আব্দুল কাদের, নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা পাক রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে নলতা কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশন পরিচালিত পবিত্র রমজান মাসে মাস ব্যাপী অনুষ্ঠিতব্য শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ইফতার মাহফিল করোনা ভাইরাসের কারণে পরপর দুই বছর বন্ধ থাকলেও এ বছর করোনা সংক্রমণ না থাকায় শুরু হয়েছে বিশাল ইফতার মাহফিল। জানা যায় পবিত্র রমজান মাসে নলতা শরীফে অনুষ্ঠিত ইফতার মাহফিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম। অতি ধর্মীয় ভাবগাম্ভিয্য পূর্ন পরিবেশে চলে আসা দীর্ঘদিনের ইফতার অনুষ্ঠানে নলতা শরীফের আশে পাশের এলাকা তথা কালিগঞ্জ, দেবহাটা ও শ্যামনগর উপজেলার অগনিত রোজাদার বৃন্দ নলতা শরীফের ইফতার মাহফিলে হাজির থাকেন। তথ্যানুসারে, ১৯৫০ সাল থেকে প্রতিবছর রমজানে রওজা চত্বরে বিশাল ছাউনি তৈরি করে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। রমজান মাসব্যাপী এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করতেন হজরত শাহ্ ছুফী খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পরও মিশন কর্তৃপক্ষের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। নলতা পাক রওজা শরীফে প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষের ইফতারের আয়োজন করা হয়। এর মধ্যে ৬ হাজার মুসল্লি রওজা শরীফ প্রাঙ্গণে একই ছাউনির নিচে বসে একত্রে ইফতার করেন। আর বাকি ৪ হাজার মানুষের ইফতার এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, মিশন ও বাড়িতে বাড়িতে পাঠানো হতো। পাক রওনা শরীফ প্রাঙ্গণের সুবিশাল প্যান্ডেলে ৫ থেকে ৬ হাজার রোজাদার নিয়মিত ভাবে ইফতার করে থাকেন। তাছাড়া বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিষ্ঠিত ৭০-৮০টি শাখা মিশন সদস্যদের মাঝে ইফতার বিতরণ করা হয়। দীর্ঘদিনের চলে আসা ইফতার পাটি পরিচালনা করতেন পাক রওজা শরীফের খাদেম, বিশিষ্ট বুজুর্গ, ভক্ত আশেকানদের হৃদয়ের স্পন্দন আলহাজ্ব মোঃ আনছার উদ্দীন আহমেদ। খাদেম আলহাজ্ব মোহাম্মদ আনছার উদ্দিন মৃত্যুর পর এবারে প্রথম ইফতার মাহফিলের আয়োজন হয়েছে। কেন্দ্রীয় আহছানিয়া মিশনের ব্যবস্থাপনায় ইফতার মাহফিলের তত্ত্বাবধান করছেন আহছানিয়া মিশনের সম্মানিত সাধারণ সম্পাদক সহ মিশনের কর্মকর্তারা। ধনী-গরিব ভেদাভেদ ভুলে প্রতিদিনই অংশ নেন হাজার হাজার মুসল্লি। শুধুমাত্র সওয়াব হাসিলের জন্য দুর-দুরান্ত থেকেও ইফতারের উদ্দেশ্যে রোজাদাররা ছুটে আসেন নলতা রওজা শরীফে। এছাড়া ইফতারি বিলি-বন্টন ও তদারকির জন্য রয়েছে প্রায় ৪ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। ইফতারি সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে খেজুর, ছোলা, সিংগড়া, ফিরনি, চিড়া, কলা সহ অন্য খাদ্য সামগ্রী।
Leave a Reply