আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ ডেস্ক: হঠাৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত, দুশ্চিন্তায় জেলার এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। হঠাৎ ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সাতক্ষীরা জেলাবাসি। একদিকে তীব্র তাপদাহ আর অন্যদিকে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার ২৪ লক্ষাধিক মানুষ। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। বিদ্যুতের লুকোচুরির কারণে তাদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে জেলার বিসিক শিল্পনগরীতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এ শিল্পনগরীর অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সাতক্ষীরা শহরের কাটিয়া এলাকার বাসিন্দা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো: মাহবুব হাসান দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, তীব্র তাপদাহের মধ্যে ঘন্টায় ঘন্টায় লোড শেডিং এ নাকাল হয়ে পড়ছে সাধারন মানুষ। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্করা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শিশু এবং বয়স্ক মানুষজন অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে। তাছাড়া আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এখন যদি শিক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে না পারে তাহলে পরীক্ষাতে ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে তাদের। সাতক্ষীরার সাংবাদিক মো: ফারুক হোসেন ও শিক্ষক মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, অসহনীয় গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিং সাধারণ মানুষজন অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। গরমের যন্ত্রণায় রাতের ঘুম নষ্ট মানুষজন রাস্তায় রাস্তায় বেরোচ্ছেন।
কলারোয়া উপজেলার শিক্ষক এম এ কাশেম জানান, বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীরাও। সকাল হতে না হতেই সূর্যের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর সময় গড়িয়ে দুপুর আসতে না আসতেই সেই তাপদাহ রীতিমত অসহনীয় হয়ে উঠছে। তার উপর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে।
তালা উপজেলার সুজনসাহা এলাকা থেকে সাংবাদিক মাওলানা মিজানুর রহমানসহ একাধিক স্থানীয় বাসিন্দরা জানান,একদিকে প্রচন্ড গরম অন্য দিকে ঘন্টার পর ঘন্টা বিদুতের লোড শেডিং এ অতিষ্ট হয়ে গেছে এলাকাবাসি।
আশাশুনি উপজেলার কুল্যা গ্রামের সাংবাদিক খায়রুল ইসলাম জানান, আগামী ৩০ জুন থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। আর এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ভয়াবহ লোডশেডিং। যার ফলে শিক্ষার্থীরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে করতে পারছেনা। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হতে হবে।
সাতক্ষীরা বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক গৌরব দাশ বলেন, বিসিকে উৎপাদনশীল ৪২টি কারখানা রয়েছে। গত তিন দিন যাবত ঘনঘন লোডশেডিংয়ের কারণে এসব শিল্প কারখানাগুলোতে মারাত্মকভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি দ্রæত বিদ্যুৎ স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহবান জানান।
সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুত সমিতির সহকারী জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মঞ্জরুল আকতার জানান, জেলায় তাদের ৬ লাখ ২৪ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ১১০ মেগাওয়াট। সেখানে তারা পাচ্ছেন মাত্র ৬৮ মেগওয়াট। ঘাটতি থাকছে ৪২ মেগাওয়াট। ফলে গ্রাহকের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
সাতক্ষীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ (ওজোপাডিকোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুনুর রহমান দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, তার অধীনে সাতক্ষীরাতে ৫৫ হাজার গ্রাহকের বিদ্যুত চাহিদা রয়েছে ১৯ মেগাওয়াট। সেখানে তিনি পাচ্ছেন মাত্র ১৫ মেগওয়াট। এতে করে ঘাটটি রয়েছে তার ৪ মেগাওয়াট।
তিনি আরো জানান, সাতক্ষীরা শহরের ১১টি ফিডার রয়েছে। যা থেকে পর্যায়ক্রমে লোডশেডিং ওঠানামা করা হয়। তবে কবে নাগাত বিদ্যুত স্বাভাবিক হবে তা তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
Leave a Reply