মুজাহিদ সাতক্ষীরা: নিজেকে মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে ৩৫ বছর ধরে পাইলস, ফিশার, ফিস্টুলা অর্শ, টিউমারসহ নানা রোগের অপারেশন করে চলেছেন তিনি। গ্রামের সহজ-সরল রোগীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার হাজার টাকা। নলতা কাজলা হাটখোলা আছিয়া ডাক্তারখানা পাইলস এন্ড পলিপাস চিকিৎসালয় কখনো নওয়াবেকি বাজারে মেসার্স হাফিজা ফার্মেসী এন্ড মেডিকেল কর্ণার, পাইকগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে পিয়া ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আবার নলতা বেজোরআটি সেবা ডিজিটাল ল্যাব এন্ড হাসপাতাল এলাকার গলির মধ্যে আবার কখনো গোপন কক্ষ ভাড়া করে নানা জটিল রোগের চিকিৎসা করেন তিনি। ডিপ্লোমা ডা. শেখ মনিরুজ্জামান (মনি) নামের এই ব্যক্তি যে একজন ভুয়া চিকিৎসক, সেটা জানা গেল গভীর অনুসন্ধানের পর। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরা কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা কাজলা এলাকায়। সরেজমিনে কাজলা হাটখোলা বাজারে আছিয়া ডাক্তারখানা পাইলস এন্ড পলিপাস চিকিৎসালয়ের একটি কক্ষে কথা হয় ডিপ্লোমা ডা. শেখ মনিরুজ্জামান মনির সাথে। সেখানে কিছু ওষুধপত্র ও অস্ত্রোপচারের কয়েকটি ছুরি ও কাঁচি চোখে পড়ে। ওই কক্ষে অপারেশন থিয়েটারের আর কোনো সরঞ্জামাদি ছিল না। তারপরও ওই গোপন কক্ষের ভেতরে চলত তাঁর অস্ত্রোপচারের কাজ।
জিজ্ঞাসা করলেই মনিরুজ্জামান নিজেকে একজন মা ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দাবি করে শিশু হাসপাতাল ঢাকার একটি সনদের ফটোকপি দেখান। সেটিও ভুয়া বলে নিশ্চিত করেছে অনেকে। ২০০ টাকা প্রতিদিন ভাড়া হিসেবে ওই কক্ষে বসেই দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে একজন বিশেষজ্ঞ মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে পাইলসসহ নানা জটিল রোগে অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসার নামে প্রতারণা করছিলেন তিনি। ওই চিকিৎসক দাবি করেন, তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে এভাবে ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক খুলে সাতক্ষীরা খুলনাসহ বিভিন্ন হাটবাজারে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। অনুসন্ধানে তাঁর সব সনদপত্র দেখে ভুয়া প্রমাণিত হয়। অথচ ডিপ্লোমা ডা. শেখ মনিরুজ্জামান মনি নিজেকে এতদিন সার্জারি, পাইলস ও মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বলে দাবি করে আসছেন। আর রোগী বাড়ানোর জন্য তিনি গ্রামের বিভিন্ন হাট-বাজারে লোক ভাড়া করে লিফলেট বিলি করতেন। ওই লিফলেটে দেওয়া মোবাইল নম্বরের মাধ্যমেই রোগীরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করে চিকিৎসা নিতে আসত। এভাবেই তিনি ভ্রামমাণ ক্লিনিক খুলে গ্রামের সহজ-সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন।
এসকল বিষয়ে ডিপ্লোমা ডা. শেখ মনিরুজ্জামান মনির নিকট জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, এসব বিষয়ে কিছু ফোনে বলবোনা, চেম্বারে আসতে হবে।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল কবিরের নিকট আলাপ কলটি গ্রহণ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply