নিজস্ব প্রতিনিধি: কালীগঞ্জে সাবেক সংসদ সদস্য, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বর্ষিয়ান নেতা আলহাজ্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মনসুর আহমেদ এর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার বিকাল ৫ টায় কালীগঞ্জ উপজেলা তাঁতীলীগের সাবেক সভাপতি আমির আলী খানের আয়োজনে তার নিজস্ব কার্যালয়ে স্মৃতিচারণ, মিলাদ মাহফিল ও মরহুম মনসুর আহমেদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারালী ইউপি চেয়ারম্যান এনামুল হোসেন ছোট, উপজেলা আ,লীগ নেতা আব্দুর রহমান, উজ্জীবনী ইনস্টিটিউট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফিফা রেফারি ইকবাল আলম বাবলু, জাতীয় শ্রমিক লীগ কালীগঞ্জ উপজেলা শাখার সভাপতি শেখ শাহজালাল, সাংবাদিক মহিবুল্লাহ, ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম সহ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও মসজিদের মুসল্লিগণ। মুনসুর আহমেদ এর জীবন সম্পর্কে স্মৃতি চারণ করেন এবং দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন দিদার এলাহী জামে মসজিদের পেশ ঈমাম হাফেজ মোঃ আব্দুল গফুর। অনুষ্ঠান শেষে সকলের মাঝে তাবারক বিতরণ করা হয়। প্রসঙ্গঃ বর্ষিয়ান রাজনীতিক মুনসুর আহমেদ করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে রাজধানীর ঢাকার স্পেশালাইজড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। মুনসুর আহমেদ ১৯৪৮ সালে সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার পারুলিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হামিজ উদ্দীন এবং মাতার নাম দেলজান বিবি। সাতক্ষীরা পিএন হাইস্কুল থেকে তিনি এসএসসি পাশ করেন এবং খুলনা কমার্স কলেজ থেকে তিনি পতক পাশ করেন। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের সৈনিক হিসেবে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন। বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে সাতক্ষীরার গণমানুষের অধিকার ও উন্নয়নে তার অবদান অপরিসীম। কৃষক শ্রমিক ছাত্র আন্দোলনে তার নেতৃত্বে বারবার কেঁপেছে রাজপথ। তিনি ছিলেন সাতক্ষীরার রাজনৈতিক অঙ্গনের অভিভাবক। তিনি দীর্ঘদিন পারুলিয়া ইউপির চেয়ারম্যান ছিলেন। এরপর তৎকালীন সাতক্ষীরা-০৪ (দেবহাটা-কালিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি সাতক্ষীরা জেলা পরিষদ প্রশাসক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সাতক্ষীরার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, হাসপাতাল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, ক্লাব সহ বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা ও সংস্কারে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৮০ সালে প্রথম বারের মত সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন মুনসুর আহমেদ। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৮ পর্যন্ত টানা ১৯ বছর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। এরপর ২০১৫ সালের ৭ ফেব্রæয়ারি সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় নেতারা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে মুনসুর আহমেদের নাম ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের ২১ মার্চ এ কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাতক্ষীরা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে পুনরায় মুনসুর আহমেদকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
Leave a Reply