স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরার দেবহাটায় স্ত্রীর ডিভোর্স নোটিশ পেয়ে শ্বশুরকে নৃশংসভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে এক জামাতার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে উপজলার মাটিকুমড়া গ্রামে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম আজগার আলী সরদার (৫৫)। তিনি দেবহাটা উপজলার মাটি কুমড়া গ্রামের মৃত সুরত আলী সরদারের ছেলে ও পেশায় একজন কৃষক ছিলেন।
মাটিকুমড়া গ্রামের আক্তার হোসেন সরদার জানান, তার বড় ভাই আজগার আলীর ছোট মেয়ে শিল্পী খাতুনের সঙ্গে খালাতো ভাই কালিগঞ্জ উপজেলার তারালী ইউনিয়নের বরয়া গ্রামের মুজিবর রহমানের ছেলে সালাহউদ্দিনের দু’বছর আগে বিয়ে হয়। সালাহউদ্দিন বেকার হওয়ায় বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে শিল্পীকে প্রায়ই নির্যাতন করতো। এ নিয়ে কয়েকবার শালিস হয়েছে। এরপরও নির্যাতন বন্ধ না হওয়ায় ১০ দিন আগে শিল্পীর পরিবার শিল্পীকে বাড়িতে নিয়ে এসে জামাতা সালাহউদ্দিনের ঠিকানায় তালাক নামা পাঠিয়ে দেন। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে সালাহউদ্দিন গত রবিবার ও সোমবার গভীর রাতে শ্বশুর বাড়ির আশপাশে ঘোরাফেরা করতো। কখনো তাকে গাছের উপর উঠে বসে থাকতেও দেখা গেছে।
আক্তার হোসেন অভিযাগ করে বলেন, মঙ্গলবার রাতে তার ভাই আজগার হোসেন নৈশভোজ সেরে নিজের ঘরের বারাদায় মশারী টানিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। দিবাগত রাত একটার দিকে আগে থেকে ওঁৎ পতে থাকা সালাহউদ্দিনসহ কয়েকজন দূর্বৃত্ত ঘুমন্ত অবস্থায় মশারির উপর দিয়ে আজগার আলীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত ও রক্তাক্ত জখম করে চলে যায়। এসময় জখম আজগার আলী ও তার পরিবারের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা ছুটে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় আজগার আলীকে উদ্ধার করে রাত সোয়া দুইটার দিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন।
কিন্তু আজগার আলীর শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি না নিলে বুধবার ভোর সোয়া চারটার দিকে তাকে খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা চলাকালিন ভোর ৫টার দিক আজগার আলী মারা যান। খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে মাটিকুমড়া গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে আজগার আলীর মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
নিহত আজগার আলীর স্ত্রী মনোয়ারা খাতুন জানান, শ্বশুরকে হত্যার পর সালাহউদ্দিন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা এঁটেছে। সেজন্য খুনের আগেই ভারতীয় ভিসা প্রস্তুত করে রাখে সে। যেকোন সময় সালাহউদ্দিন ভারতে পালাতে পারে বলেও আশংকা করছেন তিনি।
এদিকে নৃশংস এ হত্যাকান্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়দুল্লাহ।
Leave a Reply