শ্যামনগর প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ইউএনও’র ত্বরিৎ হস্তক্ষেপে বাল্য বিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রী। ১৩ বছর বয়সী ঐ কিশোরী উপজেলার নুরনগর মহিলা মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। ঘটনাটি ঘটে শুক্রবার রাতে উপজেলার নুরনগর ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামে। সে একই গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও মৃত আনোয়ারা বেগম দম্পতির মেয়ে। লোক জানাজানির ভয়ে পাশর্^বর্তী কৈখালী ইউনিয়নের পরানপুর গ্রামে নিয়ে বিয়ে সম্পন্নের চেষ্টা চালায় তার পরিবার।
এদিকে বিয়ে বন্ধ হওয়ার ঘটনায় তার মামাসহ নানা বাড়ির পরিবারকে দোষারোপ করেছে রিনার পিতা রফিকুল ইসলাম। মেয়ের বিয়ে আটকে দেয়ায় তিনি ‘দেখে নেয়ার’ হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রিনার মামা আবুজার গাজী।
হরিপুর গ্রামের মৃত মোসলেম শেখের ছেলে আবুজার জানান শুক্রবার রাতে তার মাতৃহারা ভাগ্নিকে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেয় ভগ্নিপতি রফিকুল। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে যেতে ও স্থানীয়দের কাছে বিষয়টি গোপন রাখতে বিকালে রিনাকে পরানপুর গ্রামের এক আত্বীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। একপর্যায়ে রাত আটটার দিকে বিষয়টি জানতে পেরে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করেন।
পরবর্তীতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছালে মেয়েকে আবারও বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়। তবে বিয়ে ঠেকিয়ে দিয়ে আর্থিক ক্ষতি করায় ভগ্নিপতি রফিকুল ও প্রতিবেশীরা তাকে হুমকি দিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
রিনার পিতা রফিকুল ইসলামের ভাষ্য ছেলেটি কর্মঠ হওয়ার পাশাপাশি তিনি নিজে গরীব বিধায় মেয়েকে পাত্রস্থ করার চেষ্টা করেছিলেন। বিয়ে বন্ধ হওয়ায় নিজে হতাশ হলেও কাউকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
শ্যামনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হুমায়ুন কবির জানান বাল্য বিয়ের ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে। শুরুতে মেয়েকে লুকিয়ে রাখলেও প্রশাসনের উপস্থিতির কারনে মেয়েকে সামনে এনে বিয়ে না দেয়ার অঙ্গীর করেছে তার পরিবার।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ রনী খাতুন জানান সময়মত খবর পাওয়ায় বিয়ে আটকানো সম্ভব হয়েছে। বাল্য বিয়ে রোধে সকলকে ভুমিকা রাখতে হবে। সময়মত খবর দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগীতার পাশাপাশি বাল্য বিয়ের কুফল অনুধাবন করে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
Leave a Reply