নিজস্ব প্রতিনিধি: সম্প্রতি দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ডালিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ৩সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে আগামী ৭কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার জন্য নির্দেশ দেওয়ার পর তদন্ত কমিটি সোমবার ২৯জানুয়ারি ঘটনাস্থলে গিয়ে সরেজমিনে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন।এসময় তদন্ত কমিটি,জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সামনে ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্যসহ গ্রামবাসীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে উপস্থিত হয়ে সহকারী শিক্ষিকা ডালিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত কমিটির নিকট তুলে ধরে তাকে অবিলম্বে অন্যত্র বদলীর জোর দাবি জানান।
জানা গেছে, বালিথা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ডালিয়া আহমেদ সম্প্রতি স্কুলের গাছ বিক্রি করে আত্মসাৎ করে এবং সুকৌশলে আরও একটি বড় বট গাছের ডাল বিক্রি করার চেষ্টা করলে ঐ স্কুলের জমিদাতা মৃত জহিরউদ্দীন সরদারের পৌত্র ও ২ শিক্ষার্থীর অভিভাবক আ: রাজ্জাক আলী বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে বাঁধা প্রদান করলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হেনস্তা করার জন্য সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করলে ২০জানুয়ারী শনিবার দুপুরে এস আই হাসান রহমান সরেজমিন তদন্ত করতে গেলে স্থানীয় একাধিক সংবাদকর্মীর উপস্থিতে শতশত গ্রামবাসী তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। এসময় ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্য, অর্ধশত শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গ্রামবাসীরা জানান -সহকারী শিক্ষিকা ডালিয়া আহমেদ স্কুলে যোগদান করার পর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান ও পরিবেশ খারাপ হতে থাকায় গত কয়েক বছরে অনেক শিক্ষার্থী অন্যত্র চলে গেছে। এসব নিয়ে সম্প্রতি দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় সোমবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয় থেকে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম, সঞ্জয় কুমার মন্ডল, ও মাসুম বিল্লাহ কে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে আগামী ৭ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন।তারই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার তদন্ত কমিটি সরেজমিনে তদন্ত সম্পন্ন করেন। এসময় তদন্ত কমিটি গ্রামবাসীদের নিকট থেকে ঐ শিক্ষিকার বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্য গ্রহণসহ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বক্তব্যও গ্রহণ করেন। এসময় তদন্ত কমিটির প্রধান সহকারী শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান-আমরা উভয়পক্ষের বক্তব্য গ্রহণ করেছি, যথাসময়ে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করার পর উর্ধতন কতৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উল্লেখ্য, শিক্ষিকা ডালিয়া আহমেদের বিরুদ্ধে স্কুলের গাছ বিক্রিসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঝাটা ও জুতা দিয়ে পিটানো,অকথ্য ভাষায় গালি দেওয়া, স্কুল ফাঁকি দিয়ে গ্রামে ঘুরে ঘুরে হাঁস-মুরগি, ডিম ও দুধ কিনে বেড়ানো এবং ক্রয়কৃত হাস-মুরগী স্কুলে এনে জবাই করে শিক্ষার্থীদের দিয়ে পরিস্কার করানোর মত বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক, গ্রামবাসী এবং ম্যানেজিং কমিটির একাধিক সদস্য তার বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে। তারা অনতিবিলম্বে ঐ শিক্ষিকার অন্যত্র বদলির দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন এবং আগামী ৭দিনের মধ্যে তাকে বদলি করা না হলে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান করবেন বলে জানান।
স্কুলের শিক্ষার পরিবেশ অনুকূলে না থাকার জন্য ঐ স্কুলের নৈশপ্রহরীর স্ত্রী সভাপতি হওয়াকে দ্বায়ী করেন একাধিক অভিভাবক। সচেতন এলাকাবাসী অবিলম্বে ওই শিক্ষিকাকে অন্যত্র বদলিসহ দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জোর দাবি জানিয়ে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
Leave a Reply