1. nokhatronews24@gmail.com : ajkarsatkhiradarpan darpan : ajkarsatkhiradarpan darpan
  2. install@wpdevelop.org : sk ferdous :
শ্যামনগরের নকিপুর জমিদার বাড়ি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে - আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ
রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ন
১৩ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
📰সদরের সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের ঘুসের টাকা গ্রহনকারী মহসিনের ক্ষমতার উৎসাহ কোথায়? (১ম পর্ব)📰স্বামী-সন্তানকে ফেলে পরকীয়ায় রেহেনা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ📰পাইকগাছায় ইয়াবাসহ যুবক আটক📰পাইকগাছায় বিভিন্ন পূজামন্ডপে বিএনপির সিসি ক্যামেরার প্রদান📰শ্যামনগরের ৭০টি পূজা মন্দিরে বিএনপির উপহার হস্তান্তর📰সাগরে লঘুচাপ, তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত📰সাতক্ষীরায় “বিশ্ব গণমানুষের সেবা ফাউন্ডেশন”এর জেলা কমিটি অনুমোদন📰পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে সাতক্ষীরা জামায়াতের বিক্ষোভ📰কালিগঞ্জে পুকুরে ডুবে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু📰বিএনপি সবসময় জনগণের অধিকার আদায়ের পক্ষে কাজ করে আসছে- সাবেক ছাত্রনেতা রফিক

শ্যামনগরের নকিপুর জমিদার বাড়ি কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : রবিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২২
  • ৪৭ সংবাদটি পড়া হয়েছে

এস এম ফিরোজ হোসেন শ্যামনগর থেকে: সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ইতিহাসের ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বহু বছরের পুরাতন শ্যামনগরে নকিপুর জমিদার বাড়ি। জরাজীর্ণ হলেও কালের সাক্ষী এই বাড়িটি দেখতে ভিড় করেন পর্যটকরা। জমিদার হরিচরণ রায় চৌধুরী সাতক্ষীরা জেলা শহর থেকে প্রায় ৭২ কিলোমিটার দক্ষিণে শ্যামনগর উপজেলার নকিপুরে ৪১ কক্ষের তিনতলা বিশিষ্ট এল প্যার্টানের এই বাড়িটি নির্মাণ করেছিলেন। এ বাড়িতে এখন আর জমিদারের কেউ থাকে না। শ্যামনগর উপজেলা সদর থেকে নওয়াবেকি যেতে বাম হাতে পড়ে এই বাড়িটি। জমিদার বাড়ির পশ্চিমে রাস্তা পেরিয়ে অবস্থিত নকীপুর জামে মসজিদ।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, জমিদার রায় বাহাদুর হরিচরণ রায় চৌধুরীর মায়ের নাম ছিল নিস্তারিণী। শোনা যায় তিনি স্বপ্নযোগে পেতেন সম্পদ। এই পরিবারের বিষয়-সম্পত্তির পরিমাণ ছিল দুই লাখ একর। এ সমস্ত জমির খাজনা আদায় করতে ভারতের হিঙ্গলগঞ্জ আর কালিগঞ্জ ও শ্যামনগরে ওই সময় ৭০০ কাচারি ছিল। শ্যামনগর থানা সদরের দুই কিলোমিটার পূর্বে জমিদার হরিচরণ রায়চৌধুরীর বাড়িটি ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। বিশাল আকারের তিনতলার ইমারতটি ভাঙাচোরা অবস্থায় এখন কোনোরকমে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। রাজা প্রতাপাদিত্যের পরে হরিচরণ রায় ছিলেন শ্যামনগর অঞ্চলের প্রভাবশালী ও বিত্তশালী জমিদার। তার উদ্যোগে শ্যামনগরে তথা সমগ্র সাতক্ষীরায় অনেক জনহিতকর কাজ হয়েছিল। অনেক জমিদারের মতো হরিচরণ রায় শুধু সম্পদ ও বিলাসে মত্ত ছিলেন না। রাস্তাঘাট, খাল খনন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল নকিপুর মাইনর স্কুলটি। যেটি বর্তমানে নকিপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় নামে খ্যাত। জমিদার হরিচরণ ১৯১৫ সালে মারা যান। তারপর তার জমিদারীর ভার পড়ে দুই ছেলের ওপর। তারাও বজায় রাখেন বংশের আভিজাত্য। জমিদার বংশের লোকজন ১৯৭১ সালে সবাই চলে যান ভারতে। তারপর থেকে ওই স্থানটি পরিণত হয়েছে ভূতুড়ে বাড়িতে। জমিদারবাড়ির সব জিনিসপত্র চলে গেছে চোর ও লুটেরাদের দখলে। তবে পরিত্যক্ত জমিদারবাড়ি, এর পাশের দুর্গম-কক্ষ, নহবতখানা, শিবমন্দির, জলাশয় ইত্যাদি দেখে সহজে অনুমান করা যায় এর অতীত জৌলুস। তবে ১৯৩৭ ও ১৯৪৯ সালে দুই ছেলে মারা যান। এরপর ১৯৫০ সালে জমিদারী প্রথার অবসান ঘটে। তখন জমিদারের বংশধর তাদের সম্পত্তি রেখে ভারতে পাড়ি জামান। সেই থেকে পড়ে আছে জমিদার বাড়িটি। বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, হাতেগোনা কয়েকটি পরিত্যক্ত কক্ষেই ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে একজন মহিলা। অন্যদিকে দৃষ্টিনন্দন এল প্যার্টানের কোনো অস্তিত্বই নেই। ভবনের যত্রতত্র বিভিন্ন প্রজাতির গাছ জন্মে এর ক্ষয় ত্বরান্বিত করছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় যেন কয়েকটি বড় গাছ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আসলে ভবনের ওপর বলেই গাছগুলোকে বেশি উঁচু মনে হয়। জমিদার বাড়ির দক্ষিণ অংশের ভবন ইতোমধ্যে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখন চলছে মধ্যভাগের ভাঙন। এলাকার অনেকেই আক্ষেপ করে বলেন, ভবনটি ভেঙে ওই জায়গা স্বার্থান্বেষী দখলের পাঁয়তারা করছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কখনো এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। নজর কাড়া নির্মাণ শৈলীতে গড়ে তোলা নকিপুর জমিদার বাড়িটির স্মৃতিচিহ্ন রক্ষায় কোনো পক্ষকেই উদ্যোগী হতে দেখা যায়নি। সংস্কার আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বাড়িটি ভূতের বাড়িতে পরিণত হয়েছে। বাড়ির দেওয়ালে জন্ম নিয়েছে শতশত বটবৃক্ষ। নোনা ধরে ইটের দেওয়াল খসে খসে পড়ছে। ইতিহাসের জীবন্ত উপাদান এ বাড়িটি রক্ষায় নেওয়া হচ্ছে না কোনো উদ্যোগ। এভাবে নকিপুর জমিদার বাড়িটি ইতিহাস ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে।
অবসরপ্রপ্ত প্রধান শিক্ষক চারুচন্দ্র মন্ডলের লেখা একটি বই থেকে জানা যায়, জমিদার রায় বাহাদুর হরিচরণ চৌধুরীর বাড়িটি ছিল সাড়ে তিন বিঘা জমির উপরে। যার বাউন্ডারিটি ছিল প্রায় দেড় হাত চওড়া প্রাচীর দ্বারা সীমাবদ্ধ। সদর পথে ছিল একটি বড় গেট বা সিংহদ্বার। সম্মুখে ছিল একটি শান বাঁধানো বড় পুকুর। দেড় শতাধিককাল পূর্বে খননকৃত এই পুকুরটিতে সারাবছরই পানি থাকে এবং গ্রীষ্মের দিনে প্রচন্ড তাপদাহে তা শুকায় না। পুকুরঘাটের বাম পাশে ৩৬ ইঞ্চি সিঁড়ি বিশিষ্ট দ্বিতল নহবত খানা। আটটি স্তম্ব¢ বিশিষ্ট এই নহবত খানার ধ্বংসাবশেষটি এখনো প্রায় অক্ষত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থেকে কালের সাক্ষী বহন করছে। বাগান বাড়িসহ মোট বার বিঘা জমির উপর জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত ছিল। বাড়িটি ছিল সত্তর গজ লম্বা, তিন তলা বিশিষ্ট ভবন। সদর দরজা দিয়ে ঢুকতেই সম্মুখে সিঁড়ির ঘর। নিচের তলায় অফিস ও নানা দেবদেবীর পূজার ঘর ছিল। এছাড়া নিচের তলায় ১৭টি এবং উপরের তলায় ৫টি কক্ষ ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। ছোট, বড়, মাঝারি সব রকমের কক্ষ ছিল। বিল্ডিংটির দৈর্ঘ্য ২১০ ফুট, প্রস্থ’ ৩৭ ফুট, ৬৪ ফুটের মাথায় এল প্যার্টানের বাড়ি। প্রথমবার ঢুকলে কোন দিকে বহির্গমন পথ তা বোঝা বেশ কষ্টদায়ক ছিল। চন্দন কাঠের খাট-পালঙ্ক, শাল, সেগুন, লৌহ কাষ্ঠের দরজা-জানালা, লোহার কড়ি, ১০ ইঞ্চি পুরু চুন-সুরকির ছাদ, ভেতরে কক্ষে কক্ষে গদি তোষক, কার্পেট বিছানো মেঝে, এক কথায় জমিদারী পরিবেশ। বাড়িতে ঢুকতে ৪টি গেট ছিল। গেট ৪টি ছিল ২০ ফুট অন্তর। জমিদার বাড়ির দক্ষিণে একটি বড় পুকুর ছিল। জমিদার পরিবার এখান থেকে স্ব-পরিবারে ভারতে চলে যাওয়ার পর বর্তমান সে পুকুরটি আর নেই। নেই পূর্বের মতো সৌন্দর্য। তবে তার দক্ষিণে এখনো একটি পুকুর বিদ্যমান, যার শান বাঁধানো ঘাটের ধ্বংসাবশেষটির দুই পাশে দুটি শিব মন্দির। দক্ষিণবঙ্গের প্রতাপশালী শাসক রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী ছিল সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের ধুমঘাট এলাকায়। তাঁর রাজত্বের প্রায় ২৫০ বছর পরে জমিদার রায় বাহাদুর হরিচরণ চৌধুরী শ্যামনগরের নকিপুরে একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন। শ্যামনগরে সদ্য জাতীয়করণকৃত নকিপুর এইচ.সি (হরিচরণ চৌধুরী) পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি তিনিই প্রতিষ্ঠি করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তাঁর অনিন্দ্য সুন্দর বসতবাড়িটি যা দর্শনীয় ঐতিহাসিক স্থাপত্য হিসেবে পর্যটকদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে পারতো তা আজ সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :

সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি:

এম এ কাশেম ( এম এ- ক্রিমিনোলজি).....01748159372

alternatetext

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো: তুহিন হোসেন (বি.এ অনার্স,এম.এ)...01729416527

alternatetext

বার্তা সম্পাদক: দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা

সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক :

মো: মিজানুর রহমান ... 01714904807

© All rights reserved © 2020-2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd