আব্দুল আহাদ, কলারোয়া: শীতের আগমণী বার্তায় সাতক্ষীরার কলারোয়ায় পল্লীর পরতে পরতে শোভা পাচ্ছে সরিষা ফুলের সমারোহ। অসময়ে ঘূর্ণিঝড় “মিগজাউম” এর প্রভাবে সামান্য ক্ষতি হলেও সরিষা ফুলের দোল খাওয়া গাছে কলারোয়ার মাঠগুলো ছেয়ে গেছে এক নান্দনিক সৌন্দর্যে। সকালের শিশির ভেজা মাঠে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য মলিন হলেও বিকেলের সোনালী আলোয় এর অপরূপ সৌন্দর্যে হৃদয় কাড়ে। দর্শনার্থীদের মনে জেগে ওঠে কবিত্ব ভাব।
সরিষা একটি তৈল ফসল। বাংলাদেশে তিন প্রকার সরিষা চাষ করা হয়। যেমন, মাঘি, রাই ও ধলি। বাংলাদেশের প্রধান ভোজ্য তেলের অধিকাংশ সরিষা থেকে আসে। এদেশে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়।
দেশে সরিষা তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় আগ্রহ করেই পূর্ব বছরের তুলনায় কৃষকরা সরিষা চাষে উদ্যোগী হয়েছেন। আপাতত আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কলারোয়ায় সরিষার বাম্পার ফলন ও ভালো দামের আশা করছেন কৃষকরা। গ্রাম্য কতিপয় কৃষক জানালেন ফলন ভালো পাওয়ার আশায় এবার উন্নত জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
আব্দুর রহমান নামে এলাকার এক সরিষা চাষি জানান কম খরচ, কম পরিশ্রম আর কম সময়ে সরিষা চাষ করা যায় বলে এটি অত্যন্ত লাভজনক ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে ৬-৮ মণ সরিষা পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। বর্তমান বাজারে সরিষার দাম আশাব্যঞ্জক তাই চাষীরা এটি বিক্রয় করে অনেক লাভবান হওয়ার আশা পোষন করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ২৫হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। শুরুতে সরিষা ক্ষেতে পোকা দে;খা দিলেও মাঠ পর্যায়ে সরিষা চাষিদের কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরি সহায়তার কারনে সরিষা ক্ষেত অনেকটা রোগ বালাই মুক্ত।
এদিকে সরিষা ক্ষেতে মৌ বাক্স রেখে মধু সংগ্রহ করা হচ্চে। মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে ও মৌমাছির গুন গুন শব্দে ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহের দৃশ্য এক অপরূপ সৌন্দর্য়ের সৃষ্টি করে। তাছাড়া সমন্বিত চাষের অংশ হিসেবে আম বাগানেও সরিষা চাষ করা হচ্ছে।
যথা সময়ে সরকারি ভাবে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সরিষা বীজ, উন্নত সার ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ সরবরাহ করা হলে মাঠ পর্যায়ে আরো জমি চাষের উপযোগী হবে। ফলে এলাকার চাহিদা মিটিয়ে বাকী সরিষা শহরে এমনকি বিদেশে রপ্তানি করা যাবে বলে প্রান্তিক চাষিদের একান্ত বিশ্বাস।
Leave a Reply