জিএম মামুন বিশেষ প্রতিনিধি: চোরাকারবারীদের ভারতীয় দুইটি চোরাই গরু জনতার হাতে আটকের পরে ছাড়িয়ে নিয়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২ টার দিকে কালিগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নে অবস্থিত শিমু রেজা এমপি কলেজের সামনে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, বেলা সাড়ে বারোটার দিকে একটি ইঞ্জিন চালিত টলিতে দুইটা ভারতীয় গরু দেখতে পায় স্থানীয় কয়েকজন। এসময় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত আনিস উদ্দীন গাজীর ছেলে আব্দুল কাদেরকে (৩০),গরুসহ শিমু রেজা এমপি কলেজের সামনে আটক করে।
এসময় স্থানীয়রা বিষয়টি কয়েকজন সাংবাদিককে অভিহিত করে। স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনা স্থলে যেয়ে টলি চালকের কাছে জানতে চাইলে সে ভারতীয় অবৈধ গরু দুটি’র মালিক উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলনের মামা শেখ মহাসিন হোসেনের বলে জানান।
এসময় স্থানীয় সাংবাদিকরা কালিগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম ও থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফাকে চোরাই গরুর বিষয়টি অভিহিত করেন।
পরবর্তীতে শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ০১৭১১৪৫১৮৮৭ নাম্বার দিয়ে ফোন দেন সাংবাদিকদের কাছে। এ সময় তিনি বলেন গরু দুটি তার মামা মহাসিনের। কি কারণে গরু দুটি স্থানীয়রা আটক করেছে জানতে চান তিনি।
এসময় সাংবাদিকরা ভারতীয় অবৈধ গরু বলে তাকে অভিহিত করেন। পরবর্তীতে তিনি বলেন শ্যমনগর উপজেলার পশ্চিম ধুমঘাট এলাকায় তার মামার শেখ ডেইরি ফার্ম নামে একটি গরুর খামার রয়েছে। সেখানে ভারতীয় ও দেশি ৬০-৭০ টি গরু রয়েছে। এছাড়া টলিতে গরু দুটি দেশীয় বলে চ্যালেঞ্জ ছোড়েন তিনি।
পরবর্তীতে ঘটনা স্থলে গিয়ে সাংবাদিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন উপজেলা চেয়ারম্যান। এসময় পুলিশ পৌঁছানোর আগেই প্রভাব খাটিয়ে টলি চালককে ঘটনাস্থল থেকে বের করে দেন তিনি।পরবর্তীতে কালিগঞ্জ ফুলতলা মোড় থেকে বসন্তপুর বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহলদল গরু দুটি আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।
শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন বলেন, আমার মামা মহাসিন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন আমার ফার্ম থেকে পাটকেলঘাটা নিয়ে যাওয়ার পথে দুটো গরু আটক করেছে। আমি বাইরে আছি, তুমি একটু দেখো। সে সময় আমি আটক করা ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করি। একপর্যায়ে আমি সেখানে উপস্থিত হয়। এবং কালীগঞ্জ উপজেলার ইউএনও সাহেবের সাথে কথা বলি। তিনি গরুর গায়ে সিল মারা না থাকলে গরু দুটি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। তাই আমি গরু দুটি ছেড়ে দিয়েছিলাম।
কালীগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার খন্দকার রবিউল ইসলাম বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান কে গরু দুটি কোন দেশের তা শনাক্ত করতে বলি। তাছাড়া বিজিবিকে নির্দেশ দিয়েছি ইন্ডিয়ান গরু হলে আটক করার জন্য।
বিজিবি ১৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, দুটো ইন্ডিয়ান গরু আটক করা হয়েছে। তবে গরু দুটি বাংলাদেশের ও ক্রয়কৃত কাগজপত্র রয়েছে বলে দাবি করছে। আমরা যাচাই বাছাই পূর্বক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
Leave a Reply