আব্দুল কাদের, নিজস্ব প্রতিনিধি: চাউল, তেল, পিঁয়াজ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে নিম্নআয়ের মানুষ দিশেহারা। দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীন ও লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, জনজীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলছে। নিম্নআয়ের মানুষ যা আয় করছে, তার পুরোটাই জীবনধারণের জন্য ন্যূনতম খাদ্যদ্রব্য ক্রয় করতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে। চিকিৎসা, শিক্ষা ইত্যাদির জন্য ব্যয় করার মতো অর্থ তাদের হাতে আর থাকছে না। শুক্রবার (৪ মার্চ) কালিগঞ্জ ফুলতলায় মুদি দোকানে গিয়ে দেখা যায় মৎস্য আড়ৎ এর কর্মচারী সাহেব আলী ২শ গ্রাম সয়াবিন তেল কেনার জন্য এসেছে ছোট একটি প্লাস্টিকের বোতল হাতে নিয়ে। সে জানায় দৈনিক মাত্র ৩০০ টাকা বেতনে মৎস্য আড়তে কর্মচারী হিসেবে কাজ করি। বাড়িতে মা, স্ত্রী, শিশু সন্তান সহ ৪ জনের পরিবারে চাল, ডাল, তেল সহ খাদ্য সামগ্রী কিনতেই ৩০০ টাকা ফুরিয়ে যায়। শিশু অসুস্থ হলে ওষুধ ও তার পোশাক কিনতে হলে অন্যের কাছ থেকে ধারদেনা করতে হয়। আবার খাদ্য সামগ্রির দাম বেড়ে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি। এমন অবস্থার এখন ২শ গ্রাম সয়াবিন তেল ২ থেকে ৩ দিন রান্নায় ব্যবহার করতে হচ্ছে। সেখানে কেনাকাটা করতে অন্য এক ব্যক্তি জানাই বর্তমান সময় রাশিয়া এবং ইউক্রেন যুদ্ধ ও সামনে রমজান মাসের অজুহাত দেখিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বেশি নিচ্ছে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ীরা। কালিগঞ্জে বাজার ঘুরে দেখা যায় এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দাম বেড়েছে চাউল, আটা, ময়দা, তেল, পেঁয়াজ, চিনি সহ প্রায়ই নিত্যপণ্যের। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি সয়াবিন তেল (৫ লিটার) বোতল ৭৬০ টাকা বিক্রি হলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৯০ টাকায়, প্রতি কেজি (খোলা) সোয়াবিন তেল ১৭৬ টাকা বেড়ে থেকে ১৯০ টাকা, প্রতি কেজি পামঅয়েল ১৫৬ থেকে বেড়ে ১৬৬ টাকা, পিয়াজ প্রতি কেজি ৩০টাকা থেকে বেড়ে ৪৫ টাকা, চিনি প্রতি কেজি ৭৬ টাকা থেকে বেড়ে ৭৮ টাকা, আটা (খোলা) প্রতি কেজি ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৩২ টাকা, ময়দা (খোলা) প্রতি কেজি ৪০টাকা থেকে বেড়ে ৪২ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। চাউলের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ৪ থেকে ৬ টাকা। এছাড়াও বাজারে দাম বেড়েছে মাছ- মাংস ও ডিমের। ডিম প্রতি দাম বেড়েছে ১টাকা। প্রতি কেজি গরুর মাংস ৫৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬শ টাকা, প্রতি কেজি খাসির মাংস ৭০০ টাকা থেকে বেড়ে সাড়ে ৭শ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০ টাকা থেকে বেড়ে ১৩০-১৪০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকানে মূল্য তালিকা ঝোলানোর নিয়ম থাকলেও কোন মুদি দোকানে সে নিয়ম তোয়াক্কা করছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মত বাজার মনিটরিং করার ব্যবস্থা না থাকার কারণে বেশি লাভের জন্য ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এক্ষুনি অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে ভুক্তভোগী অসহায়, দুস্থ্য ও শ্রমজীবি ক্রেতা সাধারণদের পক্ষ থেকে।
Leave a Reply