নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষকদের নান্দনিক রোমাঞ্চকর বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ভ্রমণ সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) কালিগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির আয়োজনে এ ভ্রমণে উপজেলার ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিক্ষক অংশগ্রহণ করে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের সামনে থেকে বের হয়ে শ্যামনগর উপজেলার নীলডুমুর ফরেস্ট স্টেশন থেকে নদী পথে ট্রলার যোগে পৃথিবীর একক সর্ববৃহৎ ‘ম্যানগ্রোভ’ বা শ্বাসমূলীয় সুন্দরবনের কলাগাছি টুরিস্ট স্টেশন এর নান্দনিক রোমাঞ্চকর নয়াভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ করে। পরে মুন্সিগঞ্জে সুশীলনের হোটেল টাইগার পয়েণ্ট এসে দুপুরের খাবার গ্রহণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র্যাফেল ড্রসহ শিক্ষকদের অংশগ্রহণে আনন্দঘণ আয়োজনে দিনের সমাপ্তি হয়। সমিতির শিক্ষক কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে এ ভ্রমণের বিবরণ দিয়ে শিক্ষক রিয়াজ, লুৎফর, দেবদাশ, সঞ্জয়, মুকুল, লতা, রুমা, তরুণ ও শ্যামল জানান সল্প সময়ের এ ভ্রমণ ছিল আনন্দঘণ রোমাঞ্চকর।
শ্যামনগরের নীলডুমুর ফরেস্ট স্টেশন থেকে ট্রলার যোগে সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে খোলপেটুয়া নদির বুক চিরে কলাগাছিয়া টুরিস্ট পয়েণ্টে যাওয়ার পথে সুন্দরবনের অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের সময় কল্পনাতে চোখের সামনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের মূখ ভেসে আসতেই শরীরে হিম ধরে আসছিলো। জোয়ার ভাটার বৈচিত্র্য বৃক্ষ, মাছ আর পাখিদের সঙ্গে সুন্দরবন ভ্রমণের পূর্ণ স্বাদ নিতে সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের সাতক্ষীরা রেঞ্জের কলাগাছিয়া ইকোট্যুরিজম কেন্দ্রের ঘাটে ট্রলার ভিড়তেই এখানে অভ্যর্থনা জানায় দুষ্টু বানরের দল। বানর দলের বাঁদরামির পাশ কাটিয়ে সামনেই হরিণের খাঁচায় মায়াবি চোখের চাহনি। হাত বাড়ালেই ছুটে আসে তারা। বামে হরিণের খাঁচা রেখে একটু এগোতেই মিষ্টি পানির পুকুর।
পুকুর পাড়ে হরিণ আর বনরের ছোটাছুটি। তাদের পাশ কাটিয়ে সরু পথ ধরে বনের মধ্য আরও কিছু দূর এগোতে ডান দিকে আরও একটি পুকুর। পুকুরের অপর প্রান্তে পর্যবেক্ষণ টাওয়ার আর সোজা চলে গেছে কনক্রিটের তৈরি ওয়াকওয়ে। চার তলা সমান উঁচু পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের চূঁড়া থেকে পুরো সুন্দরবনের অনেকটা অংশ দেখার আনন্দ আমাদেরকে মুগ্ধ করে। সেখান থেকে ওয়াকওয়ে ধরে সোজা পথ এঁকে বেঁকে চলে গেছে বনের আরও গহীনে। ওয়াকওয়ের পথের দুই ধারে ঘন জঙ্গল। দুই পাশে বাইন, কেওড়া আর সুন্দরী গাছের সারি।
হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়ে বানর, হরিণ, গুইসাপ এবং কুমিরের ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্যও। মাঝে মধ্যে এই ওয়াকওয়ের কাছে দেখা মেলে বাঘের পায়ের ছাপও। রাতে মাঝে মাঝেই এই দিকটা বাঘ আসে বলে জানান বন বিভাগের কর্মীরা। ওয়াকওয়েসহ পুরো কেন্দ্রের ট্রেইল জুড়েই দেখা মিলে সুন্দরবনের অন্যতম বাসিন্দা বানরের। সুন্দরবনের সৌন্দর্য উপভোগ শেষে সুন্দরবনের নিকটবর্তি মুন্সিগঞ্জে উন্নয়ন সংস্থা সুশীলনের অবকাশ কেন্দ্র টাইগার পয়েণ্টে এসে দুপুরের খাবার গ্রহণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, র্যাফেল ড্র ও উৎসব মূখর নানা আয়োজনে দিনের সমাপ্তি শেষে প্রত্যাবর্তন করে শিক্ষকরা।
Leave a Reply