আজকের সাতক্ষীরা দর্পণ ডেস্ক: সাতক্ষীরায় বিভিন্ন হাটবাজারে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করায় ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভ করছে আর ক্রেতা ঠকছে। ব্যবসায়ীরা তরমুজ ক্ষেত বিঘা বা পিস চুক্তিতে ক্ষেত মালিকের নিকট থেকে ক্রয় করছে। আর বাজারে এনে ক্রেতার কাছে কেজি দরে বিক্রি করছে। এতে ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে আর ক্রেতা ঠকছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সদরের নারিকেলতলা, মিলবাজার, পলাশপোল, বৌ বাজার, সিটি কলেজ মোড়, কদমতলা বাজার, নিউ মার্কেট, ইটাগাছা হাটের মোড়, পুরাতন সাতক্ষীরা, ধুলিহর বাজারসহ বিভিন্ন ছোট বড় বাজারে কেজি দরে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা তরমুজ ক্ষেতের মালিক বা চাষির নিকট থেকে বিঘা বা পিচ চুক্তিতে তরমুজ ক্রয় করছে। আর অনেক খুচরা ব্যবসায়ী আড়ৎ থেকে পিস হিসাবে তরমুজ ক্রয় করছে। এতে প্রতি পিস ছোট তরমুজ ১৫/২৫ টাকা আর বড় প্রতি পিচ তরমুজ ৩৫/৭০ টাকা করে পড়ছে। ব্যবসায়ীরা তরমুজ কমদামে পিস হিসাবে ক্রয় করে বাজারে এনে ক্রেতার কাছে খুচরা কেজি দরে বিক্রয় করছে। সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীরা ভালো মানের তরমুজ শুরুতে ৮০/৯০ টাকা কেজি বিক্রি করলেও এখন প্রতি কেজি ৫৫/৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে।
সদর উপজেলার পুরাতন সাতক্ষীরা তরমুজ ব্যবসায়ী রসুলপুর গ্রামের ইমন হোসেন জানান, তিনি কয়রাতে ৩বিঘা তরমুজের ক্ষেত ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছেন। ক্ষেত থেকে তরমুজ বাজারে এনে প্রতি কেজি ৩৫/৪০ টাকা দরে বিক্রি করছে। তার কাছে পিচ হিসাবে তরমুজ কিনে কেজি দরে বিক্রি করার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবাই বিক্রি করছে তাই আমিও করছি।
পলাশপোল বৌ বাজারের তরমুজ ব্যবসায়ী মো. কায়েস ও রমজান আলী দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে জানান, তারা কয়রা থেকে তরমুজ ক্রয় করে এনেছে। তারা ৪০ টাকা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি করছে। রমজান আলী জানান, এ বছর বৃষ্টি না হওয়ায় তরমুজের দাম অনেক বেশি। ক্ষেত থেকে অনেক সময় মন হিসাবে তরমুজ কিনতে হচ্ছে। তাই আমরা ওজনে তরমুজ বিক্রি করছি। সবাই পিচ হিসাবে বিক্রি করলে আমিও করবো।
সদরের থানাঘাটা গ্রামের ক্রেতা শেখ রেজাউল ইসলাম বাবলু দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে বলেন, কয়েক বছর আগেও পিচ হিসাবে তরমুজ ক্রয় করছি। এখন ৪ কেজি ওজনের একটি তরমুজ ১৮০ টাকা দিয়ে ক্রয় করতে হচ্ছে। যা পিচ হিসাবে ৯০/১০০ টাকায় ক্রয় করা যেত। ওজনে বিক্রি করায় তিনিসহ সকল ক্রেতা ঠকছেন বলে দাবী করেছেন। আরোও বলেন তরমুজ ওজনে বিক্রি হওয়াতে একটি ছোট তরমুজ কিনতে ১০০-১৫০ টাকা লাগছে। তাই এ বছর এখনো তরমুজ কেনা হয়নি। ওজনে তরমুজ বিক্রি হওয়ায় আমাদের মত ভ্যান চালকরা তরমুজ কিনতে পারছেনা বলে তিনি জানান।
গরমের সু-স্বাদু ফল তরমুজ। খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে বিক্রি হচ্ছে। রমজান আর তাপদাহকে কাজে লাগিয়ে কিছু ব্যবসায়ী ক্রেতার সাথে প্রতারণা করে তরমুজ বিক্রি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ভালো মানের একটি তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ৩০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। সাধারণ মানুষের দাবি, যেসব ফলের ৪০ শতাংশ বাদ দিতে হয় যেমন, তরমুজ, কাঁঠাল, কলাসহ নানা ফল যেন কেজিতে বিক্রি না করে পিচ হিসাবে বিক্রি করা হয় তার জন্য সাতক্ষীরা বাজার মনিটরিং কমিটি ও উপজেলা প্রশাসনের বাজার তদারকি করার জন্য দাবী জানিয়েছে ভোক্তা ও সাধারণ ক্রেতারা।
এ বিষয় সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমেদ বলেন, আমিও জানতে পেরেছি তরমুজ ব্যবসায়ী তারা এক হয়ে কেজি দরে বিক্রয় করছে, বিষয়টি জরুরী ভাবে দেখা হবে।
Leave a Reply