ন্যাশনাল ডেস্ক: ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পরদিনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি সব অফিস-আদালত খোলার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকে অফিসগামী যানবাহন সড়কে বের হতে শুরু করে। তবে সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে কোনও পুলিশ সদস্য ছিলেন না। এতে যান চলাচলে বিঘ্ন ও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের পাশাপাশি ঘটেছে দুর্ঘটনাও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মূলত গত কয়েকদিনের বিক্ষোভের সময় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা। সরকার পতনের পুলিশের ওপর একের পর এক হামলার খবর আসছে। আতঙ্ক ও জীবনের নিরাপত্তাহীনতার ভুগছেন পুলিশ সদস্যরা। সোমবার সরকার পতনের পর পুলিশ সদর দফতরেও অগ্নিসংযোগ দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় জীবনের শঙ্কায় কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশ অধস্থন কর্মচারী সংগঠনের পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞাপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর থেকে সারা দেশে পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা, পুলিশ সদস্য খুনসহ স্থাপনা ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। সারা দেশে সাড়ে চারশ’ থানা আক্রমণের শিকার হয়েছে। অগণিত পুলিশ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে; যা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সামিল। এহেন পরিস্থিতিতে পুলিশ সদস্যদের নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ পুলিশের অধস্থন কর্মচারী সংগঠন আজ ৬ আগস্ট হতে দেশব্যাপী অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করছে।
সকাল থেকে রাজধানীর বিজয় সরণি, মহাখালী, বনানী, কারওয়ান বাজার ও শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা, সড়কে স্বাভাবিক সময়ের মতো সড়কে যানবাহন চলাচল করছে। কোথাও কোথাও তীব্র যানজট দেখা গেলেও অধিকাংশ সড়কই ফাঁকা। মূলত ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রাস্তা মোড়গুলোতে যানবাহনে জটলা বাঁধতে দেখা যায়।
তবে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের ব্যক্তি উদ্যোগে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতেও দেখা গেছে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ বিজয় সরণি পয়েন্টে স্থানীয় ছাত্র-জনতাদের ট্রাফিক পুলিশ ভূমিকায় কাজ করতে দেখা যায়। তারা মোড়ের চারপাশে অবস্থান নিয়ে সড়ক নিয়ন্ত্রণ করছেন। জানতে চাইলে খোরশেদ নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, পুলিশ সদস্যরা রাস্তায় নাই। গাড়িগুলো এলোমেলো যাওয়ায় যানজট হচ্ছে। আমরা মনে করি দেশ আমাদের। দেশের সমস্যা সমাধানে আমাদেরই এগিয়ে আসা দরকার।
এব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানসহ ট্রাফিক বিভাগের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি।
তবে না প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিএমপির এক ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, আমাদের সিনিয়র কর্মকর্তাসহ বেশিরভাগ সদস্যরা শেখ হাসিনা সরকারের অনুগত ছিল। তারা সরকারের চাহিদা মতো কাজ করছ। দুর্নীতি করছে। যার ফলে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক না হলে দায়িত্ব পালনে জীবনের শঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply