স্টাফ রিপোর্টার: জলবায়ু পরিবর্তনের কারনে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার প্রকৃতি পরিবেশ প্রতিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এরফলে প্রতিনিয়ত ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন, জলাবদ্ধতাসহ উপকূলে নানা সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে। সমস্যায় জর্জরিত মানুষ এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণে প্রাকৃতিক ভারসম্য রক্ষার্থে গাছ লাগানোর কোন বিকল্প নেই। আমরা যে যেখানে আছি সেখান থেকে এই গাছ লাগানোর কাজে সকলকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। সাতক্ষীরা শহর ও সদর উপজেলায় অবস্থিত ৫০ জন সেলুন মালিক-শ্রমিকের মাঝে হাসিমুখের উপহার ও গাছ বিতরণী অনুষ্ঠানের বক্তারা এ আহবান জানান। সাতক্ষীরা হাসিমুখ সেঞ্চুরি একাডেমির উদ্দ্যোগে বিডিএস ভবনে মঙ্গলবার দুপুরে বৃক্ষবিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের পরিচালক, সাবেক ছাত্রনেতা ও জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা দৈনিক পত্রদূত এর উপদেষ্টা সম্পাদক ও চ্যানেল আই এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি এড আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাতক্ষীরা সাংবাদিক কেন্দ্রের সমন্বয়ক সাংবাদিক শেখ আহসানুর রহমান রাজিব, দৈনিক সুপ্রভাত সাতক্ষীরার বার্তা সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, সাংবাদিক মোস্তফা রায়হান সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, জেলা সেলুন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন বিশ্বাস, সদস্য ব্রজেন বিশ্বাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানের বক্তারা বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশের সমুদ্র উপকূলের প্রায় ২ কোটি মানুষ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সমুদ্রের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে লবণাক্ত পানি উপকূলের আবাসিক এলাকায় প্রবেশ করছে। এতে মিঠা পানির সংকট দেখা দিয়েছে। লবণাক্ত পানি পান করে এসব মানুষ দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে। প্রতিবেদনে উদ্বৃতি দিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ঢাকা শহরে বসবাসরত ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়, নদীভাঙন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ৯৮ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর ধ্বংস হওয়ায় শহরে আসতে বাধ্য হয়েছে। এর প্রভাবে সুন্দরবনের অস্বিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। উপকূলীয় এলাকায় আর্থিক সক্ষমতার অভাবে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হচ্ছে এবং দারিদ্র্য বাড়ছে। বক্তারা এই বিরূপ পরিস্থিতি থেকে ভবিষ্যত প্রজন্মকে রক্ষা করতে নিজে গাছ লাগানোর পাশাপাশি অন্যকে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করতে সেলুন মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহবান জানান। অনুষ্ঠানের সভাপতি হাসিমুখের পরিচালক শেখ এজাজ আহমেদ স্বপন বলেন, চায়ের দোকান ও সেলুনে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজার হাজার মানুষের আগমন ঘটে। একারনেই আপনার উদ্বুদ্ধ হলে আপনাদের মাধ্যমে প্রতিটি মানুষের কাছে গাছ লাগানোর প্রয়োজনীয়তার এই বার্তা খুব সহজেই পৌছে দেওয়া যাবে। অনুষ্ঠানে আগত মালিক-শ্রমিকদেরকে হাসিমুখের উপহারের প্যাকেট এবং আম ও জামরুলের চারা প্রদান করা হয়। উল্লেখ্য, হাসিমুখের পক্ষ থেকে সাতক্ষীরা শহর ও সদর উপজেলায় অবস্থিত দুই শতাধিক সেলুন মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে হাসিমুখ উপহার ও গাছ বিতরণের কর্মসূচির অংশ হিসাবে প্রথম দফায় আরো ৫০ জনের মধ্যে একই ধরনের উপহার বিতরণ করা হয়। এছাড়া আগামী ১৫ ও ২২ আগষ্ট আরো দু’দফায় উক্ত উপহার বিতরণ করা হবে। এর পূর্বে একইভাবে চায়ের দোকান মালিক শ্রমিকদের মাঝে উক্ত উপহার বিতরণ করা হয়।
Leave a Reply