শ্যামনগর প্রতিনিধি: শ্যামনগরে চিকিৎসাধীন তামান্না সুলতানা রুপা(২০) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে উপজেলা সদরের রিডা প্রাইভেট হাসপাতালে অপারেশনের প্রায় তিন ঘন্টা পর মৃত্যু হয় ঐ প্রসুতি মায়ের। পরিবারের অভিযোগ প্রয়োজনীয় রক্তের ব্যবস্থা না করে অপারেশনের কারণে রুপার মৃত্যু হয়েছে। অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে থাকলেও শেষ মুহূর্তেও রোগীর পাশে সেবিকা ছাড়া কোন চিকিৎসক ছিল না বলেও তাদের অভিযোগ। তবে মৃতদেহের কাটাছেঁড়া এড়াতে কোন অভিযোগ করতে চান না বলে জানান মৃতের স্বজনরা। প্রথমবারের সন্তানের মা হতে যাওয়া রুপা উপজেলার জয়াখালী গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।
রুপার চাচী নারগিছ সুলতানা জানান, সন্তান সম্ভবা রুপাকে সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তবে এ্যানেসথেশিয়া চিকিৎসক না থাকায় প্রসব বেদনা শুরু হলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাকে পার্শ্ববর্তী রিডা প্রাইভেট হাসপাতালে নেয়া হয়। এসময় আলট্রাসনোগ্রাম প্রতিবেদন দেখে ডা. রিতা রানী রোগীকে তাৎক্ষণিক অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান জম্মদানের পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে অপারেশনের পর রোগীর খিঁচুনি দেখা দেয়। এসময় রোগীর পাশে থাকা সেবিকা মোবাইলে চিকিৎসকের সাথে কথা বলে একটি ইনজেকশন পুশের পর রুপার শরীর নিস্তেজ হয়ে যায়। এসময় তড়িঘড়ি এ্যাম্বেুলেন্স ডেকে তাদেরকে রোগী নিয়ে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে রওনা করিয়ে দেয় কতৃপক্ষ। তবে পথিমধ্যে রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় তারা মৃতদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। মৃতের মামা আওছাফুর রহমান জানান অপারেশনের দায়িত্বে থাকা রিতা রানীর ভুল চিকিৎসায় তার ভাগ্নির মৃত্যু হয়েছে। সন্তানের অবস্থা খারাপ জানিয়ে তড়িঘড়ি অপারেশনের পরামর্শ দিলেও রোগীর মৃত্যু সত্ত্বেও সদ্যজাত শিশুটি বেঁচে রয়েছে। চিকিৎসক ও কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হলে মৃতদেহ কাটাছেঁড়া হবে বলেও পরিবারের সদস্যরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এদিকে একাধিক সুত্র জানায়, রুপার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কতৃপক্ষ তার পরিবারের সাথে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সমঝোতা করেছে। সকালে মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মৃতদেহ জানাযা ও দাফনের যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে হাসপাতাল কতৃপক্ষের তদারকিতে। উপজেলার শীর্ষ নেতার ছেলে উক্ত হাসপাতালের চেয়ারম্যান হওয়ার কারণে ভুক্তোভোগী পরিবারটি কোথাও অভিযোগ করার সাহস দেখাচ্ছে না বলেও এসব এলাকাবাসীল দাবি।
ডা. রিতার রানীর মোবাইলে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কল গ্রহণ করেননি। পরিচালক আব্দুল্লাহ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় দায় অস্বীকার করেন। তিনি জানান, রোগীর স্বজনদের পরামর্শে অপারেশন হয়। পরিস্থিতি খারাপ হলে সাতক্ষীরা স্থানান্তর করা হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। নিকট আত্মীয় দাবি করে মৃতের দাফন ও জানাজায় তিনি অংশ নেন বলেও দাবি করেন।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবীর জানান বিষয়টি তিনি সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারেন। তবে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের কেউ কোন অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply