সদর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরা জেলার সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউনিয়নে গড়ে উঠেছে জে,বি ব্রিকস নামে অবৈধ ইটভাটা। কোন নিয়মনীতি না মেনে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ব্যবহার হচ্ছে ফসলি জমির মাটি। বসতির পাশে গড়ে উঠা এই ইটভাটার বিষাক্ত ধোঁয়ায় মানবদেহে বাড়ছে নানা রকম রোগ ব্যাধি, বিপর্যয় ঘটছে পরিবেশের। সরকারি বিধি নিষেধ সত্বেও জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ফসলি জমির ক্ষতি করে সংগ্রহ করা হচ্ছে ইট তৈরি করার মাটি। ইট ভাটায় কয়লার পরিবর্তে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
উল্লেখযোগ্য এই জে,বি ব্রিকসের নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে নতুন করে তিন ফসলি জমিতে ইটভাটা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
বৈধ ইটভাটা মালিকরা বলেন, কয়লার দাম ও জ্বালানি তেল এর বৃদ্ধি হওয়ায়, কয়লা বেশি দামে কিনতে হচ্ছে এবং সব কিছুর খরচ বেড়েছে। এতে ইট উৎপাদন করতেও অনেক বেশি ব্যয় হচ্ছে, অথচ সেই তুলনায় ইট বিক্রয় করে লাভবান হচ্ছি না। কারণ অবৈধ ইটভাটা মালিকরা তাদের ইচ্ছে মতো সরকারি নিয়মনীতি না মেনে খড়ি, লাকড়ি ব্যবহার করে ও কোন রকমের লাইসেন্স না করেই ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছে। এতে করে তারা স্বল্পমূল্যে ইট উৎপাদন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে। কিন্তু আমরা ব্যয়বহুল খরচ করে ইট উৎপাদন করেও সঠিক দামে বিক্রয় করতে পারছি না।
এ বিষয়ে জে,বি ব্রিকসের মেনেজার হুমায়ন কবির বলেন, আমরা কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর জন্য কিছুটা কমে ইট বিক্রি করতে পারি। কিছু করার নাই, ব্যবসা এখন প্রতিযোগিতার হয়ে গেছে। কয়লার দাম বেশি হওয়ায় কাঠ দিয়েই ইট পোড়াতে হচ্ছে। এদিকে অনুমোদনহীন এসব ইটভাটার কারণে কৃষি সমৃদ্ধ সাতক্ষীরা জেলায় লিচু, আম ও ধানের ফলন কমতে শুরু করছে ৷ তাই মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই পদক্ষেপ নেয়া দরকার বলেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা। তারা আরও বলেন, কৃষি জমির উপরের মাটি কেটে নিলে তা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে ২০/৩০ বছর সময় লেগে যায়। স্কুল কলেজ বসতবাড়ীর এক কিলামিটারের মধ্যে ভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও তা মানছে না এই জে,বি ব্রিকস কতৃপক্ষ। ফলে ভাটা থেকে নির্গত বিষাক্ত ধোঁয়ায় দেখা দেয় নানা রোগ ব্যাধি। তাই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে র্দীঘমেয়াদী ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে প্রশাসনের কিছু দুর্নিতি বাজ কর্মকর্তা কে ম্যানেজ করেই দিনের পর দিন চলছে এসব অবৈধ ইট ভাটা। এলাকাবাসীর অভিযোগ নদী, ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, স্বাস্থ্য ও মানুষের বসতির ক্ষতি করেই চলছে অবৈধ ইট ভাটাগুলো। এসব ভাটাতে পরিবেশ, ফায়ার, ট্রেড, বিএসটিআইসহ কোন ছাড়পত্র নাই, কিন্তু আইনের তোয়াক্কা না করেই ভাটা চালিয়ে যাচ্ছে।এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদফতরের উপ পরিচালক শরিফুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। এবং ভাটা মালিক এর কাছে ফোন দিলে তিনি মোবাইল ধরেননি।
Leave a Reply