খায়রুল ইসলাম আশাশুনি: বেশি মূল্য পাওয়াই শিরিস বা শিশু গাছ নামে পরিচিত গাছের ডালে লেগে থাকা আঠা জাতীয় প্রলেপ সংগ্রহের হিড়িক পড়ে গেছে। গত এক মাস ধরে আশাশুনি উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে মহাধুমধামের সাথে এই প্রলেপ সংগ্রহের কাজ চলছে। কাজকর্ম ও নাওয়া খাওয়া ছেড়ে দিয়ে গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশু-বৃন্ধসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ শিরিস গাছের ডালে লেগে থাকা এই আঠা জাতীয় প্রলেপ সংগ্রহ করছে। তারা দাম পাচ্ছে আশানুরুপ। তাই আঠা লাগানো ডাল সংগ্রহে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেঘুরে ডাল ক্রয় করছে। শিরিস গাছের ডালের আটা কোথায় যাচ্ছে, সেটা কেউ সঠিকভাবে তারা কেউ জানেনা না। লোক মুখে শোনা যাচ্ছে,কেউ বলছে ঢাকায় যাচ্ছে আবার কেউ বলছে এটি ভারতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিয়ে কি করা হচ্ছে, সেটাও সঠিক ভাবে কেউ বলতে পারছে না।আর কোথায় যাচ্ছে তা নিয়ে সংগ্রহকারি, ক্রেতা ও বিক্রেতার কোন মাথা ব্যাথা নেই।তারা টাকা পাচ্ছে বিক্রি করছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় উপজেলার কুল্যার মোড়ে বিক্রি হচ্ছে।বাহিরের ব্যবসাহীরা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বিক্রেতা মোঃ বাবলু, মোঃ সোহরাব , ইসমাইল জানান কুল্যার মোড়ে। বাহিরের ব্যাপারীরা এসে কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন ভোর হতে স্থানীয় ক্রেতারা গ্রামে গ্রামে গাছ থেকে ডাল কেটে শত শত ভ্যান ও ইজিবাইক বোঝাই করে বাড়ি নিয়ে আঠা ছাড়িয়ে বিক্রি করছে। এতে তাদের আয় হচ্ছে ভাল। শতশত মানুষ বিকল্প আয় হিসেবে এই কাজে ব্যস্থ সময় পার করছে।
জানা গেছে, শিরিসের আঠা ঢাকা যাচ্ছে, সেখানে কারখানা আছে। এদিয়ে ফর্নিচারের পালিস করা সহ সিঁদুর ও রং সহ বিভিন্ন কেমিক্যাল জাতিয় দ্রব্য তৈরি করা হয়, শিরিসের ডালের ব্যাপক চাহিদা। কে কার আগে ডাল কিনতে পারবে তার জন্য ব্যবসাহীরা বিভিন্ন এলাকায় ছুটে বেড়াছে।ব্যবসাহী সহরাব জানান,আমরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে গাছের ডাল ক্রয় করে গাছ থেকে সেগুলো নিজেরা ভেঙে নিয়ে আসছি। সারাদিন ডাল ক্রয় করে সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে আঠা গুলো পরিষ্কার করে ক্রেতার কাছে বিক্রি করে দেই। ডাল থেকে আঠার মত প্রলেপ ছাড়াতে কেজি প্রতি ৩০ টাকা দিতে হয়। এ আঠাগুলো সংগ্রহ করে বস্তায় ভরে কুল্যার মোড়ে সহ বাঁকা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ডাল থেকে ছাড়ানো এ আঠা কেজি প্রতি ২শত টাকা থেকে ২৫০টাকা দরে বিক্রয় করছি। এতে প্রতিদিন ৩ জনের প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লাভ হয়।কয়েক বছর যাবত আশাশুনি বিভিন্ন এলাকার শিরিস গাছের ডাল থেকে আঠা ঝরে যাচ্ছে ও ডাল শুকিয়ে যাচ্ছে।কি কারণে আঠা ঝরে ডাল শুকিয়ে যাচ্ছে তার রোগ উদঘটন হয়নি।আর আঠা ঝরে এক পযায় শতশত গাছ মরে যাচ্ছে, ভোর হলেই শত শত মানুষ গ্রামে গ্রামে এসে একেবারে উৎসবমুখর পরিরেশে শিরিস গাছের এই আঠা সংগ্রহের জন্য ডাল ক্রয় করছে। ছোট ছোট শিশু, বৃদ্ধ, নারী পুরুষ মিলে সামান্য টাকার লোভে যেভাবে জীবনের ঝুকি নিয়ে গাছে উঠে আঠা লাগানো চিকন ডাল কাটছে। বিশেষ করে মরা গাছে উঠে এই ডাল ও আঠা সংগ্রহ করছে তাতে ভয় হচ্ছে। ঝুকি নিয়ে গাছের নরম ডালে বসে আঠা লাগানো চিকন ডাল সংগ্রহ করতে গিয়ে বড় ধরণের দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে তার আশঙ্কাও রয়েছে। তারপরও ঝুকি নিয়ে তারা শিরিস গাছের আঠা সংগ্রহ করছে।
Leave a Reply