শ্যামনগর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপজেলার ২৮০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৩৩টি প্রতিষ্ঠানে নেই কোনো শহীদ মিনার।। ফলে উপজেলার উপকূলীয় ও দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর জাতীয় দিবস পালনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকায় মহান ভাষা দিবস আসলে শিক্ষার্থীসহ আশপাশের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার হয়ে থাকেন। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারিসহ জাতীয় দিবসগুলোতে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে মহান ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়। কোনো কোনো জায়গায় বিশেষ র্যালির মাধ্যমে অনেক পথ অতিক্রম করে শহীদ মিনারে গিয়ে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে থাকেন। আবার কেউ কেউ আলোচনা সভাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেই মহান ভাষা দিবস পালন করে থাকে।
গেল পাঁচ দশকেরও বেশি সময় পরও এ উপজেলার বেশিরভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়নি ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক স্মৃতি নিদর্শন শহীদ মিনার। এ অবস্থায় নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীরা ভাষা দিবস, স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বীর সেনানীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনসহ জাতীয় দিবসগুলো পালনের সুযোগ পাচ্ছে না।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলায় ১৯১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে যার মধ্যে ১৭১টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ৪৬টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৩৬টি মাদ্রাসা, ৭টি কলেজ মোট ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যে ৬২টি প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন তথ্য প্রযুক্তিখাতে অনেকদূর এগিয়েছে। গত দুই দশকে যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। অর্থনৈতিক খাতে অপার সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে এ উপজেলা। শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নতি সাধন হয়েছে আগের চেয়ে বহুগুণ। উপজেলায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্থরের সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ২৮০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অন্তত কয়েক সহগ্রাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে থাকে। সবকিছুতেই সম্ভাবনাময় সুন্দরবন উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলা এগিয়ে থাকলেও, শুধুমাত্র পিছিয়ে রয়েছে শহীদ মিনার স্থাপনের কাজে।
শ্যামনগর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ তেজারত জানান, মাধ্যমিক স্তরের কিছু কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার রয়েছে। তবে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে নেই। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে, বাকি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণের চেষ্টা করা হবে।
শ্যামনগর উপজেলা থেকে মোঃ ফরিদ উদ্দীন বলেন, শ্যামনগরে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। ফলে নতুন প্রজন্ম মহান ভাষা দিবস ও তার তাৎপর্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রæত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক স্কুলে শহীদ মিনার তৈরি করতে আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Leave a Reply