ন্যাশনাল ডেস্ক: নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কমছেই না। পণ্যভেদে দাম ২০-৫০ টাকা করে বেড়েই চলছে। কোরবানির ঈদের পর বাজারে মাছ ও সবজির দাম কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে কাঁচা মরিচ, আদা, পেঁয়াজ, আলু, টমেটো, ভোজ্যতেল ও চিনি- এ সাতটি নিত্যপণ্যের দাম এখনো ঊর্ধ্বমুখী। এসব পণ্যের দাম কিছুতেই সাধারণ মানুষের নাগালে আসছে না। প্রতিদিন বাজারে গিয়ে অস্বস্তি নিয়ে ঘরে ফিরছেন নিম্নবিত্তরা।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এমন চিত্র দেখা গেছে। ফার্মের মুরগির লাল ডিম গত সপ্তাহে ১৪৫ টাকা ডজন বিক্রি হলেও সেটি আজ ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও ফার্মের সাদা ডিমের ডজন ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৭০ টাকায় বিক্রি হলেও তা কিছুটা কমে ১৬০-১৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারে ছোট চিংড়ি ৬০০ টাকা, মাঝারি আকারের চিংড়ি ৮০০ টাকা, পাবদা মাছ ৫০০ টাকা, রুই ৩০০-৪০০ টাকা, পাঙাস ২০০-২৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, পুঁটি ৮০০ টাকা, টেংরা ৮০০ টাকা, কাতলা ৩৫০ টাকা এবং কই মাছ ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছে, দাম কমানোর পর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৭৯ টাকা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা আগের দাম ১৮৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে কমেছে ৫ টাকা। খোলা সয়াবিন ১৫৯ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা দরে। আর ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৪৩ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৭৩ টাকা, দাম না কমায় তা বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ৯১০ টাকায়।
অন্যদিকে দীর্ঘদিন খুচরা বাজারে কোথাও মিলছে না প্যাকেটজাত চিনি। গত কদিনের ব্যবধানে এ পণ্যটির দাম আরও বেড়ে এখন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাওবা ১৫০ টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হচ্ছে। সরেজমিনে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, তেল-চিনি ছাড়াও বাজারে আরও পাঁচ ধরনের পণ্যের দাম ক্রেতাদের জন্য স্বস্তিদায়ক নয়। এরমধ্যে কাঁচা মরিচ ২৬০ থেকে ৩২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক পোয়া বা ২৫০ গ্রাম কিনলে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০ টাকা। গত প্রায় দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আদার দাম ৩০০ টাকা কেজির নিচে নামছে না। পর্যাপ্ত আমদানির পরও বাজারে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া আলুর দাম উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। সারাবছরই স্থিতিশীল থাকলেও মৌসুমের শুরুতে আলুর অস্থিতিশীল বাজারকে অস্বাভাবিক বলছেন ক্রেতারা। মাত্র কদিনের ব্যবধানে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আলু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। অন্যদিকে বাজারে গত রমজানের ঈদের পর থেকেই টমেটোর দাম ২০০ টাকা কেজির নিচে নামেনি। এখন বিভিন্ন বাজারে এ কাঁচা পণ্যটি কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস ৮০০ টাকা ও খাসির মাংস এক হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার ঘুরে তেমন ক্রেতা চোখে পড়েনি। পুরো বাজারে ২০-২৫ জন বিক্রেতা থাকলেও ক্রেতা ছিলেন হাতে গোনা ১০-১৫ জন। বাজারে আসা মঞ্জু মিয়া বলেন, এখন আর বাজারে এসে ব্যাগ ভরে বাজার করতে পারি না। মাংস আর আলু-পেঁয়াজ কিনলেই এক হাজার টাকা শেষ। মাছের বাজারও আগের মতো নেই, সেখানেও এখন আগুন। আগের এক-দুইশ টাকায় মাছ পাওয়া যেত। আর এখন ২৫০ গ্রাম মাছের দামই হয় এক-দুইশ টাকা।
Leave a Reply