছে আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার। আকানীলার ঠিক পাশ দিয়ে বয়ে গেছে প্রবহমান চুনা নদী। নদীর ওপার থেকে শুরু গভীর সুন্দরবন। এ নদী পার হয়ে মাঝেমধ্যে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার চলে আসে লোকালয়ে। সেই আকাশনীলা হাতছানি দিচ্ছে দেশী-বিদেশী পর্যটকদের।
শ্যামনগর উপজেলার মুন্সীগঞ্জ ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের সুন্দরবন সংলগ্ন কলবাড়ি এলাকায় সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ও শ্যামনগর উপজেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় ৮০ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টারটি। সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৮০ ও শ্যামনগর উপজেলা সদর থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান। পর্যটন কেন্দ্রটি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে প্রতি বছরই বিভিন্ন ভাবে সাজানো হয়। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের রিসোর্ট এর পাশাপাশি এখানে ভিআইপিদের থাকার জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা গেস্ট হাউস।
সুন্দরবন দেখার জন্য এখানে রয়েছে ছোট-বড় ইঞ্জিন চালিত বোট। পর্যটকরা যাতে মাছ ধরতে পারে সে জন্য রয়েছে মাছ ধরার জন্য আলাদা পরিবেশ। রয়েছে সুন্দরবন ও বিভিন্ন নদী থেকে সংগ্রহীত ফিশ মিউজিয়াম। মিউজিয়ামে রয়েছে স্থানীয় পরিচয় বহনকারী বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। ছোট-বড় নৌকায় করে সুন্দরবনের ভেতর প্রবেশের সুযোগ রয়েছে এখানে। বন বিভাগের নামমাত্র সরকারি রেভিনিউ দিয়ে মাথাপিছু ৫০ থেকে ১০০ টাকা দিয়ে প্রায় এক থেকে দুই ঘণ্টা পর্যটকরা সুন্দরবনের ভেতর ঘুরে আসতে পারবেন। সুন্দরবন দেখার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে সুউচ্চ ওয়াচ টাওয়ার। সেইখান থেকে চারপাশে সুন্দরবনের মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করা যায়।
কথা হয় যশোরের স্কুলছাত্র তৌফিক ও ফাইমের সঙ্গে। সাতক্ষীরা সরকারি বালক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ূয়া মৌমিতা বলে গাড়ি থেকে নেমে এত কাছ থেকে সুন্দরবন দেখতে পাব ভাবিনি। খুব চমৎকার পরিবেশ, খুবই ভালো লেগছে। পর্যটক শেখ নাইম বলেন, আকাশনীলায় একবার যে আসবে, তার প্রিয় স্থানের তালিকায় স্থান পাবে। এই পর্যটন কেন্দ্রটি সঠিক ভাবে ব্যবস্থাপনা করা গেলে দেশের দক্ষিণবঙ্গ অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হবে এটি।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আকাশনীলা ইকো ট্যুরিজম সেন্টার উপজেলা প্রশাসনের ইনোভেশন ইন পাবলিক সার্ভিসের একটি প্রকল্প। এ স্থানটি আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে প্রতি বছরই নতুন নতুন পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। দেশের পর্যটন শিল্পকে আরও বিকশিত করতে আকাশনীলা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। দর্শনার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হরিদাস হালদার জানান, সুন্দরবন উপকূলীয় অঞ্চল দর্শনার্থীদের পর্যাপ্ত পরিমান নিরাপত্তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে, বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌ পুলিশ, টুরিস্ট পুলিশ ও বিজিবি রিভারাইন এর মাধ্যমে সুন্দরবন অঞ্চলে ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে উঠেছে।
Leave a Reply