পাইকগাছা প্রতিনিধি: চলতি মৌসুমে পাইকগাছায় পাটের আশ ভালো হলেও হঠাৎ পাটের দাম কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। পাট চাষে উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারদর নি¤œমুখী হওয়ায় ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না তারা। দাম কমে যাওয়ায় হতাশাজনক পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষকরা। ফলে উৎপাদন খরচ তুলতে না পেরে পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব হওয়ার পথে কৃষক। এমনি পরিস্থিতিতে আগামী মৌসুম থেকে অনেকে পাট চাষ ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছেন ।
উপজেলার পাট চাষি রফিকুল ইসলাম বলেন, পাট চাষের সময় এবার নানা বিড়ম্বনার শিকার হয়। বড় সমস্যা পাট জাগ দেওযার জায়গা পাওয়া যায় না। পাটের আবাদের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ কিছুটা কমে এসেছে। এখন পুকুর-জলাশয় মাছ চাষের আওতায় এসেছে। ফলে মাছ চাষ করা পুকুর-জলাশয়ে পাট পচানো সম্ভব হচ্ছে না। বীজ বপণের সময় খরা হওয়ায় ঠিকমতো চারা গজায়নি। এতে ব্যাহত হয়েছে পাটের ফলন। প্রতি বিঘা জমিতে হালচাষ ও বীজ বপণ থেকে শুরু করে সার-কীটনাশকের খরচ, পানি সেচ শ্রমিক খরচ, জাগ দেয়া, আঁশ ছড়ানোসহ ঘরে তোলা পর্যন্ত খরচ পড়েছে ১৫-১৬ হাজার টাকা। অথচ মৌসুমের শুরুতে বাজারে পাট ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি হলেও, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৯শত থেকে ২ হাজার টাকা মন। অথচ গত বছরে এই পাট ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা বিক্রি হয়।
পাটের দাম কম হলেও পাটকাঠির প্রচুর চাহিদা ও দাম বেশি হওয়ায় পাট চাষীরা খরচ বাঁচানোর চেস্টা করছে। ছোট ছোট আটি হিসাবে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাটকাঠি দিয়ে সহজে উনুন জ্বালানো যায় ও সহজে রান্না করা যায়। এইজন্য গৃহবধুদের কাছে পাটকাঠির চাহিদা বেশি। উপজেলার গদাইপুর গ্রামের পাটচাষী কেসমত সরদার জানান, শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় পাটের আবাদে খরচ মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তারপরও পাটকাঠির দামের উপর নির্ভর করে পাট চাষ করছি।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৩৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এএইচএম জাহাঙ্গীর আলম জানান, আবহাওয়া অনূকুলে থাকায় পাটের আবাদ ভাল হয়েছে।সরকার পাটচাষিদেরও প্রণোদনা দিচ্ছে যাতে নতুন জাতের পাটের চাষাবাদ বাড়ে। রবি-১ পাটের নতুন জাত, এরজন্য প্রণোদনা রয়েছে। পাটের দাম আপাতত কিছুটা কম হলেও খুব দ্রæত সময়ে দাম বেড়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি। দাম বাড়লে কৃষক লাভবান হবে এবং ভবিষ্যতে উপজেলায় পাট চাষির সংখ্যা বাড়বে বলে দাবি করেন।
Leave a Reply