বেনাপোল প্রতিনিধি: বাবা আমাকে ২০টাকা ইজিবাইক ভাড়া দেন স্কুলে যাব। ২০ টাকা পেয়ে মহা খুশিতে বাবা ও মাকে সালাম দিয়ে হাসি খুশিমাখা মুখ নিয়ে স্কুলের উদ্দেশ্য রওনা হয় আদরের কন্যা শরিফা। ১০ মিনিট পর বাবা মায়ের কাছে খবর আসে শরীফা আর নেই। সড়কে নিভে গেছে জীবন প্রদীপ। বাবা মায়ের এ করুন আর্তিতে এলাকার বাতাস যেন ভারী হয়ে উঠেছে। বুধবার সকালে যশোরের বেনাপোল মহাসড়কের বড় আচড়া চেকপোস্ট স্কুলগেটের সামনে রপ্তানিকৃত পন্যবাহী ট্রাকের চাপায় পিষ্ট হয়ে আনিকা আক্তার শরিফা নিহত হয়েছে। নিহত আনিকা বড়আঁচড়া গ্রামের আলমগীর হোসেনের মেয়ে ও বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। পুলিশ অভিয়ুক্ত ট্রাক চালক রুবেল হোসেনকে আটক করেছে। সে রাজশাহীর পুটুয়া সেনবাদ এলাকার আব্দুল হালিমের ছেলে।
পুলিশ ও স্বজনেরা জানায়, স্কুলে যাওয়ার পথে বিপরিতদিক থেকে আসা রপ্তানিবাহি একটি পন্যবাহী ট্রাক জোরে ধাক্কা দেয় শরীফাকে। ছিটকে পড়ে শরিফা। তার পায়ের উপরদিয়ে ট্রাকের চাকা উঠে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা শরিফাকে উদ্ধার করে যশোর হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায় সে। এ ঘটনায় নিহতের ন্যায় বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। নিহতের বাবা ও সহপাঠি শিক্ষার্থীরা চান দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নিরাপদ সড়ক। বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি কামাল হোসেন ভূইয়া জানান, স্কুলে যাওয়ার পথে একটি ট্রাকের ধাক্কায় ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। ট্রাক চালকে আটক করা হয়েছে। জব্দ করা হয়েছে ট্রাকটি। মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
বেনাপোল মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা গার্লস স্কুল ও কাষ্টমস্ হাউজের সামনের এলাকায় মহাসড়কের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। বেনাপোল মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক রমজান আলী নিহত স্কুল ছাত্রীর পরিবারের ক্ষতিপূরণ, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, রাস্তা সংস্কার ও নিরাপদ সড়কের দাবি জানান।
Leave a Reply