আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ইতিহাস গড়ে প্রথমবারের মতো চাঁদের মাটি ছুঁল ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার বিক্রম। বুধবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টা ৪মিনিটে চাঁদের অনাবিষ্কৃত দক্ষিণ মেরুতে এই ল্যান্ডার অবতরণ করতে সক্ষম হয়। পৃথিবীর আর কোনও দেশ সেখানে এখন পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি।চূড়ান্ত পর্যায়ের এই অবতরণ প্রক্রিয়ায় ১৯ মিনিট সময় লাগে। এই সফলতার ফলে চাঁদে সফল ভাবে মহাকাশযান অবতরণ করানো দেশের তালিকায় চতুর্থ হিসাবে নাম লেখাল ভারত (আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের পরেই)।বুধবার বিকেল ৫টা ২০ মিনিট থেকে বিক্রমের অবতরণের সরাসরি সম্প্রচার শুরু করে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)। চন্দ্রযান-৩ চাঁদের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন ইসরোর কর্মকর্তারা। চন্দ্রজয়ের সাফল্যে উদ্বেলিত ইসরো চেয়ারম্যান এস সোমনাথ বলেন, ভারত চাঁদে পৌঁছেছে। সফট ল্যান্ডিং করতে পেরেছি আমরা।
ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিক্রম ল্যান্ডার অবতরণের পর পরই তার পেট থেকে বেরিয়ে আসবে ছ’চাকার রোভার প্রজ্ঞান। এর পর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞান একে অপরের ছবি তুলবে। সেই ছবি পাঠিয়ে ইসরোর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করবে সেগুলি। এর পর ইসরোর নির্দেশ পেয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে চলতে শুরু করবে প্রজ্ঞান। পাশাপাশি তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু করবে রম্ভা, চ্যাস্টে, ইলসা এবং অ্যারে নামের চারটি পেলোড।
এই পেলোডগুলির সাহায্যেই চাঁদে বাজিমাত করবে চন্দ্রযান। এই পেলোডগুলিই চাঁদের ‘অজানা রহস্য’ খুলে দেবে ইসরোর বিজ্ঞানীদের সামনে।
চারটি পেলোডের মধ্যে, চাঁদের বুকে সূর্য থেকে আসা প্লাজমা কণার ঘনত্ব, পরিমাণ এবং পরিবর্তনগুলি নিরীক্ষণ করবে রম্ভা (রেডিয়ো অ্যানাটমি অফ মুন বাউন্ড হাইপারসেন্সিটিভ আয়নোস্ফিয়ার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার)। চ্যাস্টে (চন্দ্র’স সারফেস থার্মোফিজ়িক্যাল এক্সপেরিমেন্ট) মেপে দেখবে চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা। একই সময়ে, অবতরণস্থলের আশপাশের মাটির কম্পন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে ইলসা (ইনস্ট্রুমেন্ট ফর লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি)। পাশাপাশি ‘লেজার রেট্রোরিফ্লেক্টর’ অ্যারে চাঁদের গতিশীলতা বোঝার চেষ্টা করবে। অর্থাৎ চাঁদের প্রাকৃতিক কার্যপ্রণালী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য নিরীক্ষণ করে তা পৃথিবীতে পাঠানোর দায়িত্ব থাকছে এই চার পেলোডের কাঁধে।এদিকে চাঁদে অবতরণ নিয়ে ভারতজুড়ে করা হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা। আয়েজন ছিল নামাজ, পূজা ও আরও কিছু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার।
Leave a Reply