আব্দুল আহাদ, কলারোয়া
মাহে রমজানের সিয়াম সাধনা অর্থাৎ রোযা পালন করা ইসলামের ৫স্তম্ভের অন্যতম। রোযার আরবী শব্দ সওম যার অর্থ বিরত থাকা। ইসলামী শরীয়াতের পরিভাষায় প্রত্যেক সজ্ঞান ও বালেগ মুসলমান নর নারীর জন্য সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযার নিয়তে পানাহার স্ত্রী সহবাস ও রোজা ভংগকারী সকল পাপ কাজ থেকে বিরত থাকার নাম রোযা ব্রত পালন।
এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআন মাজিদে ঘোষনা করেন- হে ঈমানদারগণ। তোমাদের উপর রোযা ফরজ করা হল যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর । যেন তোমরা মুত্তাকী হতে পার। সূরাতুল বাকারাহ – ১৮৩
রোযা সম্পর্কে বিশিষ্ট সাহাবী আবু হুরায়রা রা: বলেন রাসুলুল্লাহ সঃ) এরশাদ করেন – যখন তোমরা রমজানের চাঁদ দেখবে তখন থেকে রোজা রাখবে আর শাওয়ালের চাঁদ দেখলে রোযা বন্ধ করবে। আকাশ যদি মেঘাচ্ছন্ন থাকে তাহলে ৩০ রোজা রাখবে। সহিহ বুখারি হাদিস নং- ১৯০৯
উল্লেখিত আয়াত ও হাদিস এবং এ বিষয়ক অন্যান্য দলিলের আলোকে প্রমানিত হয় যে, রমজানে রোজা রাখা ফরজ। এজন্য শরয়ী অজর ছাড়া কোন মুসলমান যদি রমজানের একটি রোজা ইচ্ছাকৃত ভাবে পরিত্যাগ করে তাহলে সে বড় পাপি এবং জঘন্য অপরাধী হিসাবে গণ্য হবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা: বলেন যে ব্যক্তি অসুস্থতা ও সফর ব্যতিত ইচ্ছাকৃত ভাবে রমজানের একটি রোজা ভঙ্গ করে সে আজীবণ রোজা রাখলেও ঐ রোজার হক আদায় হবে না। মুসান্নাফ ইবনে আবি সাইবা হাসিদ নং-৯৮৯৩
রমজানের করনিয় বিষয়:-
১. আল্লাহর সন্তষ্টি ও রহমত লাভের উদ্দেশে সিয়াম সাধনা করা ।
২. মুখ ও জিহবা কে সংযত রাখা।
৩. নিয়মিত তারাবিহ নামাজ পড়া।
৪. কুরআন তেলাওয়াত করা।
৫. মিসওয়াক করা।
৬. নিজে ইফতারি করা অন্যকে করানো।
৭. শিঘ্রই ইফতারি খাওয়া।
৮. ইফতারির পূর্বে দোয়া করা।
৯. খেজুর অথবা পানি দ্বারা ইফতারি করা।
১০. সেহরী খাওয়া।
১১. বেশি বেশি ইসতেগফার ও দোয়া করা।
১২. আল্লাহর জিকির ও তাসবিহ পড়া।
১৩. রমজানের পবিত্রতা বজায় রাখা।
১৪. লাইলাতুল কদর অন্বেষন করা।
১৫. সকল ইতিবাচক কাজ করা।
১৬. মসজিদে ইতেকাফ করা।
রমজানের বর্জনীয় বিষয়:-
১. দিনের বেলায় সকল প্রকার খাদ্য গ্রহণ ও পানাহার বর্জন করা।
২. সকল প্রকার অনাচার, পাপাচার, অবিচার না করা।
৩. কারো সাথে দূর্ব্যবহার না করা।
৪. দিনের বেলা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত না হওয়া।
৫. মিথ্যা কথা পরিহার করা।
৬. মিথ্যার স্বাক্ষ্য না দেওয়া।
৭. গীবত ও পরচর্চা না করা।
৮. মোনাফেকি বর্জন করা।
৯. ওজনে ফাকি না দেওয়া।
১০. কাওকে না ঠকানো।
১১. প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কাউকে ছোট করে কথা না বলা।
১২. কারো যাতায়াতের পথে প্রতিবন্ধকতা না করা।
সর্বোপরি যে কাজ সমূহ করলে অন্তরে সন্দেহের উদ্রেগ হয় সে সব নেতিবাচক কাজ না করা।
Leave a Reply