মোমিনুর রহমান: জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ইউনিয়ন পরিষদ, থানা পুলিশ ও আদালতে একে একে দেয়া প্রতিপক্ষের মানহানিকর ও হয়রানিমুলোক ১৯টি অভিযোগ এবং মামলায় জর্জরিত হয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন ভাটিয়াল ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও সাতক্ষীরার গর্ব খ্যাতিমান কন্ঠশিল্পী শরিফুজ্জামান সোহাগ।
সোহাগ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এসব মানহানিকর ও হয়রানিমুলোক মিথ্যা মামলা এবং অভিযোগের নেপথ্যে রয়েছেন সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকাড়া গ্রামের মৃত শেখ মঞ্জুরুল হকের ছেলে প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেন (৬৫)। গত তিন বছরে প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেন নিজে এবং তার বাড়ির কর্মচারিদের বাদি এবং স্বাক্ষী বানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরের কন্ঠশিল্পী সোহাগ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক হয়রানি মুলোক মিথ্যা মামলার পাহাড় গড়ে তুলেছেন।
সর্বশেষ বাড়ির কাজের মেয়েকে বাদি করে কন্ঠশিল্পী সোহাগ ও তার ছোটভাই আরিফুজ্জামান সহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মিথ্যা ধর্ষণ মামলা দায়েরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও ঘটিয়েছেন প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেন। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহ বিভিন্ন সংস্থার তদন্তে শেখ ইকবাল হোসেন ও তার পোষ্য কর্মচারিদের দায়েরকৃত এসব মামলা ও অভিযোগ বারবার মিথ্যা প্রমানিত হলেও, এসব , মানহানিকর ও ষড়যন্ত্রমুলোক অভিযোগ ও মামলায় আদালত সহ এক দপ্তর থেকে আরেক দপ্তরে বারবার হাজিরা দিতে গিয়ে তীব্র বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন কন্ঠশিল্পী সোহাগ। ফলে ঠিকমতো গানের জগতে মনোনিবেশ করতেও পারছেননা বরেণ্য এই কন্ঠশিল্পী।
এদিকে বারবার দায়েরকৃত মানহানিকর মিথ্যা মামলা ও অভিযোগে অতিষ্ঠ হয়ে নিজের সম্মান ও অবস্থান বাঁচাতে এবার আইনী লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী সোহাগ। মঙ্গলবার (৫ জুন) কন্ঠশিল্পী সোহাগ বাদি হয়ে ওই প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেন ও তার পোষ্য কর্মচারিদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ দায়ের শেষে কন্ঠশিল্পী সোহাগ গণমাধ্যমকে বলেন, মাত্র তিন শতক জমি নিয়ে গেল কয়েক বছর ধরে প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেনের সাথে আমাদের পারিবারিক বিরোধ চলে আসছে। শেখ ইকবাল হোসেন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও, তা নিয়ে উপজেলাব্যাপী তিনি বেশ সমালোচিত। সে ব্যাপারে প্রশাসনের তদন্ত সাপেক্ষে গত দু’বছর ধরে তার মুক্তিযোদ্ধা ভাতা সহ যাবতীয় সরকারি সুযোগ সুবিধা বন্ধ রয়েছে। কন্ঠশিল্পী সোহাগ আরও বলেন, আমি একজন সঙ্গীতপ্রেমি মানুষ। সবসময় আমাকে গানের জগতে মনোনিবেশ রাখতে হয়। তাছাড়া বছরের বিভিন্ন সময়ে দেশ-বিদেশে আমাকে গানের প্রোগ্রামে যেতে হয়। কেবলমাত্র জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেন নিজে সহ তার পোষ্য গৃহকর্মীদের বাদি ও সাক্ষী বানিয়ে আমি সহ আমার পরিবারের বিরুদ্ধে একে একে ১৯ টি মানহানিকর ও হয়রানিমুলোক মিথ্যা মামলা এবং অভিযোগ দায়ের করেছেন। বর্তমানে আমি ও আমার পরিবার রীতিমতো বিব্রতকর অবস্থায় বসবাস করছি। তাছাড়া এসব মামলা ও অভিযোগে হাজিরা দিতে দিতে আমি ঠিকমতো সঙ্গীতেও মনোনিবেশ করতে পারছিনা। বিব্রতকর এ পরিস্থিতি থেকে আত্মসম্মান বাঁচাতে আইনী লড়াইয়ের প্রথম ধাপ হিসেবে প্রভাবশালী শেখ ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং শীঘ্রই আদালতের দারস্থ হবেন বলেও জানান কন্ঠশিল্পী সোহাগ।
Leave a Reply