আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ ডেস্ক: ব্যাগ হাতে বাজারের উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছে কাশেমপুরের আব্দুল মোমিন। বিভিন্ন সবজির দাম বারবার জিজ্ঞেসা করছে দোকানদারেরা কাছে। বিরক্ত হচ্ছে দোকানদার কিন্তু প্রকাশ করতে পারছে না। তার জিজ্ঞেসার ধরণ দেখলে বুঝতে পারি এই জিজ্ঞেসা যেন তার অর্থের সক্ষমতাকে বুঝিয়েছে। যে সবজির দাম কম হবে তার ক্রয় ক্ষমতার ভিতরে সেটাই তিনি কিনবেন। বাজারে শুধু মোমিন না সকলের অবস্থা একই। বাজারে সবজি না যেন এক একটি আগুনের দোলা। মানুষ হাফিয়ে উঠেছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম থেকে রক্ষা পেতে বিকল্প রাস্তা খুঁজছে।
১৭০-১৮০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে কেজি প্রতি কাঁচা ঝালের দাম। তাছাড়া বেগুন কেজি প্রতি ১৪০ টাকা, টমোটা ১৫০ টাকা, কাকরোল ৮০ টাকা, পটল ৭০ টাকা ও গাজর ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ভরা সবজি থাকলেও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। ক্রয় ক্ষমতার বাইরে সাধারণ নিম্ন আয়ের মানুষের। শুধু সবজি বাজার নয় কমছে না সকল নিত্যপণ্যর দাম। নিরবে সিন্ডিকেটরা সক্রিয় থেকে নিয়ন্ত্রণ করছে বাজার। যার ফলে প্রতিনিয়ত দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে সকল পণ্যর। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষের। সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারে ঘুরে দেখা যায়, কেজি প্রতি আলু ১৮-২০ টাকা, কলা ৬০ টাকা, ঢেড়স ৬০ টাকা, কচুমুখী ৪০ টাকা, পেপে ৩০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, পেচেঙ্গা ৫০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, কুমড়া ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
দাম উঠা নামা করছে মুদি বাজারের পণ্য -মুশুরি ডাউল কেজি প্রতি ১০০-১৩০ টাকা, বুট ৫৫ টাকা, পেঁয়াজ ৮০ টাকা, রসুন ১১০ টাকা, আদা ১৫০ টাকা, শুকনা ঝাল ৩০০ টাকা, মুগ ডাল ১৫০টাকা, সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, সরিষার তেল ২১০ টাকা, হলুদ ৩০০ টাকা, চিনি ১০৫ টাকা, জিরা সিরিয়া ৭০০ টাকা ও ইন্ডিয়ান ৫৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে চাউলের দাম কেজি ৫-১০ টাকা হারে বেড়েছে সিগ্ধ ৬৫ টাকা, আতপ ৫৫ টাকা, মিনিকেট ৭৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দাম বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১৮০-১৯৫ টাকা, সোনালি ২৯০ এবং দেশি মুরগি ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গুরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৯০০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে মাছের দাম কমতে দেখা যায়নি, আকারভেদে রুই ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা, ইলিশ ৮০০-১৬০০ টাকা, কাতল ২০০ থেকে ৩৮০ টাকা, মৃগেল ১৮০-২৫০ টাকা, আকারভেদে পাঙ্গাস ১৯০-২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০-২০০ টাকা, বাগদা চিংড়ি ৯০০-১২০০ টাকা, গলদা ১৩০০-১৫০০ টাকা, পাবদা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ভেটকি ৭০০-৮৫০ টাকা, পারসে ৫০০-৬০০ টাকা, কই ২৫০ টাকা, টেংরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতা আব্দুল হাফিজ দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ এর প্রতিনিধিকে বলেন, সবজি বাজার পর্যাপ্ত উঠলেও তেমন দাম কমতো দেখা যায় নি আগুন ছোঁয়া দাম। তাছাড়া মুদিপণ্যর দাম উর্দ্ধমুখী ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। আমরা দেশে দুমোখো খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকতে চাই আর কিছু চায় না। আরোও কজন ক্রেতা বলেন, দ্রব্যমুল্যর উর্দ্ধগতিতে যা ইনকাম করি ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আটা এগুলো সরকারকে নজরদারিতে এনে ক্রয় ক্ষমতার ভিতরে আনতে হবে। আমাদের একটাই দাবি দ্রব্যমূল্যর দাম কম চায়।
বেসরকারি চাকুরিজীবী মজনু রহমান বলেন, আমরা বর্তমান সময়ে একটি ক্লান্ত লগ্ন পার করছি। দ্রব্য মূল্যর দাম চড়া সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। পরিবারের নিয়ে টিকে থাকা যেন মহাযুদ্ধ। এই যুদ্ধে আমরা নাকাল হয়ে গেছি। বাজারে সবজি ক্রয় করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে গেছে সাধারণ দিন মুজুর, শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের।
সরকারের উচিত অবহেলা না করে পদক্ষেপ নেওয়া।
জেলা সাংবাদিক এসোসিয়েশন সাতক্ষীরা এর যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মোঃ কাজী মারুফ হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারে সবকিছু দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষের। সবজি সহ সকল পণ্য যেন আগুন। কিছু সিন্ডিকেট বৃষ্টির সময় মাল মজুদ রেখে দাম বাড়িয়ে দেয়। এসকল সিন্ডিকেট অভিযানে আইনের আওতায় আনতে হবে।
Leave a Reply