মোঃ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ শ্যামনগর: এক সময়ে শ্যামনগর অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে অবস্থিত অবস্থাসম্পন্ন সম্ভ্রান্ত পরিবারের উঠানে উঠানে শোভা পেত ধান রাখার গোলাঘর। সময়ের পরিবর্তনে এখন সেটা বিলুপ্তির পথে গোলাভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু ,পুকুর ভরা মাছ আবহমান গ্রামবাংলার কাব্যিক বর্তমানে প্রবাদ বচন। গ্রামে পুকুর ভরা মাছ দেখতে পাওয়া যায় কিন্তু গোলাভরা ধান গোয়াল ভরা গরু আর চোখে পড়ে না।পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে কেউ কেউ বাড়ির উঠানে এই গোলাঘর রেখে দিয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অবস্থাসম্পন্ন ব্যক্তিদের উৎপাদিত শস্য পণ্য সংরক্ষণের জন্য বাড়ির উঠানে এক কোণে একটি উঁচু জায়গায় গোলাঘর স্থাপন করত যাদের জমির পরিমাণ বেশি তারা । ধান সংরক্ষণের জন্য এই গোলাঘর ব্যবহার করতেন বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি গোল আকৃতির গোলা। এঁটেল মাটির মন্ড তৈরি করে ভিতরে মাটির প্রলেপ লাগিয়ে রোদে ভালোভাবে শুকিয়ে তার ওপর টিনের চাল দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হতো এই গোলাঘর ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের ১০০ থেকে ৩০০ মন ধান সংরক্ষণ করে রাখতেন কৃষকরা ।তাদের উৎপাদিত ফসল প্রথমে ভালোভাবে শুকিয়ে গলায় সংরক্ষণ করতেন। এই গোলাঘর ব্যবহার টিকিয়ে রাখতে সরকারি সহযোগিতা দাবি কৃষি সচেতন মহলের। শ্যামনগর উপজেলার পরিচিত কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায় ,একসময় গোয়াল ভরা গরু, গোলাভরা ধান, পুকুর ভরা মাছ, গ্রামের অবস্থাসম্পন্ন সম্ভান্ত পরিবারের পরিচয় বহন করত । সভ্যতার বিবর্তনে আধুনিক কৃষি সংরক্ষণ পদ্ধতি আবিষ্কারের ফলে হারাতে বসেছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী ধানের গোলা পূর্বপুরুষদের ব্যবহৃত সেই ধানের গোলা কোন কোন ব্যক্তি স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছে। তিনি বলেন ৭০/৮০ দশকের দিকে ধানের গোলা ঘর সম্ভ্রান্ত পরিবারের গুলোর কাছে খুবই জনপ্রিয় ঐতিহ্য বহন করত।
Leave a Reply