1. nokhatronews24@gmail.com : ajkarsatkhiradarpan darpan : ajkarsatkhiradarpan darpan
  2. install@wpdevelop.org : sk ferdous :
বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী পালকি - আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৩২ অপরাহ্ন
১৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
📰সাতক্ষীরায় নতুন এসপি মোঃ আরেফিন জুয়েল’র যোগদান📰বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় সাতক্ষীরায় দোয়া অনুষ্ঠান📰সাতক্ষীরা সদরের খানপুরে পূর্ব শত্রুতার জেল ধরে সাঈদের বাড়িতে আগুন📰সাতক্ষীরায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রভাষক গোলাম আজম নিহত📰ধানের শীষ বিজয়ে ঐক্যবদ্ধ সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি, ধানের শীষের বিজয়ে অপার সম্ভাবনা📰ভয় দেখিয়ে নয়, উদারতা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে বলেছেন তারেক রহমান: জুয়েল📰কুলিয়ায় নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে-নেতৃত্বাধীন অ্যাডভোকেসি সভা📰সাতক্ষীরা-২ আসনে আব্দুল আলিমের মনোনয়নের দাবীতে সড়ক অবরোধ করে মশাল মিছিল📰কালিগঞ্জে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু📰সমাজসেবা অফিসার শেখ সহিদুর রহমান নিজের অপকর্ম ঢাকতে, বিভিন্ন ব‍্যাক্তিদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ

বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী পালকি

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : রবিবার, ৮ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৫৯ সংবাদটি পড়া হয়েছে

তুহিন হোসেন সাতক্ষীরা: গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী এক প্রাচীন বাহন পালকি। এ বাহনে চড়া দারুণ মজা। বিয়ে উৎসবে পালকির কদর ছিল সবচেয়ে বেশি। একটা সময় ছিল বিয়েতে পালকিই চাই। গ্রামীণ আঁকা-বাঁকা মেঠো পথে, কখনও আলপথে বর-কনে পালকি চড়ে উভয়ের শ্বশুর বাড়িতে আসা-যাওয়ার আনন্দঘন একটা দারুণ সময় ছিল। গাঁও-গ্রামের পথে পালকিতে করে নববধূকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য উঁকি-ঝুঁকি দিয়ে মন জুড়াতে গাঁয়ের বধূ, কখনও মা-চাচি, উঠতি বয়সের চঞ্চল মেয়েরাও বাদ পড়েনি। পালকি মানুষের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন ছিল। সাধারণত বর-কনের জন্য পালকি হলেও এ বাহনটি ছিল রাজ রাজাদের একমাত্র বাহন। যারা পালকিকে ঘাড়ে বা, কাঁধে করে বহন করে থাকেন তাদের পালকির বেহারা বা, কাহার বলে। পালকির ভেতরে ১ জন বা, ২ জন থাকত, আর পালকির বেহারা হিসেবে থাকত ২ থেকে ৮ জন।
পালকির বিভিন্ন নাম: পালকি শব্দটি এসেছে সংস্কৃত “পল্যঙ্ক” বা, “পর্যঙ্ক” থেকে। এর অর্থ বিছানা বা খাট। হিন্দী এবং বাংলা উভয় ভাষায় এটাকে পালকি বলা হয়ে থাকে। পালি ভাষায় একে “পালোঙ্ক” বলা হয়। এই যানকে কোন কোণ জায়গায় ডুলি, শিবিকা এসব নামেও ডাকা হয়। পর্তুগীজরা এর নাম দিয়েছিলো পালাঙ্কুয়িন। রোমে লেটিকা, চীনে জিয়াও, ভিয়েতনামে কিউ, স্পেনে লিটারা, ফ্রান্সে পালানকুইন, পর্তুগালে লিটেইরা, থাইল্যান্ডে ওহ, কোরিয়ায় গামা, জাপানে নোরিমোনো, তুরস্কে টাহটিরেভান ইত্যাদি নামে পালকি পরিচিত হয়ে আসছে। লন্ডনে পালকিকে সিড্যান চেয়ার বলে ডাকা হয়। চীনের সনাতনি ধারায়ও এই সিডান চেয়ারের ব্যবহার দেখা যায়।
বাংলাদেশে এক সময় অভিজাত শ্রেণীরা এই বাহনে চলাচল করতো। দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানেও এর ভালই প্রচলন ছিল। বিয়েতে বর এবং কনের জন্য পালকি ব্যবহারের প্রথা চালু ছিল। এছাড়াও অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে বা, অক্ষম মানুষকে বিভিন্ন স্থানে নেয়ার জন্যও পালকি ব্যবহার হতো।
বাংলাদেশের পালকিগুলো বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। এর গঠন শৈলীতেও রয়েছে ভিন্নতা। সবচেয়ে ছোট এবং সাধারণ নকশার পালকিকে ডুলি বলা হয়। এই ডুলি সাধারণত ২ জন বহন করে নিয়ে চলে। বাংলাদেশে এক সময় হাড়ি, মাল, দুলে, বাগদি বা, উড়ি প্রভৃতি সম্প্রদায়ের লোক পালকি বহনের কাজ করতো। এরা পালকি বহনের পাশাপাশি দিনমজুরের কাজ এবং মাছের ব্যবসাও করতো।
কাঠ মিস্ত্রীরা সেগুন কাঠ, শিমুল কাঠ, গান কাঠ প্রভৃতি কাঠ দিয়ে তৈরি করতো পালকি। পালকির বহন করার দন্ডটিকে বাঁট বলে। এই বাঁট তৈরি হত বট গাছের বড় ঝুরি দিয়ে। তখন বাংলাদেশে তিন রকমের পালকি দেখা যেতো। সাধারণ পালকি, আয়না পালকি এবং ময়ূরপঙ্খি পালকি। সাধারণ পালকি দেখতে আয়তাকার ছিল। ঢালু ছাদ এবং চারদিকে কাঠের আবরণ এর প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল। এর দু দিকে দুটি দরজাও থাকতো।
আয়না পালকির বৈশিষ্ট্য হলো এতে আয়না লাগানো থাকতো। ভেতরে চেয়ারের মতো দুটি বসার জায়গা এবং একটি টেবিলে রাখা হতো। তবে আয়তনের দিক থেকে বলতে গেলে ময়ূরপঙ্খি পালকি সবচেয়ে বড়। এই পালকিটি ময়ূরের আকৃতিতে তৈরি করা হয়। এর ভেতরে দুটি চেয়ার, একটি টেবিল এবং একটি তাকও থাকতো।
তবে উনবিংশ শতাব্দীতে এসে সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির ফলে যাতায়াতের বাহন হিসেবে পালকির ব্যবহার প্রায় বন্ধই হয়ে যায় বলা চলে। বিশেষ করে ১৯৩০ এর পর থেকে শহরাঞ্চলে রিক্সার প্রচলন শুরু হলে পালকির ব্যবহার উঠে যায়। বর্তমানে আমাদের পালকিকে আমাদের অতীত ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবেই ধরা হয়। সভ্যতা এবং বাস্তবতার কথা চিন্তা করলে পালকিকে হয়ত আর ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়।
ধারণা করা যেতে পারে বিলুপ্তির পথে। প্রাচীনকাল থেকেই রাজা-বাদশারা এবং জমিদার শ্রেণী ছাড়া বেহারাদের প্রতি তেমন একটা সুনজর ছিল না, কোনো রকমে বেহারাদের জীবন ও জীবিকা চলত। সেই সময়ে স্থায়ী বেহারা রাখা ছিল খুবই ব্যয়সাধ্য ব্যাপার। প্রাচীনকালে বাহকদের সাজ পোশাকেও ছিল রকমারি পাগড়ি পাশাপাশি গায়ে থাকত লাল রঙের ব্যয়সাধ্য জোব্বা। ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন বাহন পালকি আজ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। তবে আমরা এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে পালকির কথা ভুলে না যাই সেদিকে আমাদের সচেষ্ট দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :

সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি:

এম এ কাশেম ( এম এ- ক্রিমিনোলজি).....01748159372

alternatetext

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো: তুহিন হোসেন (বি.এ অনার্স,এম.এ)...01729416527

সম্পাদক ও প্রকাশক:

সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক :

© All rights reserved © 2020-2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd