1. nokhatronews24@gmail.com : ajkarsatkhiradarpan darpan : ajkarsatkhiradarpan darpan
  2. install@wpdevelop.org : sk ferdous :
তালগাছ আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী ও পরমবন্ধু - আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ
মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
১৫ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ খবর :
📰আশাশুনিতে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ঘটকসহ আহত-৩📰সাংবাদিকের জানে মেরে দেবো সাতক্ষীরা সাব রেজিস্টারের অমায়িক বাবুর হুমকি📰তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা সাতক্ষীরা শাখার বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ📰সাতক্ষীরায় ডিবি পুলিশের অভিযানে অনলাইন জুয়া চক্রের এজেন্টসহ গ্রেফতার- ২📰প্রথম আলোর বিভ্রান্তিকর রিপোর্টের প্রতিবাদে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি📰সদরের সাব রেজিষ্ট্রার অফিসের ঘুসের টাকা গ্রহনকারী মহসিনের ক্ষমতার উৎসাহ কোথায়? (১ম পর্ব)📰স্বামী-সন্তানকে ফেলে পরকীয়ায় রেহেনা এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ📰পাইকগাছায় ইয়াবাসহ যুবক আটক📰পাইকগাছায় বিভিন্ন পূজামন্ডপে বিএনপির সিসি ক্যামেরার প্রদান📰শ্যামনগরের ৭০টি পূজা মন্দিরে বিএনপির উপহার হস্তান্তর

তালগাছ আমাদের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী ও পরমবন্ধু

প্রতিবেদকের নাম :
  • হালনাগাদের সময় : সোমবার, ১২ জুন, ২০২৩
  • ৩৮ সংবাদটি পড়া হয়েছে

তুহিন হোসেন:

শিশু মনের আলোড়িত ছড়া খান মুহাম্মদ মইনুদ্দীন এর ‘ঐ দেখা যায় তালগাছ, ঐ আমাদের গাঁ। দৃশ্যমান উঁচু তালগাছ যেন আবহমানকালের গ্রাম বাংলার পরিচয়ের স্বাক্ষ্য দেয়। তক-বিতর্ক ও কথায় আমরা বলে থাকি “বিচার মানি কিন্তু তালগাছটি আমার। ‘ঘুমাইয়া কাজা করেছি ফজর, তখনো জাগিনি যখন যোহর, হেলা ও খেলায় কেটেছে আসর, মাগরিবের শুনি আজান। জামাত শামিল হওরে এশাতে, এখনো জমাতে আছে স্থান। ‘কী সুন্দর চমৎকার উপমা দিয়ে আমাদের প্রিয় জাতীয় কবি চিরকাল অলসতাকে ঠেলে দিয়ে এখনো সময় শেষ হয়ে যায় নি বলে চেতনা ও জাগরণের সম্ভাবনার জয়গান গেয়েছেন। বৃক্ষরোপণ (লালন পালন সহ) সবচেয়ে বড় সামাজিক বিপ্লব, মহৎকর্ম ও সাদকায়ে জারিয়াহ। বৃক্ষহীন স্থানই মরুভূমি, যেখানে বৃষ্টিপাত হয় না। সাম্প্রতিক সময়ে গাছপালা নিধনে দাবদাহে পুড়ছে সোনারবাংলা। কাঠফাটা রোদ, ভ্যাপসা গরম এবং সীমাহীন লোডশেডিং এ পশুপাখি, উদ্ভিদ, প্রাণী সবারই হাঁসফাঁস অবস্থা। ভয়ংকরভাবে বিপর্যস্ত আমাদের জনজীবন। কালো মানুষের কালো থাবায় সাদামনের মানুষেরা কি বারবার হেরে যাবে? সাদামনের অধিকারীরা বা ভাল মানুষেরা কেবলমাত্র ভাল কাজ করে আত্মতৃপ্তি পান। বিনিময়ে কি পেলেন বা না পেলেন সেটার তোয়াক্কা করেন না। সারাদেশে অনন্য রেকর্ড স্থাপনকারী ৭১ বছরের মুরুব্বি ইমাম ও পল্লী চিকিৎসক খোরশেদ আলীকে দেখতে গিয়েছিলাম ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত পাহাড়ভাংগা গ্রামে। তালগাছ প্রেমী বা পাগল এই মহান মানুষটি নিজের পৈতৃক পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে অনেক দূরে গিয়ে তালের বীজ সংগ্রহ করে বিভিন্ন উপজেলা, বিভিন্ন স্থানে সড়কে ইতিমধ্যে ৫২ হাজার ৩০০টি তালের বীজ স্বহস্তে গভীর রাতে নিদ্রাহীন থেকে সেগুলো রোপণ করে পরিচর্যা করছেন। কেন রাত ১২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সেগুলো লাগান তা জানতে চাইলে তিনি বলেন “নানা বয়সী কিছু দুষ্টু প্রকৃতির মানুষ তালের আঁটিগুলো খেয়ে ফেলে এবং গাছগুলো উপরে দেয়।’ তাঁর অদম্য ইচ্ছে হল এক লক্ষ তালের চারা রোপণ করে বিশ্বের বুকে এক সোনালী ইতিহাসের গৌরব অর্জন করা। প্রকৃত পরিবেশ বন্ধু এই মহান লোকটিকে জানাই গভীর শ্রদ্ধা, বুক ভরা উজাড় করা ভালবাসা। তাঁর আবেগের মধ্যে মিশে আছে প্রকৃতি ও মানুষের প্রতি গভীর মায়া, মমতা। বিশ্বকবির মতে ‘ন্যায়, নীতি ও সত্যতে অটল থাকার দৃশ্যমান বড্ড তালগাছ আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক।’ কেননা তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে ,আবার সবগাছ ছাড়িয়ে, আকাশে উঁকি মারে। কবি রজনীকান্ত সেনের মতে”ঝুলন্ত তালগাছে শক্ত বাসা বুননে বাবুই পাখি পরিশ্রমী, প্রকৌশলী ও আত্মমর্যাদার আরেক প্রতিচ্ছবি। বহুমাত্রিকভাবে তালগাছ আমাদের বাংলা সাহিত্যে বিদ্যমান। বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বজ্রপাত) সারাবিশ্বে এক আতংকের নাম। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতামত হল”তালগাছ,সুপারীগাছ এবং নারিকেল গাছ ঝড়, তুফান, টর্নেডো, প্রবল হাওয়া প্রতিরোধ ,মাটির ক্ষয়রোধে সহায়তার পাশাপাশি আমাদের পরিবেশকে রক্ষা করে। এছাড়াও ভূমিধস, ভূমিক্ষয়, ভু-গর্ভস্থ পানির মজুদ বৃদ্ধি ও মাটির উর্বরতা রক্ষায় তালগাছের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। তালগাছের আকর্ষনে বাড়ে মেঘের ঘনঘটা, ঘটে বৃষ্টিপাতও। তালগাছ রোপণে প্রথমেই তা মাটির নীচে প্রবেশ করে। এর ফলে গাছটি ঝড়ে হেলে পড়ে না কিংবা ভেংগে পড়ে না। সবচেয়ে আনন্দদায়ক খবরটি হল বজ্রপাত (বিদ্যুৎ স্পর্শ )এর থাবা থেকে মানুষ, পশুপাখি সহ জীববৈচিত্র রক্ষায় এই গাছ আমাদের অকৃত্রিম ও পরীক্ষিত বন্ধু। তালগাছ ৯০-১০০ ফুট উঁচু হওয়ায় এবং বাঁকলে পুরু কার্বনের স্তর থাকায় আকাশের বিজলী গাছ হতে তা সরাসরি মাটিতে চলে যায়। বেশি বেশি তালগাছ থাকলে গ্রামীণ জনপদের কৃষক, শ্রমিক, জেলে ও মেহনতি ইত্যাদি মানুষেরা মহাবিপদ থেকে রক্ষা পাবে। বজ্রপাত বাংলাদেশে জাতীয় দূর্যোগ হিসাবে পরিচিত। প্রতিবছর এই আকস্মিক মৃত্যু মৃত্যুর ঝুঁকি ও সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বেড়েই চলেছে। অনেক উপাকারী তালগাছের কান্ড,বাঁকল ও লতাপাতা। তালের কাঠ খুব শক্ত, মজবুত ও টেকসই। ঘরের খুঁটি আসবাবপত্র, বিভিন্ন গৃহস্থালী সামগ্রী ও আদি যানবাহন নৌকা তৈরিতে তালকাঠ অনন্য। লোকজ চিকিৎসায় তালের ব্যবহার প্রচুর। মানব শরীরের কোষের ক্ষয়রোধ করে এবং তারুণ্য ধরে রাখে তাল। কোন অংশই অপ্রয়োজনীয় নয়। পরিপক্ক একটা তালগাছ দিয়ে কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। স্ত্রী ও পুরুষ উভয় গাছেই ফুল হয়। ১২-১৩ বছর হলেই স্ত্রী গাছে ফল আসে। প্রচুর ভিটামিন ও পুষ্টিমান সমৃদ্ধ কাঁচা ও পাকা তাল সুস্বাদু ও মিষ্টি। একটানা ৯০-১২০ দিন পর্যন্ত ২৪ ঘন্টায় ১২-১৫ কেজি রস দেয়। পাঁচ কেজি রস থেকে এককেজি গুড় তৈরি হয়।তালগাছ ১৪০-১৫০ বছর পর্যন্ত বাঁচে।ভালকাজে পুরস্কার ও মন্দ কাজে তিরস্কার সবারই করা উচিৎ। গ্রামীণ ও উপকূলীয় অঞ্চলে তালগাছ লাগিয়ে বজ্রপাতে প্রাণহানি কমানো সম্ভব। বিদ্যুৎস্পর্শ থেকে জীবন রক্ষায় উঁচু তালগাছের বিকল্প নেই। প্রতিটি সমস্যার সমাধান যুক্তিসঙ্গত ভাবে বা মাঝে মাঝে অলৌকিকভাবে হয়ে থাকে। তালগাছের সারিসারি নান্দনিক সৌন্দর্যরুপ দেখতে যেমন সুন্দর ঠিক তেমনি রয়েছে এর বিভিন্নরকম উপকারীতা। অকালমৃত্যু থেকে দেশবাসী তালগাছের ছোঁয়ায় শুধু রক্ষাই পাবে না, সবুজ বেস্টনীতে গড়ে উঠবে আমাদের গ্রাম বাংলার প্রতিটি গ্রামের কৃষি, অকৃষি ভূমি। একজন পরিবেশ সচেতন নাগরিক হিসেবে আমার মত সবাই এই অনিন্দ্যসুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে চায়।

আপনার সামাজিক মিডিয়ায় এই পোস্ট শেয়ার করুন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর :

সম্পাদক মণ্ডলীর সভাপতি:

এম এ কাশেম ( এম এ- ক্রিমিনোলজি).....01748159372

alternatetext

সম্পাদক ও প্রকাশক:

মো: তুহিন হোসেন (বি.এ অনার্স,এম.এ)...01729416527

alternatetext

বার্তা সম্পাদক: দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা

সিনিয়র নির্বাহী সম্পাদক :

মো: মিজানুর রহমান ... 01714904807

© All rights reserved © 2020-2025
প্রযুক্তি সহায়তায়: csoftbd