1. nokhatronews24@gmail.com : ajkarsatkhiradarpan darpan : ajkarsatkhiradarpan darpan
  2. install@wpdevelop.org : sk ferdous :
ডা: বিধান চন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব - আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:২৭ পূর্বাহ্ন
১৪ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
📰প্রথম আলোর বিভ্রান্তিকর রিপোর্টের প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি📰সদরের সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের ঘুসের টাকা গ্রহনকারী মহসিনের ক্ষমতার উৎসাহ কোথায়? (১ম পর্ব)📰স্বামী-সন্তানকে ফেলে পরকীয়ায় রেহেনা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ📰পাইকগাছায় ইয়াবাসহ যুবক আটক📰পাইকগাছায় বিভিন্ন পূজামন্ডপে বিএনপির সিসি ক্যামেরার প্রদান📰শ্যামনগরের ৭০টি পূজা মন্দিরে বিএনপির উপহার হস্তান্তর📰সাগরে লঘুচাপ, তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত📰সাতক্ষীরায় “বিশ্ব গণমানুষের সেবা ফাউন্ডেশন”এর জেলা কমিটি অনুমোদন📰পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা জামায়াতের বিক্ষোভ📰কালিগঞ্জে পুকুরে ডুবে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু

ডা: বিধান চন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : মঙ্গলবার, ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৮০ সংবাদটি পড়া হয়েছে

কে এম রেজাউল করিম দেবহাটা: ডা: বিধান চন্দ্র রায় পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের এক স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। চিকিৎসক রূপে তিনি ছিলেন ধন্বন্তরি। এই কিংবদন্তী চিকিৎসক শিক্ষাবিদ, স্বাধীনতা সংগ্রামী ও রাজনীতিবিদ্ও ছিলেন। বাংলার রাজনীতির এক টালমাটাল সময়ে তিনি টানা ১৪বছর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীত্ব করেছিলেন। প্রফুল্ল চন্দ্র ঘোষের পর তিনি ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মুখ্যমন্ত্রী। পশ্চিমবঙ্গকে নবরূপে গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ১৯৬১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘ভারতরতেœ’ ভূষিত হন।
জন্ম ও বংশপরিচয়: বিহার রাজ্যের পাটনার বাঁকিপুরে ১৮৮২এর ১ জুলাই বিধান চন্দ্র রায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা প্রকাশ চন্দ্র রায় সরকারি কর্মচারি ছিলেন। মাতার নাম অঘোরকামিনী দেবী। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবথেকে ছোটো ছিলেন বিধান চন্দ্র রায়। পিতা প্রকাশ চন্দ্র ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষিত ছিলেন।
শিক্ষা ও যৌবন: স্থানীয় গ্রাম্য পাঠশালায় তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। এরপর পাটনার টিকে ঘোষ ইনস্টিটিউশন এবং পাটনা কলেজিয়েট স্কুলে পড়াশোনা চালিয়ে যান। এরই মাঝে ১৮৯৬ এ প্রায় বিনা চিকিৎসায় মা’কে হারান তিনি। পরের বছরই তিনি এফ.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এরপর প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পাটনা কলেজে গণিতে অনার্স নিয়ে ভর্তি হন। ১৯০১ সালে গণিতে সাম্মানিকসহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলকাতা চলে আসেন। পিতার সামান্য মাইনের চাকরিতে সংসার কোনোরকমে চলত। প্রবল অর্থাভাবের মধ্যে দিয়েই পরাশোনা চালিয়ে গিয়েছেন বিধান চন্দ্র।
ডাক্তারি পড়বার আলাদা কোনো আগ্রহ ছিল না তাঁর। শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ফর্মের জন্য আবেদন করেছিলেন। ডাক্তারির ফর্ম আগে আসায় আবেদন করে পূরণ করে পাঠিয়ে দিলেন। শিবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ফর্ম যখন এলো, তখন তিনি ডাক্তারিতে ভর্তি হয়ে গেছেন। দারিদ্র্যের কারণে ধনী রোগীর বাড়িতে মেল নার্স হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন অধ্যাপকরা। তখনকার দিনে বারো ঘণ্টার ডিউটিতে পারিশ্রমিক আট টাকা। প্র্যাকটিস জমাবার প্রথম পর্বে বিধান চন্দ্র কলকাতায় পার্ট টাইম ট্যাক্সি চালাতেন। জানা যায়, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের এমবি পরীক্ষায় ফেল করেছিলেন কিংবদন্তী এই চিকিৎসক। ১৯০৬ এ কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে এল এম এস এবং দু’বছর পর মাত্র ছাব্বিশ বছর বয়সে এমডি ডিগ্রি লাভ করেন।
এরপর উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে মাত্র ১২০০ টাকা সম্বল করে ইংল্যান্ডে গিয়ে মাত্র দু’বছরের মধ্যে মেডিসিন ও সার্জারির চূড়ান্ত সম্মান এমআরসিপি এবং এফআরসিএস প্রায় একসাথে অর্জন করেন। ১৯১১-এ দেশে ফিরে আসেন তিনি।
কর্মজীবন: ১৯১২ থেকে ১৯১৯ কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজে অ্যানাটমি বিভাগে শিক্ষকতা করেন। পাশাপাশি ডাক্তারি প্র্যাকটিস শুরু করেন। পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট সদস্য, রয়্যাল সোসাইটি অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড হাইজিন ও আমেরিকান সোসাইটি অফ চেস্ট ফিজিশিয়ানের ফেলো নির্বাচিত হন। চিকিৎসায় অসামান্য দক্ষতার জন্য মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই তাঁর প্রশস্তি ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশে। সাধারণ মানুষের সাথে সাথে তাঁর রোগীদের তালিকায় ছিলেন বিখ্যাত সব ব্যক্তিত্বরা।
চিকিৎসায় ধন্বন্তরি: জনশ্রুতি আছে, তিনি নাকি রোগীর মুখ দেখে তার রোগ নির্ণয় করতে পারতেন। ডাক্তারি পেশাকে কখনোই ব্যবসার চোখে দেখেননি তিনি। তাঁর অসামান্য কীর্তির এরকম অনেক উদাহরণ আছে। তাঁর রোগীর তালিকায় ছিলেন-দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন, মোতিলাল নেহরু, মহাত্মা গান্ধী, বল্লভ ভাই পাটেল, মৌলানা আজাদ, জওহরলাল ও তাঁর কন্যা ইন্দিরা প্রমুখ। তাঁর গুণের প্রশংসক ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি এবং ব্রিটেনের প্রাইম মিনিস্টার ক্লেমেন্ট এটলি। মহাত্মা গান্ধীর অনশনের সময়ে প্রত্যেকবার বিধান চন্দ্র রায় পাশে ছিলেন চিকিৎসক হিসেবে। জওহরলাল নেহেরু ও তাঁর কন্যাকে অসুস্থতার সময়ে সেবা করে চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন করেছেন বিধান চন্দ্র। দেশের বাইরে প্রায় বার্মা থেকে বালুচিস্তান পর্যন্ত তাঁর ডাক্তারির পরিধি ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হঅয়ার পর প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে দু’ঘন্টা দুস্থ রোগীদের বিনামূল্যে দেখতেন, ওষুধ কেনার টাকা না থাকলে তিনি দিয়ে দিতেন।
রাজনীতি ও মুখ্যমন্ত্রীত্ব: দেশবন্ধুর উৎসাহে ১৯২০তে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন বিধান চন্দ্র। কিছুদিনের মধ্যে আইন সভার সদস্য নির্বাচিত হন। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে কংগ্রেসে যোগদান করেন। ১৯৩১-এ গান্ধীজির ডাকে আইন অমান্য আন্দোলনে যোগদান করে কারাবরণ করেন। দেশ স্বাধীন হবার পর উত্তরপ্রদেশের গভর্নর হওয়ার জন্য তদানীন্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু প্রস্তাব দিলে অসুস্থতার কারণে তা হয়নি। জানা যায়, পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্ব বিধান রায়কে দেওয়ার কথা লর্ড মাউন্টব্যাটেন জওহরলাল নেহেরুকে বলেছিলেন। এরপর কংগ্রেস দলের প্রতিনিধিত্বে ১৯৪৮ সালের ১৪ই জানুয়ারি থেকে মৃত্যুকাল অবধি ১৪ বছর তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
পশ্চিমবঙ্গের রূপকার: স্বাধীনোত্তর ভারতে বাংলার টালমাটাল পরিস্থিতি ছিল। ১৯৪৮-এ উদ্বাস্তু সমস্যা রাজ্যে ভয়াবহ আকার নিয়েছিল, সেইসময় বিধান রায় তাদের দিয়েছিল অন্ন ও বাসস্থানের প্রতিশ্রুতি। বহু পতিত জমি উদ্ধার করে বাসস্থানের জন্য গড়ে তুললেন সল্টলেক, লেক টাউন, কল্যাণী উপনগরী প্রভৃতি। বেকারদের জন্য কর্মনিয়োগের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। বাংলায় শিল্পের জন্য প্রতিষ্ঠা হল দুর্গাপুর ইস্পাতনগরী, চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানা। দার্জিলিং-এ দেশের মধ্যে প্রথম পর্বতারোহণ শিক্ষাকেন্দ্র তৈরি হল। কলকাতার পর হলদিয়া বন্দর গড়ে ওঠা, এমনকি ফারাক্কা ব্যারেজ গড়ে ওঠার পেছনেও বিধান চন্দ্রের ভূমিকা ছিল।
তাঁর চৌদ্দো বছরের মুখ্যমন্ত্রিত্বে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের প্রচুর উন্নতি সাধন হয়েছিল। এই কারণে তাঁকে ‘পশ্চিমবঙ্গের রূপকার’ নামে অভিহিত করা হয়। শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে অবদান: বিধান চন্দ্র রায় ১৯৪২-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৪৩-৪৪ তিনি সেখানকার উপাধ্যক্ষ ছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টায় রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়া, রহড়া, নরেন্দ্রপুরে আশ্রমিক পরিবেশে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। সংস্কৃতিতেও তাঁর অবদান কম নয়। সত্যজিত রায়ের চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালি’ অসমাপ্ত অবস্থায় দেখেন এবং ছবিটির সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করেন। বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শংকরের জন্য সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবার্ষিকীতে রচনাবলী ছাপানোয় উদ্যোগী হন।
মৃত্যু: দীর্ঘ কর্মজীবনে তাঁর দু’বার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল, তৃতীয়বার আর ধাক্কাটা সামলাতে পারেননি। ১৯৬২এর ১লা জুলাই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। মানুষের মুখ দেখে নাড়ির খবর বলতে পারা এই চিকিৎসক নিজের আসন্নপ্রায় মৃত্যুর কথা বুঝতে পেরেছিলেন।
উপসংহার: মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে কলকাতার উপনগরী সল্টলেকের নামকরণ করা হয় বিধাননগর। বরণীয় এই ব্যক্তিটির জন্ম ও মৃত্যু একই দিনে, ১ জুলাই। চিকিৎসাক্ষেত্রে তাঁর অবিস্মরণীয় কৃতিত্বের জন্য এই দিনটি ‘চিকিৎসক দিবস’ হিসেবে পালিত হয়। লেখক: স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক, সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগ

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :

সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি:

এম এ কাশেম ( এম এ- ক্রিমিনোলজি).....01748159372

alternatetext

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো: তুহিন হোসেন (বি.এ অনার্স,এম.এ)...01729416527

alternatetext

বার্তা সম্পাদক: দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা

সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক :

মো: মিজানুর রহমান ... 01714904807

© All rights reserved © 2020-2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd