তুহিন হোসেন: সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের হাতে-হাতে শতশত গাছের চারা তুলে দিচ্ছেন নব্বই দশকের ছাত্রনেতা, হাসিমুখ-সেঞ্চুরি একাডেমির পরিচালক ও গ্রিন এনভায়র্নমেন্ট মুভমেন্টের সভাপতি এজাজ আহমেদ স্বপন।
রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) তিনি সদর উপজেলার ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর সম্মিলিত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেন গাছের চারা। এর আগে সাতক্ষীরা প্রি-ক্যাডেট স্কুলে তিনি গাছের চারা বিতরণ করেন। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার সাত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে নিজ খরচে তিনি শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন ফলজ, বনজ ও ভেষজ গাছের চারা। গাছের চারা বিতরণ ও রোপন করে তিনি বৃক্ষরোপন আন্দোলনে সাড়া ফেলেছেন। জেলার সাংবাদিকদের মাঝেও তিনি সহস্রাধিক গাছের চারা বিতরণ করেছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে গাছের চারা রোপনও করেন তিনি।
এর আগে হাসিমুখ, সেঞ্চুরী-সাতক্ষীরা পরিচালক এবং জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন আশাশুনি উপজেলার হাজিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গাছের চারা রোপণ ও উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করেন। এছাড়া দুই শতাধিক সেলুন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, সাতক্ষীরায় মুজিব শতবর্ষে বিনামূল্যে এক লাখ বৃক্ষরোপন ও করোনাকালে এক লাখ দরিদ্র অসহায় মানুষের মাঝে সবজি বিতরণ করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, মুজিব শতবর্ষে তাঁর টার্গেট বিনামূল্যে লক্ষাধিক গাছের চারা রোপন ও বিতরণ। এ উপলক্ষে প্রতিদিন হাজারো ফলজ ও বনজ গাছের চারা নিয়ে হাজির হচ্ছেন কোন না কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। বিতরণকৃত গাছের মধ্যে রয়েছে আম, মেহগনি, অর্জুন, বহেরা ও জারুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল গাছ।
সাতক্ষীরার বাইরেও তিনি রাজধানী ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, নাটোরসহ বিভিন্ন জেলায় নিজ খরচে ট্রাকের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন প্রায় ৪০ হাজার গাছের চারা। সাতক্ষীরায় উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে সড়ক ও নদীর ধারে, গ্রামীন রাস্তার পাশে, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, ক্লাব, সমিতিসহ সামাজিক-সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের আঙ্গিনায় রোপন করছেন ফলজ, বনজ, ওষধী ও শোভাবর্ধনকারী গাছ।
জেলার বিভিন্ন নার্সারি থেকে এসব গাছের চারা কিনে নিজ খরচে পরিবহনের মাধ্যমে পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। জেলায় ইতোমধ্যে ২০ হাজার এবং জেলার বাইরে ৪০ হাজার গাছের চারা পৌঁছে দিয়েছেন। গাছের চারা বিতরণ অব্যাহত আছে। গাছের চারা বিতরণ ও রোপনের মাধ্যমে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে চান তিনি। এজন্য যেখানে গাছ লাগানোর উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে সেখানেই তিনি পৌঁছে দিচ্ছেন গাছের চারা।
এছাড়া করোনাকালে এক লক্ষ পরিবারের মাঝে সাতক্ষীরার এজাজ আহমেদ স্বপন বিলিয়েছেন টাটকা শাক-সবজি। করোনাকালে দরিদ্র মানুষকে সহযোগিতা করতে তিন মাসের অধিক সময় ধরে দৈনিক প্রায় এক হাজার দরিদ্র মানুষকে প্রতিদিন বিনামূলে সবজি বিতরণ করছেন। তার প্রতিষ্ঠান হাসিমুখ-সেঞ্চুরি একাডেমির মাধ্যমে জেলায় এভাবে এক লক্ষ দরিদ্র অসহায় মানুষকে বিনামূল্যে সবজি বিতরণ করে সর্বমহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে এজাজ আহমেদ স্বপন জানান, ২০০০ সালে বন্যায় সেঞ্চুরি একাডেমির ব্যানারে তিনি রুটি বানানো কর্মসূচি চালু করেন। সেখান থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তরা রুটি নিয়ে যেতেন। একই সময় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফ্রি কোচিং, বিনামূল্যে খাতা-কলম বিতরণ ও পরীক্ষার ফিস প্রদান করতেন। সে সময়ের কার্যক্রম সাতক্ষীরাবাসীর হৃদয় আকর্ষণ করেছিল। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে করোনাকালে প্রতিদিন সহস্রাধিক মানুষকে দিয়েছেন তাজা শাক-সবজি। প্রান্তিক কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি শাক-সবজি ক্রয় করে তা বিলিয়ে দিয়েছেন মানুষের মাঝে। এক লক্ষ পরিবারের মাঝে বিনামূল্যের এই সবজি বিতরণ করেছিলেন তিনি। স্বপন আরও জানান, মানুষের প্রয়োজনে পাশে দাঁড়ানোর নামই মানবিকতা। মানুষের যেকোনো দুর্যোগে পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
Leave a Reply