উপকূল প্রতিনিধি: শ্যামনগর উপজেলার নওয়াবেঁকী বাজার সংলগ্ন জামান ব্রিকস নামীয় ইটের ভাটায় দেদারছে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। শতভাগ কয়লা ব্যবহারের নির্দেশনা থাকা সত্তে¡ও কাঠের উপর নির্ভর করে চলছে খোলপেটুয়া নদী তীরের এ ইট ভাটা। ইট প্রস্তুত নীতিমালা উপেক্ষা করে জ¦ালানী হিসেবে প্রকাশ্যে সেখানে কাঠ ব্যবহার করা হলেও অজ্ঞাত কারনে কেউ ‘টু’ শব্দটি পর্যন্ত করছে না। অভিযোগ রয়েছে সুন্দরবন সংলগ্ন নদী তীরবর্তী ঐ ইট ভাটার জন্য শ্যামনগর সদর ও বংশীপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের করাতকল থেকে কাঠ সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রদর্শনের জন্য যৎসামান্য কয়লা প্রবেশদ্বারে স্তুপাকারে রাখা হলেও সেখানে দিন-রাত সার্বক্ষনিকভাবে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে জ¦ালানী হিসেবে।
সরেজিমনে গত বুধবার দুপুরে জামান ব্রিকস-এ পৌছে দেখা যায় ভাটার উপর ও নিচে বেশ কয়েকটি স্থানে স্তুপাকারে রাখা হয়েছে করাতকলে চেরাইকৃত কাঠ। দায়িত্বে থাকা শ্রমিকরা একে একে সেসব স্তুপ থেকে কাঠ নিয়ে ভাটার মধ্যে নির্দিষ্ট স্থানে সাঁজিয়ে দিচ্ছে পরবর্তী পর্যায়ে আগুন জ¦ালিয়ে রাখার স্বার্থে। প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ম্যানেজারসহ বেশ কয়েকজন এসময় সেখানে দাড়িয়ে ভাটার মধ্যে কাঠ দেয়ার কাজ তদারকিও করছে।
স্থানীয়রা জানায় প্রায় এক দশকেরও বেশী সময় পুর্বে সুন্দরবন সংলগ্ন খোলপেুটয়া নদীর তীরে গড়ে উঠে ঐ ইট ভাটা। প্রশাসনের কড়াকড়িতে বিগত কয়েক বছর কাঠের পাশাপাশি কয়লা ব্যবহৃত হলেও গত ’বছর থেকে কাঠ সেখানকার প্রধান জ¦ালানী হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মুল্য ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধিসহ নানা অজুহাতে চলতি বছর থেকে সেখানে প্রায় শতভাগ কাঠের ব্যবহার শুরু হয়েছে।
স্থানীয়রা আরও জানায় ইট পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত মিনি ট্রাক ও ডাম্পারযোগে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তের করাতকল থেকে প্রতিদিন রাতে শত শত মন কাঠ এনে জড়ো করা হয়। সারাদিন সে কাঠ ব্যবহারের পর রাতে আবারও ট্রাক ভরে কাঠ আনা হয়। গ্রাম থেকে কাঠ সংগ্রহকারী কয়েক ব্যবসায়ীও সপ্তাহান্তে সেখানে কাঠ সরবরাহ করে বলেও স্থানীয়রা জানায়। স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায় চৌদ্দ বা পনের দিনের প্রতি রাউন্ড ইট পোড়ানোর কাজে পাঁচশ থেকে সাতশ মন কাঠ প্রয়োজন হয়। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী জুন-জুলাই পর্যন্ত পাঁচ থেকে সাত হাজার মন কাঠ সেখানে জ¦ালানী হিসেবে ব্যবহার হবে বলে তাদের ধারনা। সবকিছু প্রকাশ্যে হলেও জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন কিংবা পরিবেশ অধিদপ্তর নিরবতা পালন করছে বলে তাদের দাবি।ছোট কুপোট গ্রামের আব্দুল আজিজসহ কয়েকজন জানায় শুরুতে আগুন দেয়ার দেয়ার সময় কাঠে দরকার বলে প্রচার করলেও প্রায় দু’মাস ধরে সেখানে জ¦ালানী হিসেবে কাঠ ব্যবহার হচ্ছে। উপর মহলে প্রতিষ্ঠানের কর্তাদের সুসম্পর্ক থাকায় স্থানীয়রা এসব নিয়ে কথা বলে শত্রæতা বাড়াতে চায় না। নদী তীরবর্তী হওয়ায় অনেক সময় কার্গোযোগে পর্যন্ত সেখানে কাঠ নিয়ে আসা হয় বলেও এসব গ্রামবাসীর দাবি।
অভিযোগ উঠা জামান ব্রিকসের ম্যানেজার আল মামুন মুটোফোনে জানান শুরুতে আগুন দেয়ার জন্য কিছু কাঠ আনা হয়েছিল। সেগুলো পরবর্তীতে আর সরানো হয়নি বলে তা ভাটার উপরে ও পাশে স্তুপাকারে রয়ে গেছে। সম্পুর্ন জ¦ালানী কয়লার বলে তিনি দাবি করেন।
শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আক্তার হোসেন জানান ইট ভাটায় কাঠ ব্যবহারে কঠিন বিধি নিষেধ রয়েছে। কেউ আইন অমান্য করে ভাটায় জ¦ালানী হিসেবে কাঠ ব্যবহার করলে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply