নিজস্ব প্রতিনিধি: পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরায় চলতি বছরের মধু আহরণ মৌসুম শুরু হয়েছে। উদ্বোধনের প্রথম দিনেই ৪০০ মৌয়াল মধু সংগ্রহের জন্য বনে প্রবেশ করেছে। চলবে আগামী ১৫ জুন পর্যন্ত। অনুকূল আবহাওয়ায় এ বছর মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক ডিএফও বশিরুল আল মামুন জানান। গতকাল সোমবার বুড়িগোয়ালিনী ফরেস্ট স্টেশন চত্বরে সাতক্ষীরা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও প্রধান অতিথি এস এম জগলুল হায়দার মধু আহরণ মৌসুম উদ্বোধন করেন। খুলনা বিভাগীয় বন সংরক্ষক (পশ্চিম) বশিরুল আল মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম আতাউল হক দোলন। অন্য মৌয়ালরা এখন সুন্দরবনে যেতে নৌকা মেরামত ও প্রয়োজনীয় উপকরন গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সুন্দরবন বিভাগের। সুন্দরবন বিভাগ ও মৌয়ালরা বলছেন, এপ্রিলের শুরুতেই সুন্দরবনে গড়াইন ও খলিশা গাছের ফুলের মধু সংগ্রহের উপযুক্ত সময়। গড়াইন ও খলিশা ফুলের মধু ছাড়াও জুন পর্যন্ত ৩ মাস ধরে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা (ওয়ার্ল্ড হ্যারিটেজ সাইড) সুন্দরবনের বিভিন্ন গাছের ফুলের মধু মৌচাক থেকে পর্যায়ক্রমে সংগ্রহ করবেন মৌয়ালরা। এ সময়ে মহাজনদের কাছ থেকে আগাম টাকা (দাদন) নিয়ে সুন্দরবনে মধু আহরণ করতে যান মৌয়ালরা। এক-একটি নৌকার মৌয়ালরা বন বিভাগ থেকে নির্ধারিত রাজস্ব পরিশোধ করে ৪৫ দিনের পাশ পারমিট নিয়ে জন্য সুন্দরবনে অবস্থান করবেন। এসময়ে গাছে ঝুলে থাকা মৌচাক থেকে মৌয়ালরা সংগ্রহ করবেন কাঙ্খিত মধু। মৌয়ালরা জানান, তারা বড় এক-একটি মৌচাক থেকে ১৫ থেকে ২০ কেজির অধিক মধু পেয়ে থাকেন।
বশিরুল আল মামুন আরো জানান, চলতি বছর সাতক্ষীরা রেঞ্জে এক হাজার ৫০ কুইন্টাল মধু এবং ২৬৫ কুইন্টাল মোম আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি কুইন্টাল মধুর জন্য ৭৫০ টাকা এবং প্রতি কুইন্টাল মোমের জন্য এক হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে। সুন্দরবনে বন্য প্রাণী অভয়ারণ্য ঘোষিত কম্পার্টমেন্ট ৪৯, ৫১(এ), ৫১(বি), ৫২, ৫৩, ৫৪ ও ৫৫ নম্বর এলাকায় মৌয়ালরা মধু আহরণ করতে পারবেন না।
তিনি জানান, একবার অনুমতি নিয়ে মৌয়ালরা সুন্দরবনে ১৪ দিন অবস্থান করে মাথাপিছু ৫০ কেজি মধু এবং ১৫ কেজি অপরিশোধিত মোম আহরণ করতে পারবেন। চলতি আহরণ মৌসুমে মধু সংগ্রহে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা সুন্দরবনের কর্মকর্তারা।
Leave a Reply