শংকর ঘোষ, ডুমুরিয়া: পরিকল্পিতভাবে স্লুইজ গেইট খুলে মাছ ধরা এবং চিংড়ি চাষের জন্য লবণাক্ত পানি ঢোকানোর কারণে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিল ডাকাতিয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে মারা যাচ্ছে কয়েক হাজার বিঘার ধান। ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্য কৃষক। বর্তমানে ক্ষতিগ্রস্ত স্ব-স্ব কৃষক পরিবারে উঠেছে কান্নার রোল। এ বিষয়ে সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি দোষারোপ করলেন প্উাবোর কর্মকর্তাদের এবং পাউবোর কর্মকর্তা দায়ী করলেন স্থানীয় জনগণকে।দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাদ্য উৎপাদনের অন্যতম ভান্ডার হচ্ছে বিল ডাকাতিয়া। দীর্ঘদিনের ফসল অজন্মা ও স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে ৯০ এর দশকে জনগণ ওয়াপদার ভেড়ি বাঁধ কেটে জোয়ার ভাটা চালু করে। উল্লেখযোগ্য পরিমাণ উঁচু হলে বিলে কৃষকেরা পকেট ঘের তৈরি করে মাছ ও ধান চাষ করে আসছিল। উত্তর ডুমুরিয়ার কৃষ্ণনগর গ্রামের ধান চাষী বিদ্যুৎ মন্ডল, তারক চন্দ্র মন্ডল,শতদল ঘরামি,অলোক সরকার,বিদ্যুৎ ঘরামি,সুনিল মন্ডল ও রবিন সরকারসহ অনেকেই বলেন, শৈলমারী স্লুইজ গেইট ভায়া শলুয়া,আমভিটা ও থুকড়া গেইট দিয়ে আশ্বিন-কার্তিক মাসে লবণ পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি মাছ চাষ ও জাল দিয়ে মাছ ধরে একটি মহল।এরফলে বিল ডাকাতিয়ায় ব্যাপকভাবে লবণ পানি প্রবেশ করে। একদিকে শলুয়া গেটের কপাট ভেঙে গেছে অন্যদিকে আমভিটা এবং থুকড়া গেইটে কপাট না থাকার কারণে অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে।বিগতদিনে উঠানো পানির লবণাক্ততা তীব্র হওয়ায় বর্তমানে ধানের গাছ ব্যাপকভাবে মারা যাচ্ছে।ধান উৎপাদনে ব্যর্থ হয়ে ক্ষোভে দুঃখে ক্ষেত ছেড়ে দিয়েছে অসংখ্য কৃষক।ভুক্তভোগী প্রদীপ জোয়ার্দার ও রাজু সরকারের মত অসংখ্য কৃষক লবণাক্ততায় ধান গাছ মারা যাওয়ায় আশা ছেড়ে দিয়ে ক্ষেত পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। শুক্রবার সকালে এ প্রতিবেদক সরেজমিনে গেলে উঠে আসে এসব করুণ চিত্র।২নং রঘুনাথপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনোজীৎ বালা বলেন,বিষয়টি এলাকার সবাই জানে আমি এ বিষয়ে কোন বক্তব্য দেবনা।কারা পানি উঠায় পানি উন্নয়নবোর্ড তা ভালোভাবে জানেন।ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বিষয়টি অবগত হয়ে বলেন, বিষয়টি আমি দেখছি।সাবেক মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি বলেন,বিষয়টি আমার জানা আছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডকে আমি বিষয়টি নিয়ে বার বার বলেছি কিন্তু তারা এ বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে না।চলতি বছরে কৃষকরা যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা পূরণ হবার নয়। এগুলো চেয়ারম্যান মেম্বারদের দেখা উচিত।এমপির একার পক্ষে কতটা দেখা সম্ভব।আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি নিয়ে বলছি।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের বলেন,এসবের জন্য স্থানীয় জনগণ দায়ী।তারা কেন লবন পানি উঠায়(?) আমাদের বোধগম্য নয়। ইতোমধ্যে শলুয়া গেইটে আমরা কপাট লাগিয়ে দিয়েছি। ডবিøউ এম এ’র সদস্যরাও ঠিকমত কাজ করেনা। সাবেক মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপির বার বার তাকিদের বিষয়টি জানালে তিনি বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন,অনেকেই অনেক কথা বলেন। কিন্তু সবকিছু কি আমাদের দেখা সম্ভব? তবুও বিষয়টি দেখছি কি করা যায়।
Leave a Reply