বিশেষ প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় অভ্যন্তরীণ রুটসহ দ‚রপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। বন্ধ রয়েছে পরিবহন, ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সাতক্ষীরার খুলনা রোড মোড় থেকে খুলনাগামী যাত্রীদের একজন জানান, “সকাল থেকে আকস্মিক বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খুলনাতে যাবো কিন্তু কোন উপায় পাচ্ছি না। সড়কে শুধু ইজিবাইক চলছে। ইজিবাইকে করে খুলনাতে পৌঁছানো অসম্ভব।” এদিকে, ইজিবাইক ও মহেন্দ্রযোগে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করলেও বাস ও পরিবহন শ্রমিকরা বাঁধা দিচ্ছে বলে জানান যাত্রীরা। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সামনে থেকে খুলনাগামী যাত্রী বাকিবুল হাসান বলেন, “জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে তেলের দামও বাড়িয়ে দিল সরকার। পরিবহন মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর জন্য এখন গাড়ি বন্ধ করে দিয়েছে। এখন ভোগান্তি সব সাধারণ মানুষের। এখন ইজিবাইকই একমাত্র ভরসা।” ঈগল পরিবহনের সাতক্ষীরা কাউন্টারের ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, ডিজেলের দামের পাশাপাশি ভাড়া না বাড়ানোয় তারা পরিবহন চলাচল বন্ধ রেখেছেন। পরিবহন মালিক সমিতির পরবর্তী সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত তারা পরিবহন বন্ধ রাখবেন। সাতক্ষীরা বাস মালিক সমিতির আহবায়ক আবু আহম্মেদ জানান, বাস মালিক ও শ্রমিকরা মিলে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। তেলের দাম বেড়েছে ভাড়াও বৃদ্ধি পাবে। সেটি যতক্ষণ পর্যন্ত নির্ধারণ না হবে ততদিন কোন মালিক ও শ্রমিক বাস চালাবে না। বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়তে থাকায় গত বুধবার বাংলাদেশে ডিজেল ও কেরোসিন লিটার প্রতি ১৫ টাকা করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেয় গণপরিবহন ও পণ্য পরিবহন মালিকরা। ‘ভাড়া বাড়ালে গাড়িতে যাত্রী উঠবে না, তেলের দাম কমিয়ে দিন’ লিটারে ১৫ টাকা বেড়ে তেলের দাম এখন ৬৫ টাকা থেকে ৮০ টাকা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন বাস মালিক ও শ্রমিকরা। “ভাড়া বাড়ালে এখন গাড়িতে যাত্রী পাওয়া যাবে না, সেকারণে ভাড়া বাড়ানোর চাইতে তেলের দাম কমানো বেশি জরুরী”, এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন সাতক্ষীরা বাস-মিনিবাস-মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান। সাতক্ষীরা বাস টার্মিনালের বাসচালক মিলন সরদার বলেন, “তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। আমাদের দাবি তেলের দাম কমানো হোক। ২-৫ টাকা বাড়ালেও চলতে পারতাম কিন্তু ১৫ টাকা বেড়েছে এটা অনেক। সারাদিনে একটা গাড়িতে চার হাজার টাকা রোজগার হয়। এর মধ্যে যদি দুই হাজার টাকার তেল লাগে তবে আমরা চলবো কিভাবে?”
আরেক বাসচালক ইবাদুল ইসলাম বলেন, “সাতক্ষীরা থেকে খুলনা গেলে আগে ২৫০০ টাকার তেল লাগতো এখন লাগবে তিন হাজার টাকার। আবার রোজগার ৪-৫ হাজার টাকা। এই টাকায় বাসচালক, হেলপার, কন্ট্রাকটর এরা নিবে কী আর মালিককে দিবে কী? তেলের দাম কমানো হোক।” এদিকে খুলনা রোড মোড়ের হোটেল ব্যবসায়ী সাইফুল হোসেন বলেন, “তেলের কারণে বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। এখন আমরা ব্যবসায়ী মানুষ এক স্থান থেকে অন্যস্থানে যেতে পারছি না। এর প্রভাব পড়বে ব্যবসার উপর। অনেক কাঁচামাল রয়েছে, যা সময়মতো সরবরাহ করতে না পারলে নষ্ট হয়ে যাবে। ভোগান্তিটা হবে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের। আমরা চাই এগুলোর সমাধান হোক।”
Leave a Reply