তুহিন হোসেন:
সারাদিন সূর্যের রাজত্ব চললেও সন্ধ্যা নামতেই সাতক্ষীরা জেলাতে জেঁকে বসছে শীত। ফুটপাত থেকে শহরের বড় বড় মার্কেট সর্বত্রই ছেঁয়ে গেছে শীতের পোশাক আর বাহারি কম্বলে। নিজে ও পরিবারের সদস্যদের উষ্ণ রাখার জন্য দোকানে দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে গত বছরের তুলনায় এবার শীতের শুরুতেই অস্থায়ী ও ভ্রাম্যমান শীতবস্ত্রের দোকানে ক্রেতাদের বেশ ভিড় লক্ষ করা গেছে। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এসব দোকানে গরম কাপড় কিনতে ভিড় করছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে দেখা যায়, আর্থিকভাবে সচ্ছল ক্রেতারা যেমন আসছেন তেমনি স্বল্প আয়ের মানুষেরাও অল্প দামে শীতবস্ত্র কিনতে ফুটপাতের এসব দোকানে ভিড় করছেন। শীতের চাদর, জ্যাকেট, সোয়েটার, মোটা কাপড়ের গেঞ্জি, হুডি, মাফলার, কমফোর্টার, হাতমোজা, কানটুপিসহ সব ধরনের শীতবস্ত্রই মিলছে এসব দোকানে। কোনো কোনো দোকানী আবার সাজিয়ে বসেছেন শুধুই শিশুদের শীতের কাপড়।
সাতক্ষীরার কাশেমপুর থেকে আব্দুল মোমিন এর পরিবার নিয়ে শীতের কাপড় কিনতে আসেন তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমাদের জেলায় শীত শুরু হয়েছে। বিকাল থেকেই হালকা শীত অনুভূত হচ্ছে। তাই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে শীতবস্ত্রের দোকানে এসেছি কাপড় কিনতে। মোজাম্মেল হক নামের আরেক ক্রেতা বলেন, এখানে এসে অনেক দোকান ঘুরে দেখলাম আর কিছু কাপড় কিনলাম। এখান থেকে কাপড় কিনে ও দেখে যেটা মনে হলো একেবারেই নিম্ন বিত্ত থেকে শুরু করে এখানে সকল শ্রেণির মানুষের ক্রয় ক্ষমতার নাগালেই ভালো ভালো কাপড় পাওয়া যাচ্ছে। তিনি জানান, কম দামে ছেলে মেয়েদের জন্য কাপড় কেনার জন্যই এসেছি। তবে গতবছরের তুলনায় এবার একটু কপড়ের দামটা বেশি।
শীতবস্ত্র বিক্রেতারা বলছেন, করোনার কারণে গত দুই বছর ভালোভাবে ব্যবসা করা সম্ভব হয়নি। ফলে সকল ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন। এবছরও শঙ্কা কাটেনি। পরিবহনের কারণে পণ্য আনয়ন খরচও বেড়ে গেছে। তাই দামটা কিছুটা বেড়েছে। আর সব শ্রেণির ক্রেতাদের পণ্য কিনতে আমরা বিভিন্ন মানের শীতের পোশাক সংগ্রহ করেছি। বাহারি আলোকসজ্জায় সজ্জিত দোকানগুলোতে শীত পোশাক কিনতে না পেরে ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের দোকানগুলোতে। তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় ফুটপাত থেকেই পোশাক কিনছেন নিম্ন-মধ্যবিত্তরা।
আর এক ব্যবসায়ী বলেন, শীত মৌসুমকে ঘিরে কমবেশি সব কাপড় ব্যবসায়ীদেরই বড় ধরনের একটি ইনভেস্ট থাকে। তবে এ বছর আমরা আঁচ করতে পারছি গতবারের তুলনায় কাপড়ের দাম অনেক বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ বিদেশ থেকে আমদানি করা সব পণ্যেরই দাম বেড়েছে। বিশ্ববাজারেও অস্থিরতা বেড়েছে। মনে হচ্ছে সেই প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়বে। তবুও আমরা আশাবাদী যে, এবছরও ভালো ব্যবসা হবে।
Leave a Reply