নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরায় ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তিকৃত রোগীর তথ্য গোপন থেকে যাচ্ছে। এছাড়া অনেকেই ডেঙ্গু পরীক্ষা না করেই জ্বরের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের একটি সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিদিনের ডেঙ্গু রোগীর প্রতিবেদন পর্যালোচনায় জানা যায়, জেলায় ১ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর গড় সংখ্যা ছিল শুণ্য দশমিক ৭১ জন। আগষ্ট মাসে প্রতিদিন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দাড়ায় ৭ দশমিক ৫ জন। সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৭ দিনে সেই সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে গড় ১২ দশমিক ৪৭ জন। গত ২৪ ঘন্টায় সাতক্ষীরায় নতুন করে আরো ২৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এনিয়ে এ মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দুইশত অতিক্রম করেছে। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৫৫ জন। সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে ৪৮৩ জন। উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্রে রেফার্ড করা হয়েছে ৪২ জন। তবে এ পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা গতকাল রোববার ৭ জনের কথা উল্লেখ করা হলেও আজ বলা হয়েছে ৬ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের প্রতিদিনের ডেঙ্গু রোগীর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে জানা যায়, গত ১ জানুয়ারী ২০২৩ থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ৭ মাসে জেলায় ডেঙ্গ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ১৪৯ জন। এসময়ে কেউ মারা যায়নি। আগস্ট মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২৫ জন। এ মাসে মৃত্যু হয় ৪ জনের। সেপ্টেম্বর মাসের গত ১৭ দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২১২ জন। মারা গেছেন ২ জন।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, প্রতিদিন বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি সম্পর্কে যে তথ্য প্রেরণ করা হয় তার ভিত্তিতে জেলার প্রতিবেদন তৈরী করা হয়। কিন্তু অধিকাংশ বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে কোন তথ্য পাঠায় না। এছাড়া অনেকেই জ্বরের চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ডেঙ্গুর পরীক্ষা দিলেও করছেন না।
ফলে মোট আক্রান্ত সংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন গত রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) তালা হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়। কিন্তু এব্যাপারে সেখান থেকে কোন লিখিত প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। এর আগে সাতক্ষীরার একটি বেসরকারী হাসপাতালে একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কিন্তু হাসপাতাল কতৃপক্ষ বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে তাদের সাথে বারবার যোগাযোগ করার একপর্যায়ে তারা মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে। এসব কারনে ডেঙ্গু পরিস্থিতির প্রকৃত চিত্র না পাওয়ার কথা তিনি স্বীকার করেন।
Leave a Reply