স্টাফ রিপোর্টার: সাতক্ষীরা সদরের ১৪ নং ফিংড়ী ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সৈয়দ আলী সরদারের পুত্র মাহফুজুর রহমানের(৪৫) প্রতারণার ফাঁদে জর্জরিত ফিংড়ীবাসী। সূত্র মতে – মাহফুজ ফিংড়ী পাইনিয়ার ক্লাবের সভাপতি থাকাকালীন সময় থেকে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। ক্লাবে নতুন সদস্য সৃষ্টিতে অনিয়ম করে অর্থ গ্রহন। ফির অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে কেউ ক্লাবের সদস্য হতে পারিনি। ফিংড়ীর দোকানিদের নিকট থেকে চাঁদাবাজি, জমি দখল, ক্লাবের টাকার হিসাব না দেয়া ইত্যাদি কারনে তাকে পাইনিয়ার ক্লাব থেকে বহিষ্কার করা হয়।
ফিংড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বসুদেব ষ্টোর থেকে তের হাজার টাকার মালামাল বাকি নিয়ে তালবাহানা করে ৬/৭ বছর পরেও টাকা পরিশোধ করেনি দূর্নীতিবাজ মাহফুজ। বসুদেব সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার টাকা চাইলে বাজারে দোকানদারি করতে পারবি না বলে হুমকি দেয়।
ফিংড়ীর মালি পাড়ার পাচু মালির মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা নবিনা খাতুনের নিকট থেকে ৫০০০/ টাকা নেয় তার মেয়ে জামাতার বিরোধ মিমাংসার জন্য কিন্তু প্রতারক মাহফুজ মিমাংসা তো দুরের কথা সে বিষয়ে কোন কথাই বলে না। অসহায় দিনমজুর নবিনা টাকা ফেরত চাইতে তার বাড়ীতে গেলে মেম্বরের মান সম্মানে লাগে, সে হুংকার দিয়ে বলে তোর এত বড় সাহস তুই আমার বাড়ীতে আসছিস যা তোর টাকা দিবো না। অসহায় খেটে খাওয়া মহিলা বিচারের আশায় চেয়ারম্যান মোঃ সামছুরের নিকট জানান। চেয়ারম্যান সামছুর সবশুনে বলেন আমি মাহফুজের শালিস করবো না, ওর আর কতো শালিস করবো। হতদরিদ্র নবিনা টাকা ফেরত পাবার আশায় দ্বারেদ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
মাহফুজ মেম্বর তার নিজের ভাগিনীর গরু বিক্রয় করে পঁচাত্তর হাজার টাকা আতœসাত করে। বাড়ীর পাশে হাসানে পিতার লাগানো গাছ কাটার জন্য মাহফুজ মেম্বরকে ঘুষ দিতে হয় দুই হাজার টাকা। টাকা ছাড়া তার ওয়ার্ডের কেউ পাইনি বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা,শিশুকার্ড কোনকিছুই।
একজমি দুইজনের নিকট বিক্রয় করে চার লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এই প্রতারক মাহফুজ। দোনপারের আলমগির হোসেন আলম মাহফুজের নিকট থেকে জমি কিনে দখল না পেয়ে গ্রাম্য শালিস এবং চেয়ারম্যান এমনকি উপর মহলে জানিয়েও তার জমি কিম্বা দুই লক্ষ টাকা আজও ফেরত পাইনি।
মেম্বর মাহফুজ সরদার ২০১১/১২ সালে সরকারি চাল চুরির করে বিক্রির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা পড়েন। পরে স্থানীয়রা তাকে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। সরকারি চাল চুরির অপরাধে মাহফুজ মেম্বর কে হাজতবাস করতে হয়।
সূত্র আরো জানায়, ধূর্ত ও প্রতারক মাহফুজ মেম্বরের প্রতারণার স্বীকার হয়েছেন এক পুলিশ সদস্য। তার কবল থেকে এক পুলিশ সদস্যও রেহাই পাননি। প্রতারণার সীকার পুলিশ কনস্টেবল এর নাম আব্দুল আলিম। মাহফুজ মেম্বর এক সহযোগি বাবলু সরদারের মাধ্যমে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থেকে বদলী করে সদর থানায় এনে দেওয়ার নামের পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল আলিমের কাছ থেকে ৪৯ হাজার ৫০০ টাকা নেয় ওই প্রতারক চক্র। বদলী করাতে না পারায় পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল আলিম স্থানীয় প্রভাবশালিদের সহযোগিতায় মিমাংসায় বসেন। পরে পুলিশ সদস্য কে ১৪ হাজার টাকা ফেরত দেয় তারা।
প্রতারনার এক নব কৌশল সৃষ্টি করে মাহফুজ ফিংড়ী মিতালী সংস্থা নামে সমবায় সমিতি করে। যার কোন রেজিস্ট্রেশন নেই। ফিংড়ীর নয়টি ওয়ার্ডে দুইশতাধিক গ্রাহকের নিকট থেকে আড়াই লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় এই নিকৃষ্টতম মানুষটি। গ্রামকেন্দ্রিক অসহায় গরীব এতগুলো মানুষের টাকা আতœসাত করতে একটুও তার বিবেকে বাধেনি এই বিবেকহীন নরপশুর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তিগন জানান- সমিতির নামে মাহফুজ শুধু টাকা মেরে খাইনি। সমিতিতে চাকরি দিয়েছিল পাঁচজন মহিলাকে তাদের সবার সাথে মাহফুজের ছিলো অনৈতিক সম্পর্ক। জোলা পাড়ার জোবেদার সাথে এখনো সেই সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছে। মাহফুজের হিম্মত,সাহস কে বা কারা যুগাচ্ছে? তার এই খুটির জোর কোথায়? ফিংড়ীবাসী জানতে চাই। গ্রামের এতগুলো অসহায় হতদরিদ্র মানুষের টাকা আতœসাত করে মাহফুজ কি এমনিতেই পার পেয়ে যাবে? তার কি কোন বিচার হবে না।
গ্রামের অসহায় অবহেলিত মানুষের পাশে কি প্রশাসন দাঁড়াবে না? মাহফুজকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে গরিব অসহায় মানুষের নায্য টাকা যেন তারা ফেরত পায় সে বিষয়ে জেলা প্রশাসক সহ প্রশাসনের সর্বস্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন ফিংড়ীবাসী।
এবিষয়ে মাহফুজ মেম্বরের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন আমি সাতক্ষীরাতে আসতেছি এসে সব কথা বলছি।
Leave a Reply