জিএম মামুন বিশেষ প্রতিনিধি: নবজাতক শিশু মৃত্যুর কসাইখানা হিসেবে ভুক্তভোগীদের মাধ্যমে আখ্যায়িত পেয়েছেন, শ্যামনগরের এমআর ক্লিনিক। ক্লিনিক মালিক ডাক্তার আনিসুর রহমান সিজারে ও নর্মালে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকদের জন্য মৃত্যুপুরীতে সৃষ্টি করেছেন। ওই ক্লিনিকে সিজারের পরে এবং ওটির ভেতরে অপারেশন চলাকালীন প্রতিদিন মারা যায় দুটি একটি নবজাতক শিশু। এছাড়া ক্লিনিক মালিক সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার আনিসুর রহমানের অবহেলার কারণে প্রতি মাসে ১৫-১৮ জন শিশুর প্রাণ হানি ঘটে বলে জানিয়েছে ভূক্তভোগীরা।
শ্যামনগর এম আর ক্লিনিকে গত বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওটির ভেতরে ও সিজারের পরে দুইটি নবজাতকের মৃত্যু হয়। সিজারের একদিন পরে ডাক্তার আনিসুর রহমানের অবহেলার কারণে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউনিয়নের লুৎফর রহমান ও শামিমা নাসরিন দম্পতির নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়।
মৃত নবজাতক শিশুর নানী জানান, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬ টার সময় তার মেয়ে ইউপি সদস্য শামীমাকে ওটিতে সিজারের জন্য নিয়ে যায় এম আর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। সিজারে পরে ছেলে সন্তানসহ তার মেয়েকে সন্ধ্যা ৭ টার দিকে বাইরে নিয়ে আসে। নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই শ্বাসকষ্ট লক্ষ্য করে তার স্বজনরা।
বিষয়টি ডাক্তার আনিসুর রহমানকে জানালেও তিনি দেখে বলেন বাচ্চা সুস্থ আছে। পরবর্তীতে রাত ১২ টার দিকে বাচ্চার শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। এসময় বাচ্চার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য ইউপি সদস্য শামীমার পিতা, নবজাতক শিশুর নানা আইয়ুব আলী গাইন এবং তার স্ত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের পায়ে পড়তে থাকেন। তাতেও কোন লাভ হয়নি তাদের। রাতে ডাক্তার আনিসুর না থাকায় ওই নবজাতকের কোন চিকিৎসা দিতে পারেনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অবশেষে কোন চিকিৎসা না পেয়ে জন্মের ১৩ ঘন্টা পর মৃত্যুর কাছে পরাজিত হয় ওই নবজাতক।
শ্যামনগর এম আর ক্লিনিকের মালিক ডাক্তার আনিসুর রহমান ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে তার নাতীনের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন।
মৃত নবজাতকের মা শ্রীউলা ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য শামিমা পারভীন জানান, তার বুকের ধনকে সুচিকিৎসা না দিয়ে ডাক্তার আনিসুর রহমানও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হত্যা করেছে। তিনি এ হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।
এছাড়া শনিবার দুপুর ৩ টার সময় হাসপাতালের ওটির ভিতরে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়। কসাই খ্যাত ডাক্তার আনিসুর রহমান এবং অদক্ষ নার্সদের নিয়ে অপারেশন থিয়েটারে ওই নব জাতককে হত্যা করেন বলে জানান ক্লিনিকে অন্য চিকিৎসারত রোগীরা।
বিষয়টি জানতে চাইলে এমআর ক্লিনিকের পরিচালক সোলাইমান হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,গাবুরায় যে নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে সে ডাক্তার আনিসুর রহমানের আত্নীয়। এছাড়া আরেকটি নবজাতকের মৃত্যু বিষয় জানতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন তিনি।
বিষয়টি জানতে চাইলে ডাক্তার আনিসুর রহমান দুইজন নবজাতকের মৃত্যু বিষয় এই প্রতিবেদককের কাছে স্বীকার করেন। তবে তিনি বলেন দুইজন নবজাতকের মধ্যে একজন তার আত্নীয়। মৃত্যুর বিষয় কোন পরিবারের অভিযোগ নেই বলে তিনি জানান।
শ্যামনগর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ জিয়াউর রহমানের কাছে মুঠো ফোনের মাধ্যমে জানতে চাইলে তিনি বলেন। বিষয়টা খুবই দুঃখজনক আমি শুনেছি তবে তদন্ত টিম গঠন করে ঘটনা সত্যতা পেলে এম আর ক্লিনিক এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply