ডুমুরিয়া উপজেলা প্রতিনিধি: মনের কাল্পনিক স্বপ্নটাকে বাস্তবে পরিণত করে দেখালেন খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের মেধাবি তরুণ মিন্টু সরদার(১৮) তার হাতে তৈরি বাংলাদেশ বিমান’র রুপধারী ওই ছোট্ট বিমানটির উড়িয়ে দেখতে প্রতিদিন বেশ-কিছু উৎসুখ মানুষ তাদের বাড়িতে ভিড় জমাচ্ছেন। তাহারি অংশবিশেষ ২৮শে ডিসেম্বর বিকেলে উপস্থিত হয়েছিলেন খুলনা-৫ (ডুমুরিয়া ফুলতলা) আসনের সংসদ সদস্য সাবেক মৎস্য মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান, অফিসার ইনচার্জ সেখ কনি মিয়া , উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শারমিন পারভীন রুমী, শোভনা ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত কুমার বৈদ্য সহ গণ্যমান্য এলাকার ব্যক্তিবর্গ সহ আরো অনেকে। মিন্টু সরদার এর তৈরিকৃত বিমানটি তারা সরেজমিনে দেখে অনেক খুশি হন, এই বিমান উড়তে দেখতে আসা উৎসাহি জনতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের মধ্যপাড়া’র দিনমজুর-কৃষক দেবপ্রসাদ মন্ডলের বড় ছেলে মিন্টু, খুলনার ব্রজলাল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ম্যাথমেটিক্সে অনার্স ১ম-বর্ষের শিক্ষার্থী। মিন্টু ৭ম শ্রেণিতে পড়াকালে মাটি কাাঁটার গাড়ি ও ৮ম শ্রেণিতে পানি সেচের পাম্প তৈরি করে ডুমুরিয়া উপজেলার বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেয়। তারপর বিজ্ঞান মনস্ক মিন্টু কলেজে পড়াকালে টিভি-তে বিমান তৈরির একটা খবর দেখে তারও বিমান তৈরির ইচ্ছা জাগে। কিন্তু সংসারে টাকার তীব্র অভাবের পরও মিন্টু থেমে যাননি। বরং বাবা-মা ও বন্ধু-বান্ধবের কাছথেকে ধার-দেনা করে তার বিমান তৈরির চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইন্টারনেট ঘেটে-ঘেটে সে ১ম বার ককসিট দিয়ে বিমানের আদল তৈরি করলেও উড়াতে পারেনি। তবে সেখানে না থেমে ২য় বারের চেষ্টায় বিমান আকাশে উড়লেও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হন। শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর স্বপ্নবাজ মিন্টু তার এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান-সহ বহু মানুষ সামনে নিজের তৈরি বিমানটি সফল ভাবে বেশ কয়েক মিনিট ধরে আকাশে উড়িয়ে দেখান। মিন্টুর ককসিটে তৈরি মূল বিমানটির দৈর্ঘ ৬৬ ইি । আর দু’পাশের ডানা ৬৫ ইি লম্বা। মোট ওজন ১’শ ৬০ গ্রাম। শোভনা গ্রামের অজপাড়া-গায়ের হত-দরিদ্র মিন্টুদের ৭ জনের একান্নভুক্ত পরিবার। একটি মাত্র মাটির দেওয়ালে টিনের ছাউনি দেওয়া ঘরে ঠাকুরদা-ঠাকুরমা, বাবা-মা, ছোট কাকু ও মিন্টুরা ২ ভাই মিলে বসবাস করেন। এতো অভাবের মধ্যে বাস করা ছেলেটির বিমান তৈরির মতো বড় স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলার বিষয়টি এখন এলাকাবাসীর মুখে মুখে আলোচনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে উদ্ভাবক মিন্টু সরদার বলেন, এই বিমানে প্রতিটি ৯৪০ গ্রাম ওজনের ২টি ব্রাশলেস ড্রন মটর ব্যবহার করা হয়েছে। রিচার্জেবল লিপো ব্যাটারীর শক্তিতে চালিত বিমানটি রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে গতি-ওঠা-নামা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বর্তমানে এই বিমনটি ৩ কেজি ওজন বহন করতে পারে। বিমানের জন্য এ পর্যন্ত ২৩ হাজার টাকা খরচ করেছি। খুব শিঘ্রই ককসিটের পরিবর্তে ডেফরণ বোর্ড দিয়ে বিমানের বডি তৈরি করবো। আমার আকাঙ্খা টাকার জোগাড় হলে বিমানটিতে ২-৩ জন মানুষ নিয়ে চলাচলের উপযোগি করে গড়ে তুলবো। প্রতিবেশি গৌতম বিশ্বাস বলেন, মিন্টুর তৈরি বিমান উড়তে দেখে গ্রামের সকলেই খুব খুঁশি।
সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ এমপি, বলেন, অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী মিন্টু একটা বড় অবিষ্কার করে ডুমুরিয়ার উপজেলার মুখ উজ্জল করেছে। আমি চাই, আরও বড় কিছু করার জন্য ছেলেটিকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠোপোসকতা দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানাবো। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরীফ আসিফ রহমান বলেন, বিমান বানানো সহজ বিষয় না। আসলে ছেলেটি একটি অসাধারণ কাজ করেছে। আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি আমাদের তরফ থেকে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা দেওয়া হবে
Leave a Reply