ন্যাশনাল ডেস্ক: ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আন্দামান সাগরের ওপরে শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এটি। আর সেই নিম্নচাপ বঙ্গোপসাগরের ওপরে পৌঁছেই শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে। রোববার রাতেই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে পরিণত হতে পারে এই নিম্নচাপ। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) তা আরও শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এর ফলে দেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলা ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে সিত্রাং নিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান বলেছেন, আন্দামান সাগরে সৃষ্ট লঘুচাপটি নিম্নচাপ থেকে এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি রোববার রাতে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তিনি বলেন, গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলা যায়। এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হতে পারে।
রোববার (২৩ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের উপকূলীয় ১৯টি জেলা ঝুঁকিতে রয়েছে। গত ৩ বছরে যে ঘূর্ণিঝড়গুলো হয়েছে তার চেয়ে এটার কভারেজ এরিয়া বা আঘাত হানার এরিয়া অনেক বেশি ব্যাপক।’ তিনি বলেন, ‘ঝড়টির সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী অবস্থান হলো ৮৮. ৫ দ্রাঘিমাংশ এবং ১৬ অক্ষাংশ। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এটি ৮৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ এবং ১৭ ডিগ্রি অক্ষাংশের সংযোগস্থলে পৌঁছার পর সরাসরি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপটি ৮৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমাংশ এবং ১৭ ডিগ্রি অক্ষাংশ সংযোগস্থলে পৌঁছার পরে এটি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন নিতে পারে। যদি উত্তর-পূর্ব দিকে টার্ন করে তাহলে এটি কক্সবাজার থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৭৩০ কিলোমিটারজুড়ে উপকূলের ১৯টি জেলাতেই আঘাত হানবে। ঘূর্ণিঝড়টি ২৪ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাত থেকে ২৫ অক্টোবর (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, এটি যেহেতু সুপার সাইক্লোন হবে না, সিভিয়ার সাইক্লোন হবে এটার গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
‘আর যদি এখন যে ডিরেকশন আছে নিম্নচাপের, উত্তর-পশ্চিম দিকে যাচ্ছে, যদি দিক পরিবর্তন না হয় উত্তর-পশ্চিম দিকে যদি গিয়ে থাকে তাহলে এটা ভুবনেশ্বর এবং পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানবে। এখন পর্যন্ত এটাই আমাদের শেষ আপডেট।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো বলছে সন্ধ্যায় (রোববার) এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হবে এবং আঘাত হানার সময় বলছে ২৫ তারিখ (মঙ্গলবার)। ২৪ তারিখ (সোমবার) দিবাগত রাতের পর থেকে ২৫ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলে আঘাত হানার সম্ভাবনার কথা।’
ঝুঁকিতে থাকা দেশের উপকূলীয় ১৯ জেলা: ১. খুলনা ২. সাতক্ষীরা ৩. বাগেরহাট ৪. পটুয়াখালী ৫. বরগুনা ৬. ভোলা ৭. পিরোজপুর ৮. বরিশাল ৯. ঝালকাঠি ১০. নোয়াখালী ১১. লক্ষ্মীপুর ১২. ফেনী ১৩. চাঁদপুর ১৪. চট্টগ্রাম ১৫. কক্সবাজার ১৬. ফরিদপুর ১৭. মাদারীপুর ১৮. গোপালগঞ্জ ১৯. শরীয়তপুর।
Leave a Reply