বিশেষ প্রতিনিধি:
পাটকেলঘাটায় লোকনাথ নার্সিং হোম এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভ‚ল চিকিৎসায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এক ভ্যানচালক, পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন। সূত্রে জানা যায় সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ফলেয়া গ্রামের ভ্যান চালক বাপ্পী শেখ (২৫), পিতা-শফিকুল ইসলাম এ্যাপেন্ডিস অপারেশনের জন্য চলতি মাসে গত ২১ তারিখ দালালের মাধ্যমে উক্ত ক্লিনিকে ভর্তি হয়। ভর্তির ২ ঘন্টা পরেই কোনরকম পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়াই হাতুড়ি ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করেন। অপারেশন পরবর্তী রোগী সুস্থ না হওয়ায় রোগীর স্বজনরা রোগীকে ঐ ক্লিনিক থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত রবিবার সাতক্ষীরা বুশরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। কর্মরত ডাক্তার সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক সার্জারী ডাঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা C B হাসপাতালে প্রেরন করে। এবিষয়ে বাপ্পীর বাবা শফিকুল ইসলাম ও ফুফা আকলিমা খাতুন গনমাধ্যমের নিকট অভিযোগ করে বলেন, ৪ হাজার ৫শত টাকা চুক্তিতে এ্যাপেন্ডিস অপারেশনের জন্য উক্ত ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কিছুসময় পরে কোনরকম চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরিক্ষা ছাড়াই ডাক্তার অর্ঘ্য দে অপারেশন করে। অপারেশনের পর হতে রোগী আরো অসুস্থ হয়ে পড়লে ক্লিনিক মালিক পুলক কুমার পাল কে বললে তিনি কোন কর্ণপাত করেনি বরং আমাদের ধমক দিয়ে বলেন, আপনারা বেশি বোঝেন? রোগী সুস্থ আছে। তারা আরো অভিযোগ করেন উক্ত ক্লিনিকের পরিচালক পুলক কুমার পালের বিরুদ্ধে রয়েছে নারী ঘোটিত সহ অনেক ধরনের অপকর্ম। শুধু তাই নয় তার ক্লিনিকে এমন ঘটনা অহর অহর ঘটলেও কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয় না। এমনকি তার ক্লিনিকে নেই কোন বৈধ কাগজপত্র, এমবিবিএস ডাক্তারসহ প্যাথলোজী বিভাগের অনুমতি। শুধু এখানে শেষ না, তার ক্লিনিকের পরিবেশ এতটাই নোংরা বা স্যাতষেতি ও রোগ-জীবানু ভরা।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সহকারি অধ্যাপক (সার্জারি) ডাঃ শরিফুল ইসলাম বলেন, রোগী বাপ্পী শেখের ভ‚লচিকিৎসা ও অপারেশন পরবর্তী পেটের ভিতরে জীবানু সহ নারি জরানো থাকায় রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এমনকি রোগীর ভ‚ল চিকিৎসার জন্য তার জীবন আজ বিপন্ন। সরেজমিনে জানাযায় ঐ ক্লিনিকের বিরুদ্ধে একাধিকবার রোগীর ভ‚ল চিকিৎসা, নারী কেলেংকারী ও রোগী আটকিয়ে জোরপূর্বক টাকা আদায় সহ নানা ধরনের অভিযোগ থাকা স্বত্তে¡ও বন্ধ হয়নি অপচিকিৎসার নামে কশায়খানা। খোঁজ নিয়ে আরো জানাযায় উক্ত ক্লিনিকে মানা হয়না কোন স্বাস্থ্যবিধি, নেই কোন বৈধ কাগজপত্র, ক্লিনিকের ভিতরে ঘুরে দেখা যায় পরিবেশ এতটায় নোংরা যে, সেখানে অপারেশন ও প্যাথলজী টেস্ট হয় সেটা ভাবার বিষয়। এবিষয়ে রোগী বাপ্পীর স্বজনেরা অভিযোগে বলেন, আমাদের রোগী এখান থেকে অন্যত্র চিকিৎসা করতে চাইলে কথিত ক্লিনিক পরিচালক পুলক কুমার পাল বাঁধা দেয়। এমনকি ভয়-ভীতি দেখায় এবং বেশি টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে ক্লিনিকের পাশ্ববর্তী আকলিমার জিম্মায় পুলক পালকে ১ হাজার টাকা দিয়ে রোগীকে ক্লিনিক থেকে তারই এ্যাম্বুলেন্সে সাতক্ষীরায় আনা হয়। সার্বিক বিষয়ে কথা হয়, লোকনাথ নার্সিং হোম এন্ড ডায়গনস্টিকের পরিচালক পুলক কুমার পাল এর সঙ্গে, তিনি গনমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশন নেই, রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেছি। ক্লিনিকের পরিবেশ নোংরা থাকায় পরবর্তীতে আমি পরিষ্কার করে নিব। আপনারা আমার ক্লিনিকের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করবেন না। সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাতক্ষীরা এক ডায়গনস্টিক নেতা আবু বক্কার ছিদ্দিক সংবাদ পরিবেশন না করার জন্য চেষ্টা করেন।
এবিষয়ে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন মোঃ হুসাইন সাফায়েত বলেন, এধরনের অপচিকিৎসার কারণে আপনি অভিযোগ করেছেন, আগামীকাল তদন্ত কমিটির মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব। এবং জানামতে উক্ত ক্লিনিকে রেজিস্ট্রেশন নবায়ন নাই।
Leave a Reply