নিজস্ব প্রতিনিধি: ২০১৩-১৪ সালে আন্দোলনের নামে নির্বিচারে গাছ কেটে সাতক্ষীরাকে বিরানভূমিতে পরিণত করেছিল জামাত-শিবির ও বিএনপির লোকজন। রাস্তা কেটে পথ বন্ধ করেছিল তারা। জেলায় ১৮জন মানুষকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেছিল জামাত-বিএনপির লোকজন। সাতক্ষীরাকে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত করেছিল তারা। দিকে দিকে ককটেল আর পেট্রোল বোমায় ঝলসেছিল গোটা দেশ। সেই অবস্থা থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পুলিশ ও আইনশৃংখলা বাহিনীর অনেক সদস্যকে জীবন দিতে হয়েছিল।
আহত হয়েছিল আইন-শৃংখলা বাহিনীর অনেক সদস্য। আজও সেই যন্ত্রণায় ভুগছেন অনেকেই। সেই গাছ কাটা আজও বন্ধ হয়নি। এবার ভোল পাল্টে কাটা হচ্ছে গাছ। ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নাম করে জামাতের কিছু লোক আবারও গাছকাটা উৎসবে মেতে উঠেছেন। দেশে যখন চলছে বৃক্ষরোপন অভিযান। জেলায় যখন বৃক্ষমেলার আয়োজন চলছে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনায় ঠিক তখনই সরকারি ছুটির দিন বেছে নিয়ে কাটা হচ্ছে গাছ। এরআগেও একই চক্র একইভাবে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের গাছ, সাতক্ষীরা-ব্যাংদহা সড়কের শতশত গাছ কেটে উজাড় করেছে। পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি হলেও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা ছিলেন মুখে ছিপি লাগিয়ে। গাছ কাটার ঘটনায় যদি এ্যাকশন হতো তাহলে কেউ গাছ কাটার সাহস দেখাতো না। সরকারি সড়ক রক্ষণাবেক্ষণে লাগানো শতশত গাছ কেটে আত্মসাত করার হোতা ধুলিহরের আব্দুস সালাম ও তার সহযোগিরা। শুক্রবার সরকারি ছুটির দিন থাকায় সে এবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ফিংড়ী ইউনিয়নের গোবরদাড়ি জি-ফুলবাড়ী এলাকায় গাছ কেটেছে। ছুটির দিনে সরকারি রাস্তার উপর থেকে অর্ধ লক্ষাধিক টাকা মূল্যের সরকারি গাছ কর্তন করায় এলাকাবাসি ক্ষোভে ফুসছে। খবরে প্রকাশ, গোবরদাড়ি জি-ফুলবাড়ীয়ায় গ্রামের আবু বক্করের পুত্র আমিনুর রহমানের বাড়ির সামনে থেকে সরকারি রাস্তার উপরের দুটি বড় আকারের পাহাড়ী চটকা গাছ কর্তন করা হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ধুলিহর সানাপাড়া গ্রামের গাছ ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের কাছে মোহাম্মদ আলীর পুত্র আশরাফ আলী এবং নুর উদ্দিনের ছেলে আরিফ এই দুটি গাছ ৫০হাজার টাকায় বিক্রি করেছে। উক্ত গাছ বিক্রি ও কর্তনের মূলহোতা কুলতিয়া গ্রামের আবু বক্করের পুত্র আমিনুর রহমান এবং গোবরদাড়ি গ্রামের শহর আলীর পুত্র আয়ুব আলী। এ সময় বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোন কিছু জানেন না বলে জানান। ফিংড়ী ইউপি চেয়ারম্যান লুৎফর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও কিছু জানেন না বলে জানান। ফিংড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আকরাম হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। গাছ ব্যবসায়ী আব্দুস সালামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন-সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের সদস্যা এড. শাহানাজ পারভীন মিলি এবং জেলা পরিষদের কেয়ারটেকার তারিক হাসান উক্ত গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে শাহানাজ পারভীন মিলির ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। গাছ বিক্রির বিষয়টি কেউ স্বীকার না করায় তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় একজন সংবাদকর্মী ব্রহ্মরাজপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এএসআই জয়নাল হোসেনকে অবহিত করলে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং কর্তনকৃত গাছ আটকপূর্বক জব্দ করে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুর রাজ্জাকের জিম্মায় রাখেন। তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে দৈনিক আজকের সাতক্ষীরা দর্পণকে জানিয়েছেন।
Leave a Reply