ডুমুরিয়া প্রতিনিধি: খুলনার ডুমুরিয়ায় ইউপি সদস্যকে লাঞ্চিত এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের উপর অত্যাচার, হুমকি-ধামকি, গালিগালাজ করা এবং রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে না দেয়ার হুমকির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। শুক্রবার বেলা ১১ টায় উপজেলার মাগুরখালি ইউনিয়নের গজালিয়া আঞ্চলিক সার্বজনীন দূর্গা মন্দির প্রাঙ্গনে এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভূক্তভোগী সাধারণ মানুষ এ মানববন্ধন কর্মসূচী ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার দু’শতাধিক নারি পুরুষ এতে অংশ নেয়। মাগুরখালী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি বিমল কৃষ্ণ সানার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বিক্ষুদ্ধ বক্তারা বলেন, গত বোরো মৌসুমে ধান চাষাবাদের সময় খোরের আবাদ, গজালিয়াসহ কয়েকটি বিলে স্লুইস গেট দিয়ে চিলা নদীতে থেকে লবন পানি তোলাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় প্রভাবশালী ইউনুস আলী সরদার গংরা রোপা বোরোধান চাষ ব্যাহত ও কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে। এ নিয়ে তাদের সাথে এলাকার সাধারণ মানুষের ব্যাপক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যদিও প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিলে লবন পানি উত্তোলন বন্ধ করা হলেও এ নিয়ে পক্ষ বিপক্ষ গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিলো। তারই জেরে গত ১৪ আগস্ট ভুক্তভোগী স্হানীয় ইউপি সদস্য বিবেকানন্দ বৈরাগী নিজ বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল যোগে মাদারতলা বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় তিনি এলাকার চিহ্নত ত্রাস, ভূমিদস্যু, চাঁদাবাজ বহুল আলোচিত ইউনুস সরদারের বাড়ির সামনে পৌঁছালে তার স্ত্রী রুমানা সুলতানা (৪২) ইউপি সদস্যের গতিরোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, টানাহেঁচড়া করে মারপিট করতে উদ্যাত হওয়াসহ তাকে চরমভাবে লাঞ্চিত ও ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছে থাকা একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। এহেন ন্যাক্কারজনক ঘটনার প্রতিকার চেয়ে ঘটনার দিন ভুক্তভোগী ইউপি সদস্য বাদী হয়ে রুমানা সুলতানার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং ডুমুরিয়া থানা পুলিশ বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিবাদ কর্মসূচীর আয়োজন করে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবাদ সভায় বক্তাগণ বলেন, ইউনুস সরদার ও তার সহোদর বাবলু সরদার, লাভলু সরদারসহ পরিবারের লোকজনের হাতে ইউপি সদস্যসহ বিভিন্ন সময়ে এলাকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিপ্লব মন্ডল, পরিতোষ মন্ডল, কাজল বৈরাগী, বলরাম বৈরাগী, কোমল বৈরাগী, দিপক সরকার, অজিত রায় এর উপর হামলা, হুমকি-ধামকি এবং জাত তুলে গালিগালাজের শিকার হয়েছে। এ নিয়ে অভিযোগ করেও সুবিচার পাননি তারা। যে কারণে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি বিনষ্টের কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে বলে মনে করেন তারা। এ সব ঘটনার ন্যায় বিচার দাবী এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি পূনরুদ্ধার না হলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকবেন বলে সভায় ঘোষণা দেন তারা। সভায় বক্তব্য দেন, সুজিত কুমার মন্ডল, এরশাদ আলি সরদার, চপলা মন্ডল, বিকাশ বৈরাগী, পঞ্চানন বৈদ্য, মিন্টু সরদার, দয়াল মন্ডল, প্রতিমা বৈরাগী, শিল্পী রায়, শফিকুল ইসলাম সরদার, সীমা সানা, বন্ধনা গোলদার প্রমুখ।
Leave a Reply