কাজী সোহাগ পাইকগাছা: ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের আওতায় পাইকগাছায় প্রথমবারের মতো পলিনেট হাউজ পদ্ধতিতে ফল-সবজি রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। উপজেলায় প্রথমবারের মতো এ হাউজে চারা রোপন ও চারা উৎপাদন শুরু হওয়ায় সুফল পাচ্ছে উপজেলার কৃষকরা। এর ফলে কৃষি উৎপাদনে বিপ্লব ঘটবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। পলিনেট হাউজ উন্নতমানের পলি ওয়েল পেপারে আবৃত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা করে নিরাপদ ফসল উৎপাদনের আধুনিক ও নির্ভরযোগ্য প্রযুক্তি। অত্যাধুনিক এই প্রযুক্তির ছোঁয়ায় শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন উচ্চমূল্যের সব ধরেণের ফসল ও চারা উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা। স্থানীয় কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পলিনেট হাউজে উচ্চমূল্যের ফসল ক্যাপসিকাম, ব্রকলি, রকমেলন, রঙিন তরমুজ, রঙিন ফুলকপি,বাধাকপি,টমেটো, লেটুসসহ এসব সবজির পাশাপাশি চারা উৎপাদনের সুযোগ তৈরি হবেতেমনি অনেকেই আয়ের নতুন উৎসের সন্ধান পাবে। পলিথিনের আচ্ছাদন থাকায় এতে সূরে্যর ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশে বাধা পায় এবং অতি বৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুরে্যাগেও ফসল অক্ষত থাকে। অসময়ে সবজি চাষের জন্য পলিনেট হাউজ দেশে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির নতুন সংযোজন। এর মাধ্যমে শীতকালীন সবজিগুলো যেমন সহজেই গ্রীষ্মকালে উৎপাদন করা যায় তেমনি গ্রীষ্মকালের সবজিও শীতে উৎপাদন করা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার হরিঢালী গ্রামে ২০ শতাংশ জমির ওপর একটি পলিনেট হাউজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে পলিনেট হাউজে টমেটো, মিস্টি কুমড়া, তরমুজ, ক্যাপসিকামসহ বিভিন্ন ধরনের সবজির চারা উৎপাদন করা হয়েছে। পলিনেটের উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম। তিনি দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, আধুনিক এই পলিনেট হাউজে প্লাস্টিক ট্রেয়ে মাটির পরিবর্তে নারিকেলের ছোবরায় তৈরি কোকোপিটে চারা উৎপাদন করা হয়। এতে ভাইরাস ও পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ফলে সার ও কীটনাশক দিতে হয় না এসব চারায়। প্রায় ১৫ শতক জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে আর ৫ শতকে চারা তৈরি করা হচ্ছে। চারা উৎপাদন করে সফলতা পাচ্ছি। এখান থেকে চারা সংগ্রহ করছে অনেকে। অসময়ে বিভিন্ন সবজি চাষ করার ফলে বেশি দামে বিক্রি করতে পারছি। তিনি আরও বলেন, আমি প্রথমে একটু শংকায় ছিলাম যে এই পদ্ধতিতে আবাদ করে লাভ হবে কিনা। কিন্তু আবাদ শুরুর পর দেখি এ পদ্ধতি বেশ ভালো। সারা বছর এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে আমরা লাভবান হতো পারবো। এলাকার আর এক কৃষক বলেন, আমি ২০টি মিস্টি কুমড়ার চারা নিয়ে রোপন করেছি। চারা তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠেছে দেখতেও ভালো হয়েছ। তা আরো কিছু চারা নিতে এসেছি।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অসিম কুমার দাশ তিনি দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, এতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে সব ধরনের সবজি চাষ করে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারবে। কৃষি বিভাগ থেকে এবিষয়ে প্রয়োজনীয় পরমর্শ দেয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতির সুবিধা দেখে এলাকার অনেক কৃষকই পলিনেটের ব্যপারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তিনি বলেন, পলিনেট হাউজ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারী বৃষ্টিপাত, তাপ, কীটপতঙ্গ, ভাইরাসজনতি রোগ, প্রতিকুল পরিস্থিতি থেকে নিরাপদ শাকসবজি ফলমূলসহ কৃষি উৎপাদন করার এক আধুনকি পদ্ধতি।
Leave a Reply